বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে একের পর এক উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি)। এর আগে সীমান্তে সেনা মোতায়েনসহ নানা ধরণের উস্কানিমূলক তৎপরতার পর এবার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমারের রাষত্রদূতকে তলব করে এসবের প্রতিবাদ করেছে প্রতিবারই। কিন্তু মিয়ানমার এসব ঘটনা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও এসব তৎপরতা বরং দিনদিন বাড়িয়েই চলেছে।
স্থানীয়দের দাবি, মিয়ানমারের বাহিনীগুলো ক্রমাগত উস্কানি সৃষ্টি করে সীমান্তে উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি ক্রতে চাইছে। তাদের অঙ্গভঙ্গি এওরকম যে, যেন তারা যুদ্ধ চায়। বাংলাদেশের বাহিনীগুলো সংযত হলেও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে সরকারের আরও করণীয় রয়েছে বলে মনে করছেন ওই এলাকায় ক্রিয়াহীল বিভিন্ন অধিকারভিত্তিক সংগঠনের কর্মীরা।
১০ নভেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার সেন্টমার্টিন দ্বীপের উত্তর বঙ্গোপসাগরেমাছ ধরতে গিয়ে বিজিপির হাতে আটক হয় ৯ বাংলাদেশি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)- বিজিপি যোগাযোগ হলেও চূড়ান্ত সাড়া মেলেনি বিজিপি’র কাছ থেকে। মাছ ধরার ট্রলারসহ জেলেদের এখনো আটকে রেখেছে মিয়ানমার।
নৌকাটির মালিক মোহাম্মদ আমিন জানান, মাছ ধরার ট্রলারটির একসময় ভাসতে ভাসতে নাফনদীতে চলে আসে। বিজিপি সদস্যরা ট্রলারটি লক্ষ্য করে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেলে জেলেরা বিজিপির হাতে ধরা পড়ে। আটক জেলেরা হলেন মো. নুরুল আলম (২৭), ইসমাইল হোসেন (২০), মো. ইলিয়াছ (২২), ইউনুছ আলী (২৫), মোহাম্মদ কালা ওরফে কালাবদা মাঝি (৪২), সাইফুল ইসলাম (১৮), সলিম উল্লাহ (২০), মো. কামাল মিয়া (২০) ও মো. লালু মিয়াকে (৩০) ধরে নিয়ে যায় বিজিপি।
পরে বিষয়টি স্থানীয় বিজিবির তল্লাশিচৌকিতে জানানো হয়েছে। মোহাম্মদ আমিন জানান, আটক নৌকার মাঝি মোহাম্মদ কালার সঙ্গে মুঠোফোনে মিয়ানমারের সীমান্তচৌকি থেকে কথা হয়েছে। তাঁদের সেখানে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়েছে।
টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্ণেল মো. ফয়সল হাসান খান জানান, ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেদের ফেরত চাওয়ার বিষয়ে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সাড়া পাওয়া যায়নি। বিজিবির পক্ষ থেকে জেলেদের দ্রুত ফেরানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। “জেলেদের এখনো ফেরত না দেয়ার খবরে স্থানীয় জেলেপল্লিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে” বলে জানিয়েছেন, সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোহাম্মদ নুরুল আমিন।
৮ নভেম্বর মিয়ানমারের নির্বাচনের আগে সীমান্তে সেনা চৌকি বসিয়ে সেনা সমাবেশ করে দেশটির সেনাবাহিনী। জিরো পয়েন্টে থাকা রোহিঙ্গারাসহ এপাশে ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে একপর্যায়ে সীমান্তে অবস্থান নেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ঢাকা-নেপিদো দফায় দফায় আলোচোনার পর সম্প্রতি পরিস্থিতি খানিকটা স্বাভাবিক হলেও সীমান্তে রোহিঙ্গা হত্যা, জেলেদের আটকসহ নানা অপতৎপরতা জিঁইয়ে রেখেছে দেশটির সীমান্তবাহিনী।
Available for everyone, funded by readers. Every contribution, however big or small, makes a real difference for our future. Support to State Watch a little amount. Thank you.
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ