মার্কিন গণমাধ্যমগুলো দেশটির সব অঙ্গরাজ্যের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেলে ঘোষিত এই ফলাফলে দেখা যাচ্ছে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন ৩০৬ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়ে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের অবস্থানকে সুসংহত করেছেন।অন্যদিকে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২৩২ ইলেকটোরাল ভোট।
শুক্রবারের আগ পর্যন্ত বাইডেনের ভোট সংখ্যা ছিল ২৭৯ এবং ট্রাম্পের ২১৭। গতকাল অ্যারিজোনা, জর্জিয়া ও নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের ফল ঘোষিত হয়।
অ্যারিজোনা ও জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে জো বাইডেন বেশি পপুলার ভোট পাওয়ায় ওই দুই অঙ্গরাজ্যের ২৭ ইলেকটোলার কলেজ ভোট তার ঝুলিতে জমা পড়ে। ফলে তার ভোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০৬। অন্যদিকে নর্থ ক্যারোলিনার ১৫ ভোট নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মোট ২৩২ ইলেটোরাল ভোট ঘরে তুলতে সক্ষম হন।
এটি হচ্ছে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক উল্টো ফলাফল। ওই বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩০৬ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রাথী হিলারি ক্লিন্টন পেয়েছিলেন ২৩২ ভোট।
জর্জিয়া রাজ্যে দুই প্রার্থীর ভোট খুব কাছাকাছি থাকায় এর আগে বলা হয়েছিল, সেখানকার ভোট আবার গণনা করা হবে। কিন্তু শুক্রবার রাজ্যের নির্বাচনি কর্মকর্তারা ঘোষণা করেন, আরেকবার গণনা করা হলেও এই পরিসংখ্যানে কোনো পরিবর্তন আসবে না। এই রাজ্যে বাইডেনের জয়ের ফলে ১৯৯২ সালের পর এই প্রথম কোনো ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জর্জিয়ায় বিজয়ী হলেন।
এদিকে ট্রাম্প যথারীতি এই ফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তার সমর্থকদের রাজপথে বিক্ষোভ দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন।ট্রাম্প এবারের নির্বাচনের আগে থেকে কারচুপির আশঙ্কা প্রকাশ করে বহুবার বক্তব্য দিয়েছেন এবং ফল ঘোষণা শুরু হওয়ার পর একই অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আছেন। ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এক বক্তব্যে দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবার ক্ষমতা গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। কিন্তু শুক্রবারের চূড়ান্ত ফল ঘোষিত হওয়ার পর এখন ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে একই দাবি করে যাওয়া অসম্ভব হবে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।
ট্রাম্পের ভোট জালিয়াতির অভিযোগ সরাসরি নাকচ করে দিলেন নির্বাচনী কর্মকর্তারা
মার্কিন নির্বাচনি কর্মকর্তারা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন। তারা বলেছেন, এবার ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে সুরক্ষিত নির্বাচন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল (শুক্রবার) এক বিবৃতিতে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নির্বাচনি কর্মকর্তারা বলেছেন, “ভোটিং পদ্ধতিতে কোনও গরমিল, ভোট সরিয়ে ফেলা বা ভোট বদলের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, কোনো ধরনের আপোসরফাও হয়নি।”
গত ৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর থেকে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করে আসা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবার নতুন করে কোনও প্রমাণ ছাড়াই ২৭ লাখ ভোট সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলার কয়েকঘণ্টা পর নির্বাচনী কর্মকর্তাদের এই বিবৃতি এল।
বিবিসি জানিয়েছে, যৌথভাবে বিবৃতিটি প্রকাশ করেছে ‘ইলেকশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার গভমেন্ট কো-অর্ডিনেটিং কাউন্সিল’। এই কাউন্সিলে আছেন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইলেকশন এসিসটেন্স কমিশন’ এবং রাজ্য পর্যায়ের কর্মকর্তারা; যারা নির্বাচন তদারকি করেছেন।
এই বিবৃতির মধ্য দিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের কর্মকর্তারা নির্বাচনে প্রেসিডেন্টের ভোট জালিয়াতির অভিযোগ একেবারে সরাসরি খারিজ করে দিলেন। এ মুহূর্তে চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগে দেশজুড়ে গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়া আবার ভালো করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
Available for everyone, funded by readers. Every contribution, however big or small, makes a real difference for our future. Support to State Watch a little amount. Thank you.
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ