জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদেরকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনেক ঘরই ইতোমধ্যে ধসে গেছে। অল্প বৈরী আবহাওয়াতেই এসব ঘর ধসে পড়ছে। কোথাও এমনি এমনিতেই ধসে পড়ছে। আর যেসব ঘর এখনো ধসে পড়েনি, বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সেসব ঘরে বসবাস করতে তারা ভয় পাচ্ছেন।
ময়মনসিংহের আশ্রয়ণের ঘরে ঘরে ফাটল
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ময়মনসিংহের ভালুকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে গত জানুয়ারি ও জুনে দুই ধাপে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ২৭৯টি ঘর ভূমিহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। এরই মধ্যে উপজেলার কয়েকটি এলাকায় নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মাণের কারণে বেশ কয়েকটি ঘরের দেয়াল ও মেঝেতে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফাটল ধরা এসব ঘর সংস্কার ও ঘষামাজায় ব্যস্ত রয়েছে উপজেলা প্রশাসন। তবে জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার করা হলেও ফাটল ধরা এসব ঘরে বসবাস করতে ভয় পাচ্ছেন সুবিধাভোগীরা। তাদের মধ্যে বিরাজ করছে ঘর ধসে পড়ার আতঙ্ক।
জানা যায়, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো সরকারি খাস জমির ওপর তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরে আছে দুটি কক্ষ, রান্নাঘর, বারান্দা ও টয়লেট। এছাড়া ১০টি ঘরের জন্য একটি করে গভীর নলকূপ। সেমিপাকা এ ঘরগুলোর প্রতিটি তৈরি করতে প্রথম পর্যায়ে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। দ্বিতীয় পর্যায়ে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। প্রতিটি পরিবারের কাছে ২ শতাংশ জমির মালিকানা দলিলসহ ঘরগুলো দুটি ধাপে হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যে উদ্বোধনের এক মাসের মাথায় বেশির ভাগ ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে।
উপজেলার ভরাডোবা ইউনিয়নের চাপরবাড়ী এলাকায় ভালুকা-গাফরগাঁও সড়কের পাশে অবস্থিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর মালিক ফাতেমা, শরীফা ও আকলিমা খাতুনের ঘরের মেঝেতে ফাটল দেখা দিয়েছে। অন্য ঘরের মালিক তাজুল ইসলাম বণিকবার্তাকে বলেন, ঢালাই কাজে মাল (সিমেন্ট) কম দেয়ার কারণে ঘরের মেঝেতে ফাটল দেখা দিয়েছে।
সরেজমিন গেলে দেখা যায়, মিস্ত্রি মেঝের ফাটল মেরামত করছেন। উপজেলার ভায়াবহ গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে গেলে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, একটি ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছিল। পরে তা মেরামত করে দিয়ে গেছে প্রশাসন।
উপজেলার ধীতপুর বাজারসংলগ্ন নদীর পাড় আশ্রয়ণ প্রকল্পে গেলে ঘর মালিক রাজা মিয়া (৭০) জানান, আমার ঘরের জানালার পাশে ফাটল ও আস্তর খসে পড়েছিল। পরে আবার মেরামত করে দিয়ে গেছে।
একই প্রকল্পের অন্য ঘর মালিক রহিমা খাতুন জানান, ঘরে ফাটল দেখা দেয়ার পর আবার মেরামত করে গেছে। কিন্তু ফাটল ঘরে থাকতে ভয় লাগে।
পাশের টুংরাপাড়া প্রকল্পে গেলে দেখা যায়, একটি ঘরের বারান্দার সম্পূর্ণ মেঝে পুনরায় মেরামত করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানায়, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় এ অবস্থা।
বগুড়ার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঝুঁকিপূর্ণ ঘর
বগুড়ার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ির ঘরগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। স্থান নির্ধারণে ভুল, নিম্নমানের কাজ হওয়ায় পিলার ভেঙে পড়ছে, মেঝে ও দেওয়ালে ফাটল ধরছে। চালের টিন চুইয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে। পলেস্তরা উঠে যাচ্ছে। কোনো কোনো বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা নেই। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় এসব বাড়িতে ভূমিহীনরা উঠতে সাহস করছেন না। শেরপুর উপজেলায় সাতটি বাড়ির বাথরুম ধসে পড়ার পর নন্দীগ্রামে পিলার ভেঙে পড়া, দেওয়ালে ফাটলসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। এসব বাড়িতে উঠতে না চাওয়া দুস্থদের সাতদিনের নোটিশ করা হয়েছে। অন্যথায় বরাদ্দ বাতিলের কথা বলায় তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর অধীনে গত ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রথম পর্যায়ে নন্দীগ্রাম উপজেলায় ১৫৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার ঘর পায়। প্রতিটি ঘর নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয় এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। এই টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দুটি ঘর, একটি টয়লেট, একটি স্টোর রুম ও বারান্দা। চারদিকে ইটের দেওয়াল এবং ওপরে সবুজ রঙের টিনের ছাদ রয়েছে। দুই শতাংশ খাস জমির ওপর এসব ঘর নির্মাণ করা হয়। ঘর ভূমিহীনদের মাঝে ঘর বুঝে দেওয়া হয় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে।
ঘর পাওয়া ভূমিহীনরা যুগান্তরকে জানান, উপজেলার গোছন ও গোপালপুর পুকুরপাড়ের অনেক ঘরে ছয় মাসের মধ্যেই দেওয়াল, মেঝে ও বারান্দার পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। রাস্তা না থাকায় দাসগ্রাম পুকুরপাড়ে ১৭টি নির্মাণ করা ঘরে কেউ এখনো উঠেননি। গোপালপুর পুকুরপাড়ের সুবিধাভোগী জালাল মন্ডলের বাড়ি এখনও ফাঁকা রয়েছে। বারান্দার পিলার ভেঙে পড়লে সেটা দ্রুত মেরামত করা হয়েছে।
তাদের বেশ কয়েকটি ঘরের মেঝেতে ফাটল ধরেছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ অবস্থা হয়েছে বলে তারা দাবি করেন। ঘরগুলো ধসে পড়তে পারে, এ ভয়ে তারা পরিবার নিয়ে উঠতে ভয় পাচ্ছেন।
রিয়াজ উদ্দিন, শাহীনুর, হালিমা বিবি, আশরাফ আলীসহ অনেকে জানান, তাদের বেশ কয়েকটি ঘরের মেঝেতে ফাটল ধরেছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ অবস্থা হয়েছে বলে তারা দাবি করেন। ঘরগুলো ধসে পড়তে পারে, এ ভয়ে তারা পরিবার নিয়ে উঠতে ভয় পাচ্ছেন।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলেছেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘর নির্মানের বেলায় নীতিমালা মানা হয়নি। ওই সব ক্ষেত্রে অনেক ঘরে নির্মাণে ক্রটি রয়েছে। গুণগত মানও ঠিক হয়নি। ঘরের দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। পিলার ভেঙ্গে গেছে। ধসে পড়েছে দেয়াল। ঘর নির্মানে ব্যবহৃত মালামালও ছিলো নিন্মমানের। নীচু এলাকায় ঘর নির্মান করায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আবার ভূমির মালিকরাও ঘর বরাদ্দ পেয়েছে। সব মিলিয়ে ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মান নিয়ে কয়েকটি উপজেলায় নীতিমালা বর্হিভূত কর্মকাণ্ডের ঘটনা প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হয়েছে।
এদিকে, শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের খানপুর বুড়িগাড়ি এলাকায় খালের কিনারায় সাড়ে ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২২টি বাড়ি নির্মাণ করা হয়। গত জানুয়ারিতে বাড়িগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। খালের মাটি সরে যাওয়ায় গত ২২ জুনের আগে সাতটি বাড়ির বাথরুম ও রান্নাঘর ভেঙে পড়ে। উপজেলা প্রশাসন ঘরগুলো সংস্কার করছে।
জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, নির্মাণ কমিটির অন্যরাও দায় এড়াতে পারবেন না। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরিশালে উপহারের ঘরে ফাটল
বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুরে উপহারের ঘরে ফাটল ধরায় দেয়াল ভেঙে আবার দ্রুত নির্মাণ করা হচ্ছে। আরেকটি ঘরের দুটি খুঁটিতে ফাটল ধরায় মেরামত করা হয়েছে। রহমতপুরে ৪২টি ঘরের অর্ধেকের বেশির ফ্লোরে আস্তরন উঠে গেছে। উপজেলার চাঁদপাশায় নির্মিত ঘরগুলোর বারান্দাও বড় জোয়ার এবং প্লাবনে তলিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, দুই দফায় বাবুগঞ্জ উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েছে ১৮০টি পরিবার। চাঁদপাশা ইউনিয়নের নোমোরহাট এলাকায় নির্মিত ঘরগুলোর মেঝে জোয়ার এবং প্লাবনের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।
বাবুগঞ্জের ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, এক উপকারভোগী শক্তি দেখাতে গিয়ে আঘাত করে একটি ঘরের দুটি খুঁটি ভেঙে ফেলেছে। দুই দফায় বরিশাল জেলার ১০ উপজেলায় ১ হাজার ৭৭৪ পরিবারকে জমিসহ ঘর দেওয়া হয়েছে। আরও ২১৮টি ঘর নির্মাণাধীন আছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে ঘরে ফাটল
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ভোলাহাটে আশ্রায়ণ প্রকল্পে ঘর নির্মাণে অনিয়মের কারণে ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোনো বৈরী আবহাওয়ায় তা ধসে পড়ার আশঙ্কা আছে। নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট। টিনশেড করতে ব্যবহার হচ্ছে নিম্নমানের কাঠ। অধিকাংশ ঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ছে। পলিথিন দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করছেন অনেকেই। ভোলাহাট উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ১৬০, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৪১১টি ও তৃতীয় পর্যায়ে ৪০০টি বাড়ি বরাদ্দ হয়েছে।
আখাউড়ায় নির্মাণ কাজ বন্ধ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ঘর তৈরিতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমানা আক্তার উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের আজমপুর গ্রামে প্রকল্প পরিদর্শনে গিয়ে অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মাণ করায় নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। আখাউড়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হান্নান ভূইয়া স্বপন নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইট আনার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সেগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আমতলীতে ব্যাপক অনিয়ম
বরগুনার আমতলীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ধসে পড়ার আশঙ্কায় বসবাস করছেন না বরাদ্দপ্রাপ্তরা। হস্তান্তরের দুই মাসের মধ্যে ভিম ছাড়া নির্মাণকরা ঘরগুলোর দরজা জানালা ভেঙে যাচ্ছে। উঠে যাচ্ছে মেঝের পলেস্তারা। ফাটল ধরেছে মূল ভবনে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম বলেন, ঘর নির্মাণের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমাকে ইউএনও হস্তক্ষেপ করতে দেয়নি। তার কার্যালয়ের এনামুল হক বাদশাকে দিয়ে মালামাল ক্রয় ও ঘর নির্মাণসহ সব কাজ করেছেন। শুরুতেই আমি ঘর নির্মাণে অনিয়মের প্রতিবাদ করেছিলাম। কিন্তু এতে ইউএনও আমাকে লাঞ্ছিত করেছেন।
ইউএনও আসাদুজ্জামান ঘর নির্মাণে অনিয়মের কথা অস্বীকার করে বলেন, যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে কাজ করা হচ্ছে।
মুরাদনগরে ৯টি ঘরের বারান্দা ভেঙেছে
কুমিল্লার মুরাদনগরে নির্মিত ৯টি ঘরের বারান্দা আংশিক ভেঙে পড়েছে বলে জানা গেছে। ঝুঁকিতে আছে আরও কয়েকটি ঘর। উপজেলার চাপিতলা এলাকায় গত সপ্তাহে যে ৯টি ঘর ধসে পড়ে সেখানে ৩০টি আধাপাকা ঘর তৈরি করা হয়। তড়িঘড়ি করে ড্রেজার দিয়ে মাটি ভরাট করায় চার দিকের মাটির সমন্বয় হয়নি। তাই মাটি ধসে পড়েছে। তাছাড়া নিম্নমানের ইট, রডসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ।
চাপিতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাইয়ুম ভুইয়া বলেন, ড্রেজারের বালু দিয়ে জমি ভরাট করায় কিছু ঘর ভেঙে গেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবদুল হাই বলেন, ঘর ধসে পড়েনি। বর্ষণে আংশিক ক্ষতি হয়েছে।
মুরাদনগরের ইউএনও অভিষেক দাশ বলেন, আমরা এখনো ঘরগুলো বুঝিয়ে দেইনি। মাটি ধসে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।
কলারোয়ায় ঘর ভেঙে দিলেন ইউএনও
সাবেক ইউএনওর দুর্নীতি ঢাকতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের সাতটি ঘর রাতের আঁধারে ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিলেন সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার বর্তমান ইউএনও। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর নির্মাণের নানা ত্রুটি নিয়ে দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়। সদ্য বিদায়ী ইউএনও মৌসুমি জেরিনকে রক্ষা করতেই এই ঘর ভাঙা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। উপজেলার লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নের তৈলকুপি গ্রামে ঘরগুলো ভাঙা হয়।
স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু জানান, নির্মাণ কাজে ত্রুটির কারণে অল্প দিনের মধ্যেই ঘরগুলো ফাটল ও ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল।
ইউএনও বলেন, সাতটি ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে। ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করে উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় এমপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে ঘরগুলো ভাঙা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনিয়ম-দুর্নীতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, দেশে দুর্নীতি কোন স্তরে পৌঁছেছে। দুর্নীতিবাজরা কতটা ধৃষ্ট হলে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ক্ষমতাধর প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্পেও লুটপাট চালাতে পারে। কতটা অমানবিক হলে তারা অসহায় মানুষদের জন্য নেয়া একটি মানবিক প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি করতে পারে।
তারা বলেন, শুধু ওএসডি করে বা বিভাগীয় মামলা দিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনিয়ম-দুর্নীতির সুরাহা করলে চলবে না। প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্প নিয়ে, গৃহহীনদের ঘর নিয়ে যারা দুর্নীতি করেছে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। অপরাধী যে বা যারাই হোক না কেন, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনকেও খতিয়ে দেখতে হবে।
অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে যেসব ঘর ভেঙে গেছে সেগুলো পুনর্নির্মাণ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন তারা।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৫২৮
আপনার মতামত জানানঃ