সরকারদলীয় এমপি সাইফুজ্জামান শিখরের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন ‘পক্ষকাল’ পত্রিকার সম্পাদক ও বণিক বার্তার ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল। তবে জামিন পেলেও একই আইনে তার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন থাকায় কারাগারেই থাকতে হচ্ছে শফিকুল ইসলাম কাজলকে।
যুব মহিলা লীগ নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা নিয়ে দৈনিক মানবজমিনে ‘ওয়েস্টিন হোটেল কেন্দ্রিক কারবারে ‘জড়িতদের’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়৷ সাংবাদিক কাজল তার ফেসবুকে এই খবরটি শেয়ার করেছিলেন৷ এই খবরে ক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন।
ওই মামলা হওয়ার পর আসামির তালিকায় থাকা শফিকুল ইসলাম কাজল প্রায় দুই মাস নিখোঁজ ছিলেন। ৫৩ দিন নিখোঁজ থাকার পর গত ৩ মে, ২০২০ কাজলকে বেনাপোল সীমান্ত থেকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর তাঁকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা গ্রেপ্তার দেখিয়ে যশোরে মামলা করা হয়। ওই মামলায় গত ২০মে যশোর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কাজলকে অব্যাহতি দেন। কিন্তু সেদিন তাঁকে মুক্তি না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই আদালতের আদেশে বলা হয়, তাঁকে (কাজল) ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাই তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে না। সেই থেকে কাজল কারাবন্দি।
২৩ জুন, ২০২০ কাজলকে শেরেবাংলা নগর থানার ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকের মুখোমুখি করা হয়। আদালত সেদিন কাজলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এরপর ২৪ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতও কাজলের জামিন আবেদন নাকচ করেন। এ কারণে ৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন কাজল।
সেই আবেদনে রুল শুনানি শেষে ২৪ নভেম্বর, ২০২০ জামিনের আদেশ এলো শফিকুল ইসলাম কাজলের। কাজলের নামে হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও দুটি মামলা দায়ের হয়। ওই দুটি মামলা বিবেচনা করতে আদালতের আরও সময় প্রয়োজন। আগামী ১৫ ডিসেম্বর আদালত পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছেন বলে জানান কাজলের আইনজীবীরা। গ্রেপ্তারের পর থেকে মোট ১৩ বার কাজলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, সাথে ছিলেন আইনজীবী রিপন বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসেন বাপ্পি।
এর আগে গত ১৯ অক্টোবর,২০২০ হাইকোর্টের এই বেঞ্চ সাংবাদিক কাজলকে কেন জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।
কাজলকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে গত ১৯ অক্টোবর রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট।
ফাআ/নসদ/১৮৩৫
আপনার মতামত জানানঃ