আফগানিস্তান ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি ফোর্সের (এএনডিএসএফ) বিমান হামলায় ২৫৪ তালিবান যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। এসব হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৯৭ তালিবান।
রোববার এক টুইট বার্তায় এমন দাবি করেছে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। টুইটে বলা হয়েছে, শনিবার ও রোববার মিলে ২৪ ঘণ্টায় আফগানিস্তানের গজনি, কান্দাহার, হেরাত, ফারাহ, জওজান, সমানগান, হেলমান্দ, তাখার, কুন্দুজ, বাঘলান, কাবুল ও কাপিসা প্রদেশে বিমান হামলা চালিয়েছে এএনডিএসএফ। এই হামলায় নিহত হয়েছেন ২৫৪ জন তালিবান সদস্য, আহত হয়েছেন ৯৭ জন।
একই সময়ে আফগানিস্তানের দ্বিতীয় প্রধান শহর হিসেবে পরিচিত কান্দাহারের তালিবান ঘাঁটিসমূহে বিমান হামলা করেছে এএনডিএসএফ। হামলায় ১০ জনেরও বেশি তালিবান সদস্য নিহত হয়েছেন।
আফগানিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ তিন শহর হেরাত, লস্কর গাহ ও কান্দাহারে গত প্রায় ৪৮ ঘণ্টা ধরে তুমুল লড়াই চলছে আফগান সামরিক বাহিনী আফগানিস্তান ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি ফোর্স (এএনডিএসএফ) সদস্য ও তালিবান বিদ্রোহীদের মধ্যে।
এদিকে, রোববার আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রিপরিষদের ভার্চুয়াল বৈঠকে বক্তব্য দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। নিজ বক্তব্যে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন, আগামী ৬ মাসের মধ্যে তালিবান সদস্যদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করা সম্ভব হবে।
এর আগে গত সপ্তাহে তালিবানদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। ওই হামলা প্রসঙ্গে পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনীর বরাত দিয়ে জানান, ‘গত কয়েক দিনে আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করতে আমরা বিমান হামলা চালিয়েছি।’
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করতে এ রকম হামলা চলবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি সেন্ট্রাল কমান্ড জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি এ হামলার বৈধতা দিয়েছেন।
তবে আফগানিস্তানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ‘হঠাৎ’ নেওয়া সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে দায়ী করেছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি।
তালিবান যোদ্ধারা গত কয়েকদিনে তিনটি প্রাদেশিক রাজধানীতে প্রবেশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র আগামী সেপ্টেম্বর সময়সীমার মধ্যে সেনা প্রত্যাহার শেষের পরিকল্পনা ঘোষণার পর থেকেই আফগানিস্তানে দ্রুত তালিবানের প্রভাব বাড়তে শুরু করেছে।
আফগানিস্তানের পার্লামেন্টে এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ঘানি বলেন, ‘হঠাৎ বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কারণে বর্তমান পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে। গত তিন মাসে আমরা অপ্রত্যাশিত এক পরিস্থিতি দেখতে পেয়েছি।’
এদিকে, মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদর দফতর পেন্টাগনের তথ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তানের ৪১৯টি জেলার অর্ধেকেরও বেশির দখল নিয়েছে তালিবান।
তালিবান গোষ্ঠী হামলা অব্যাহত রেখেছে। গত রোববার আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহারের বিমানবন্দর লক্ষ্য করে অন্তত তিনটি বিস্ফোরক রকেট ছুড়েছে তালিবান। এ ঘটনায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কান্দাহারের বিমানবন্দর। ইতোমধ্যে সেই হামলার দায় স্বীকার করেছে তালিবান।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ এ সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা কান্দাহার বিমানবন্দরে হামলা করেছি, কারণ এই বিমানবন্দরকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে শত্রুরা আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।’
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১১৪৬
আপনার মতামত জানানঃ