ভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। করোনা প্রতিরোধে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ তৈরিতে ৩২০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে যুক্তরাষ্ট্র। ভবিষ্যতে যেন আবার এমন মহামারীর কবলে পড়তে না হয় সেজন্যই এ উদ্যোগ। সুনির্দিষ্টভাবে বললে, এ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন বাড়িতেই তার চিকিৎসা শুরু করা যায়। যা দিয়ে ভবিষ্যতে হাজারো মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে।
দেশটির হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস জানিয়েছে, অ্যান্টিভাইরাল এ উদ্যোগের নেতৃত্ব দিচ্ছে মার্কিন স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থাগুলো। তারা কভিড-১৯ বা ভবিষ্যতের ভাইরাস হুমকির জন্য চিকিৎসা পদ্ধতির আবিষ্কার, উন্নয়ন ও উৎপাদনের কাজ করবে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ ও দ্য বায়োমেডিকেল অ্যাডভান্সড রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি যৌথভাবে এ উদ্যোগে কাজ করছে। এর প্রি-ক্লিনিক্যাল ও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হবে। ৩০ কোটি ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে গবেষণা ও গবেষণাগার সহায়তার জন্য। এছাড়া প্রায় ৭০ কোটি ডলার যাবে বারদা ও এনআইএইচের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ ইউনিটে উন্নয়ন ও উৎপাদন সহায়তা হিসেবে। বাকি ১২০ কোটি ডলার খরচ হবে বায়োমেডিকেল পার্টনারশিপের জন্য, প্রাথমিকভাবে যা যাবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ওষুধ আবিষ্কারের পেছনে।
অবশ্য কেবল যুক্তরাষ্ট্রই নয়। বিশ্বের অনেক দেশের সরকার অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসাকে শক্তিশালী করতে কাজ করছে। গত এপ্রিলেই যুক্তরাজ্য একটি নতুন অ্যান্টিভাইরাস টাস্কফোর্স গঠন করেছে। যেখানে কভিড-১৯ প্রতিরোধী নতুন দুটি অ্যান্টিভাইরালের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। শিগগিরই সেগুলোর প্রয়োগ শুরু হবে। এর পরের মাসেই ইউরোপীয় কমিশন জানায়, এ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে তারা তিনটি নতুন অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ তৈরির চেষ্টা করছে।
এদিকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ‘মুখে সেবনযোগ্য’ ওষুধ আবিষ্কারের জন্য ৩০০ কোটি ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। বৃহস্পতিবার দেশটির স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ‘হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্ট’ ওষুধ আবিষ্কারে গবেষণা ও উন্নয়নের গতি বাড়ানোর লক্ষ্যে এই ঘোষণা দেয়।
বাইডেনের প্রধান চিকিৎসা উপদেষ্টা ড. অ্যান্থনি ফাউচি জানান, মুখে সেবন করা যায় এমন ওষুধের গবেষণা ও পরীক্ষায় ‘ক্লিনিকাল ট্রায়াল’ এর জন্য এই অর্থ ব্যয় হবে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস’ (এনআইএআইডি) এর পরিচালক ফাউচি বলেন কোভিড- ১৯ এর গুরুতর অসুস্থতা এবং মৃত্যু ঠেকাতে সক্ষম হবে ভাইরাস প্রতিরোধী নতুন ওষুধ।
বিশেষ করে মুখে খাওয়ার ওষুধ, যা রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে ঘরেই নেওয়া যাবে। মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যা জীবন বাঁচানোর শক্তিশালী এক অস্ত্র হয়ে উঠবে। তিনি জানান, বিদ্যাপীঠ এব্ং ওষুধ শিল্পের প্রধান বিজ্ঞানীসহ বিভিন্ন অঙ্গনের সমন্বয়ে ‘আমেরিকান রেসকিউ প্ল্যান’ থেকে এই অর্থের মাধ্যমে ‘অ্যান্টিভাইরাল প্রোগ্রাম ফর প্যানডেমিকস’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হবে।
এর মাধ্যমে চিকিৎসাখাতে উদ্ভাবনের উৎসাহ তৈরি হবে এবং কোভিড- ১৯ এর টিকা তৈরির মতোই ব্যতিক্রমী সফলতা পাওয়া যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সংক্রামক রোগ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান এই বিশেষজ্ঞ। এই পরিকল্পনায় ৩০ কোটি ডলার গবেষণার কাজে এবং গবেষণাগারের জন্য রাখা হয়েছে। প্রায় ১০০ কোটি ডলার থাকবে ‘প্রিক্লিনিক্যাল’ এবং ‘ক্লিনিক্যাল’ পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যবহারের জন্য।
এসডব্লিউ/এমএন/এফএ/১২০৮
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ