প্রায় মাস খানেক আগে বিশ্বে প্রথম দেশ হিসেবে নাগরিকদের করোনা টিকার তৃতীয় ডোজ দেয়া শুরু করে ইসরায়েল৷ দেশটির ষাটোর্ধ্বদের জন্য এই কার্যক্রম চালু করে তারা৷ যদিও করোনা টিকার তৃতীয় ডোজ প্রদানের অনুমোদন এখনও দেয়নি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডাব্লিউএইচও)৷ তাদের এখন মূল লক্ষ্য বিশ্বের সব দেশের জন্য পর্যাপ্ত টিকা নিশ্চিত করা৷
ইসরায়েলের টিকার তৃতীয় ডোজের অনুমোদন দেশটির করোনা মোকাবিলায় শক্ত অবস্থানেরই জানান দেয়। অথচ অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ৫০ হাজার ডোজ মেয়াদোত্তীর্ণ করোনার টিকা পাঠিয়েছে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ খবর জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজা উপত্যকায় পাঠানোর জন্য রাশিয়ায় তৈরি টিকাগুলো ইহুদিবাদী ইসরায়েলকে দেওয়া হলেও তেলআবিব এগুলো অনুপযুক্ত পরিবেশে রেখে দিয়েছিল।
এ ছাড়া টিকার চালানটি ঠিক সময়ে গাজায় পৌঁছাতে বাধা দেয় ইসরায়েল। সম্প্রতি গাজার কারেম আবু সালেম ক্রসিং দিয়ে রাশিয়ার তৈরি স্পুৎটনিক লাইট টাইপের টিকার চালানটি অবরুদ্ধ এ উপত্যকায় পাঠানো হয়। কিন্তু সেফটি টেস্টে দেখা যায়, টিকাগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।
এর আগে ইসরায়েলি গণমাধ্যম খবর দিয়েছিল— মেয়াদোত্তীর্ণ হতে যাওয়া টিকাগুলো প্রথমে তেলআবিব পশ্চিমতীরের স্বশাসন কর্তৃপক্ষকে দিতে চেয়েছিল।
কিন্তু মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষ ওই চুক্তি বাতিল করে দেয়। এর পরই চালানটি গাজা উপত্যকায় পাঠায় দখলদার ইসরায়েল।
সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গাজা উপত্যকায় এখন পর্যন্ত এক লাখ ৪৭ হাজার ৩৬৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে এক হাজার ২২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ ছাড়া অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ বসবাস করলেও এ পর্যন্ত মাত্র তিন লাখ ৫৪ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসের টিকা নিতে পেরেছেন।
পশ্চিমতীর ও গাজা উপত্যকায় বসবাসরত ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জন্য করোনাভাইরাসের টিকা সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ইহুদিবাদী ইসরায়েল চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
অথচ ইসরায়েল তার প্রাপ্তবয়স্ক প্রায় সব নাগরিককে টিকার আওতায় এনেছে এবং অনেকে এরই মধ্যে তৃতীয় অর্থাৎ বুস্টার ডোজও নিয়ে ফেলেছে।
এর আগে গত জুন মাসে এক প্রকার নিরুপায় হয়েই ফিলিস্তিনকে মেয়াদ প্রায় শেষ হওয়ার পথে এমন ১০ লাখ টিকা দেয়ার কথা জানায় ইহুদিবাদী ইসরায়েল। জানা যায় টিকা গুলো ফাইজার-বায়োএনটেকের। তবে প্রায় মেয়াদোত্তীর্ণ এসব টিকা ফিলিস্তিন নেবে না বলে জানিয়ে দেয়।
সম্প্রতি অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আবারও বিমান হামলা চালিয়েছে ইহুদিবাদী ইসরায়েলি বাহিনী। কথিত রকেট হামলার জবাবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে এ হামলা চালায় দখলদার সেনারা।
এমনকি গাজার দেইর আল-বালা শহরের আল-মাগজি শরণার্থী শিবিরেও হামলা চালানো হয়। হামলায় শরণার্থী শিবিরের বেশ কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
যদিও ইসরায়েলের দাবি, গাজার ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের রকেট তৈরির কারখানা, একটি অস্ত্র গুদাম এবং কয়েকটি সুড়ঙ্গ পথ লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৩১৬
আপনার মতামত জানানঃ