মালয়েশিয়ায় আইন ভঙ্গ করে ঈদের নামাজে অংশ নেয়ায় ৪৮ বাংলাদেশি আটক করেছে দেশটির পুলিশ। সে দেশের স্থানীয় একজন নাগরিককেও আটক করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় পেনাং রাজ্যের জুরু তামান পেলাংগি মসজিদে নামাজ আদায় করতে গেলে কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে একশ মানুষকে নামাজ আদায়ের জন্য প্রবেশের অনুমতি দেয়।
এসময় মসজিদে প্রবেশ করতে পারেননি এমন দুই শতাধিক মানুষ মসজিদের বাইরে ঈদের নামাজ আদায় করে, যাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি।
প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ঈদের নামাজ আদায়ের এ ঘটনায় সমালোচনায় পড়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
সরকারের বেঁধে দেয়া আইন অমান্য করে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে নামাজ আদায়ের এ দৃশ্যের ভিডিও স্থানীয় একজন নাগরিক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আপলোড করার সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
এর পাশাপাশি স্থানীয় নাগরিকদের অভিযোগ, কাজের স্থানে না থেকে ওই এলাকার ২৩টি ব্লকে ৮ হাজারেরও বেশি অভিবাসী অবস্থান করছে।
দুই শতাধিক মানুষের নামাজ আদায়ের একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর রাজ্যজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে স্থানীয় প্রশাসন। সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনায় স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গের ঘটনায় রাজ্যের পুলিশ প্রধান ক্ষমা চান।
এর পরেই আইন লঙ্ঘনকারীদের আটক করা হয়। এ ঘটনায় আইন লঙ্ঘনকারীদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না উল্লেখ করে প্রয়োজনে এসব অভিবাসীদের দেশে পাঠানো হবে বলেও কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজা জয়নুদ্দিন।
এদিকে করোনা ঠেকাতে দেশজুড়ে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্থানে অভিযান চালাচ্ছে প্রশাসন। করা হচ্ছে আইন অমান্যকারীদের জেল-জরিমানা।
এদিকে, করোনা মহামারিতেও বিপাকে পড়েছে মালয়েশিয়ার প্রবাসী বাংলাদেশিরা। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনীতিতে পড়া নেতিবাচক প্রভাবে মালয়েশিয়ায় চাকরির বাজার সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে। তাই দেশটির সরকার আগে নিজ দেশের নাগরিকের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছে।
পাশাপাশি কঠোর লকডাউনেও মালয়েশিয়ায় চলছে ধরপাকড় অভিযান। ‘আটক কেন্দ্রের’ সংখ্যা বাড়িয়ে অবৈধ প্রবাসীদের ধরপাকড়ে নেমেছে দেশটির পুলিশ।
একে তো কাজ নেই, তার ওপর ধরপাকড় অব্যাহত থাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে মালয়েশিয়া প্রবাসীদের মধ্যে।
এদিকে, মালয়েশিয়ায় বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে বিমানবন্দরে বিশেষ কাউন্টার খোলা হয়েছে। চলমান রিক্যালিব্রেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে তারা ইমিগ্রেশনের অনুমতি ছাড়াই নিজ দেশে ফিরতে পারবেন। আর নিতে হবে না ইমিগ্রেশনের এপয়েন্টমেন্ট।
এর আগে গত ৫ জুলাই থেকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (কেএলআইএ) তিনটি স্টেশনে ২৪ ঘণ্টা-ই কাউন্টারগুলো পরিচালিত হচ্ছে।
অর্থাৎ অবৈধ অভিবাসীরা সরাসরি কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে গিয়ে ৫০০ রিঙ্গিত জরিমানা প্রদান করে নিজ দেশে চলে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে পাসপোর্ট বা ট্রাভেল পাস এবং ফ্লাইট টিকিট সাথে নিয়ে যেতে হবে।
অবশ্যই করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট ফ্লাইটের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করতে হবে এবং ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা আগে এয়ারপোর্টে যেতে হবে।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১২৫০
আপনার মতামত জানানঃ