সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে ইরাকের সীমান্তবর্তী এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরান সমর্থিত ইরাকের সশস্ত্র গোষ্ঠীর পাঁচ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন অনেকেই।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় নিউজ এজেন্সি সানা বলছে, এ হামলায় এক শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত তিনজন।
স্থানীয় সময় গতকাল রোববার সন্ধ্যায় পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি জন কিরবি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যেসব স্থাপনা লক্ষ্য করে মার্কিন হামলা চালানো হয়, তা ইরানসমর্থিত মিলিশিয়া গ্রুপগুলো ব্যবহার করে আসছিল। এসব মিলিশিয়া গোষ্ঠী ইরাকে অবস্থানরত মার্কিনদের ওপর গাড়ি হামলা চালায়। এর পাল্টা জবাব দিতে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
পেন্টাগন ইরাকে এ ধরনের হামলার জন্য ইরানসমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠী খাতাইব হিজবুল্লাহ (কেএইচ) এবং খাতাইব সাইদ আল শুহাদাকে (কেএসএস) দায়ী করেছে।
পেন্টাগন ওই বিবৃতিতে আরও বলেছে, এ হামলার মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পরিষ্কার বার্তা পাঠিয়েছেন। সেটি হলো আমেরিকার স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করে—এমন যেকোনো আঘাতে এভাবেই প্রতিক্রিয়া দেখানো হবে।
সামরিক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এ হামলায় এফ-১৫ এস এবং এফ-১৬ এস বোমারু বিমান ব্যবহার করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল দিবাগত রাত একটায় এ বিমান হামলা হয়েছে বলে জানানো হয়।
হামলার পর মার্কিন বিমানগুলো নিরাপদে ফিরে এসেছে বলেও পেন্টাগনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। ক্যাম্প ডেভিডে সপ্তাহ কাটিয়ে হোয়াইট হাউসে ফেরার পথে সাংবাদিকেরা এ নিয়ে প্রশ্ন করলে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এ নিয়ে তিনি পরদিন কথা বলবেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইরানসমর্থিত মিলিশিয়াদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ২০ জন নিহত হন।
এর আগে ২৫জুন মালির উত্তরাঞ্চলে গাড়ি বোমা হামলায় জাতিসংঘের ১৩ জন শান্তিরক্ষী আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ মিশন। এছাড়া দেশটির মধ্যাঞ্চলে পৃথক এক জঙ্গি হামলায় ছয় সেনা সদস্য নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে মালির সেনাবাহিনী।
দেশটির উত্তরের গাও অঞ্চলে ইছাগারা গ্রামে শান্তিরক্ষীদের তৈরি একটি অস্থায়ী ঘাঁটিতে শুক্রবার গাড়ি বোমা হামলা করা হলে ১৩ জন শান্তিরক্ষী আহত হয়। অঞ্চলটিতে আল-কায়েদা ও ইসলামিক স্টেট (আইএস) সংশ্লিষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো সক্রিয়।
জাতিসংঘ মিশনের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, আহত শান্তিরক্ষীদের মধ্যে ১২ জন জার্মানির অপরজন বেলজিয়ামের। তবে জাতিসংঘ প্রথমে ১৫ শান্তিরক্ষী আহত হওয়ার কথা জানালেও পরে তা সংশোধন করে ১৩ জন আহত হওয়ার কথা জানায়।
মালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্নেগরেট ক্রাম্প-কারেনবুচার বলেছেন, আহত ১২ জার্মান সেনার মধ্যে ৩ জন গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন। তবে তাদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা এখন স্থিতিশীল হলেও অপরজনের সার্জারি চলছে বলে জানান তিনি।T
এদিকে দেশটির সেনাবাহিনী এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, মোপতি অঞ্চলের সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া মালির মধ্যাঞ্চলের বোনি অঞ্চলে এক জঙ্গি হামলায় অন্তত ছয় সেনা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও এক সেনা। তবে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
সংঘাতকবলিত মালির বিস্তীর্ণ অঞ্চল ছাড়াও মালির প্রতিবেশী দেশ বুরকিনা ফাসো ও নাইজারে ইসলামপন্থীসহ অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনগুলো হামলা চালিয়ে আসছে। যদিও অঞ্চলটিতে শান্তিরক্ষীসহ বিভিন্ন দেশের হাজারো সেনা মোতায়েন রয়েছে।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে সশস্ত্র গোষ্ঠীদের সহিংসতা ও সংঘাত বন্ধের লক্ষ্যে জাতিসংঘ মিশন মালিতে ১৩ হাজারের বেশি শান্তিরক্ষী মোতায়েন করেছে। ২০১৩ সাল থেকে দেশটিতে রেকর্ড ২৩০ জন শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১২৪৯
আপনার মতামত জানানঃ