আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের একটি তল্লাশিচৌকিতে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়েছে। হামলায় তালিবানের দুই যোদ্ধা ও এক বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশের রাজধানী জালালাবাদ শহরে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিরাপত্তাসূত্রের ভাষ্যমতে, অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা রিকশায় করে একটি তল্লাশিচৌকিতে এসে হামলা চালায়। হামলায় তালিবানের দুই যোদ্ধা ও এক সাধারণ পথচারী নিহত হন। খবর এএফপির।
তালিবানের এক কর্মকর্তা এ হামলার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি দাবি করেছেন, হামলায় যারা নিহত হয়েছেন, তারা সবাই বেসামরিক নাগরিক।
সম্প্রতি জালালাবাদে তালিবান সদস্যদের লক্ষ্য করে চালানো একাধিক হামলার দায় আইএসের আফগান শাখা স্বীকার করে। এসব হামলায় হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
গত ১৫ আগস্ট তালিবানের হাতে কাবুলের পতন হয়। কাবুল থেকে মার্কিন সেনা ও বেসামরিক লোকজন সরিয়ে নেওয়ার সময় গত ২৬ আগস্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায় আইএস। এই হামলায় ১৩ মার্কিন সেনাসহ প্রায় ২০০ মানুষ নিহত হয়।
কয়েক বছর ধরে নানগারহার প্রদেশটি জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আফগান শাখার প্রধান ঘাঁটি হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে। তালিবান ও আইএস পরস্পরের প্রতিপক্ষ।
জালালাবাদে অপর একটি ঘটনায় তালিবানের দুই যোদ্ধা আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় এক অধিবাসী জানিয়েছেন। তার ভাষ্যমতে, একটি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে দুই তালিবান যোদ্ধা আহত হন। এ ঘটনা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার সম্পন্ন হয় গত ৩০ আগস্ট। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালিবানের হাতে যায়। চলতি মাসের শুরুর দিকে তালিবান সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়। আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালিবানের হাতে যাওয়ার পর দেশটিতে একাধিক হামলা চালিয়েছে আইএস।
আফগানিস্তানে আল-কায়েদা, আইএস ও তালিবানের উত্থান প্রকৃতই এক উদ্বেগের বিষয় বলে গত সোমবার মন্তব্য করেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ।
যদিও তালিবান দাবি করেছে, তাদের দেশে আইএস বা আল-কায়েদার কোনো জঙ্গির অস্তিত্ব নেই। তবে বলা হয়ে থাকে আফগানিস্তানের নানগাহার প্রদেশে আইএস-কে–এর বিচরণ। এ ছাড়া দেশটির উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় তাদের ঘাঁটি রয়েছে। এ প্রসঙ্গে ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অব ডেমোক্রেসিসের ফেলো বিল রোজিও ফোর্বসকে বলেন, এসব এলাকায় নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে তালিবান ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক বাহিনীর ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয় তাদের। তবে সে লড়াই চালিয়ে সফল হয়েছিল আইএস-কে।
এসব এলাকার বাইরেও তাদের বিচরণ রয়েছে। আফগানিস্তানের দক্ষিণ অঞ্চলের কিছু কিছু এলাকাতেও তাদের উপস্থিতি রয়েছে। এর আগেও আইএস-কে কাবুলে হামলা চালিয়েছে। ২০২০ সালের মে মাসে কাবুলের হাসপাতালে হামলা চালিয়েছিল তারা। এ ছাড়া চলতি বছরের মে মাসে কাবুলে মেয়েদের একটি স্কুলে হামলা চালিয়েছিল আইএস-কে। দুই হামলাতেই বেশ কয়েকজন মারা গিয়েছিল।
এসডব্লিউ/ডব্লিউজেএ/২২১৬
আপনার মতামত জানানঃ