সম্প্রতি কনস্টেবল থেকে শুরু করে পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বেড়ে গেছে। এসব অপরাধ ও অপকর্মের মধ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার, দায়িত্বে অবহেলা ও ঘুষ গ্রহণ ছাড়াও চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, এমনকি ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার মতো ঘৃণ্য অপরাধও আছে।
দিন দিন অপরাধ দমন না করে পুলিশ সদস্যরা নিজেরাই বারবার জড়িয়ে পড়ছে অপরাধে। এর মধ্য দিয়ে গোটা পুলিশ বাহিনীর ইমেজ বা ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
এবার এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক এসআইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার খায়রুল আলম (৩২) শেরে বাংলা নগর থানায় কর্মরত ছিলেন।
জানা যায়, দুই বন্ধুর বিরোধ মীমাংসার কথা বলে ওই তরুণীকে রাজধানীর গুলশানের একটি বাসায় নিয়ে ধর্ষণের করেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে গুলশান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করার পর খায়রুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গুলশান থানার মামলায় তাকে আদালতে পাঠিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির এডিসি (মিডিয়া) ইফতেখায়রুল ইসলাম।
ঘটনার শিকার তরুণী বলেন, মাসখানেক আগে এক বন্ধুর বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় অভিযোগ করতে যান তিনি। সেখানে এসআই খায়রুলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে পুলিশ কর্মকর্তা খায়রুল তাকে নানা সময়ে ফোন করতেন। তাকে দেখাও করতে বলতেন। তিনি তাতে রাজী হননি কখনও।
ওই তরুণীর দাবি, গত সোমবার সকালে তিনি অফিসে যাচ্ছিলেন। তখন পান্থপথ এলাকায় খায়রুলের সঙ্গে তার দেখা হয়ে যায়। তখন বন্ধুর বিরুদ্ধে অভিযোগের মীমাংসা করে দেওয়ার কথা বলে এসআই খায়রুল তাকে নিজের মোটরসাইকেলে করে গুলশানের নিকেতনে এক বাসায় নিয়ে যান।
এরপর সেই বাসাতে তাকে ধর্ষণ করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। পরে তাকে পান্থপথে নামিয়ে দিয়ে যান। ২০ বছর বয়সী ওই তরুণীর অভিযোগে, বিষয়টি প্রকাশ করা হলে তার ক্ষতি হবে বলেও তাকে হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন বলেন, ওই তরুণী মঙ্গলবার সকালে গুলশান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন। এরপরই অভিযুক্ত খায়রুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে জানতে তাকে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরদারির দুর্বলতাতেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। তবে শুধু নজরদারি বাড়ানো নয়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারলে অনেকাংশে কমানো সম্ভব পুলিশ সদস্যদের অপরাধ।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৩৩৮
আপনার মতামত জানানঃ