বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বলেছেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই সব শূন্যপদে নিয়োগ দেওয়া হবে। অনেকে করোনাকালে সময় নষ্ট হচ্ছে বলে চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর দাবি করছেন। মূলত মহামারির কারণে কারও সময় নষ্ট হচ্ছে না। সবাই যথাসময়েই আবেদন করতে পারছেন।’
শনিবার (১২ জুন) করোনাকালে নিয়োগ বিলম্ব ও চাকরিপ্রার্থীদের হতাশার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি চলছে, এটা নিয়ন্ত্রণ করা এখনো কারও ক্ষমতার মধ্যে নেই উল্লেখ করে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘তবে, আমরা আমাদের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। নিয়োগ পাওয়ার পর গত আট মাসে আমি যতটা সম্ভব নিয়োগের সুপারিশ করেছি। ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি নিয়েছি, ৪২তম স্পেশাল বিসিএসের ভাইভা চলছে। প্রতিদিন ২২০ জনের ভাইভা নেওয়া হচ্ছে। রিস্ক নিয়ে এসব কাজ করতে হচ্ছে। পরিস্থিতি রাতারাতি ঠিক হয়ে যাবে না। এখন আমরা যদি ডাক্তার, নার্স নিয়োগ না করি, তাহলে চিকিৎসা দেবে কারা। এ নিয়ে নানা সমালোচনা হুমকি-ধমকিও আসছে।’
চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যতগুলো পদ শূন্য ছিল, সবগুলোতে নিয়োগ দেওয়া হবে।’
এদিকে, করোনা পরিস্থিতির কারণে দেড় বছরের বেশি সময় নষ্ট হওয়ায় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা দুই বছর বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে জনসমাবেশ করেন চাকরিপ্রার্থীরা। জনসমাবেশ থেকে এ দাবি জানান তারা। এদিনের সমাবেশে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাকরিপ্রার্থীরা যোগ দেন।
তারা শাহবাগ থেকে সমাবেশ শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে যাওয়ার পথে শাহবাগ থানার সামনে কিছু সময় অবস্থান করেন। এসময় করলে পুলিশ তাদের তাড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন সমাবেশে অংশ নেওয়া চাকরিপ্রার্থীদের। পরে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
সমাবেশে চাকরিপ্রার্থীরা করোনাকালে ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনায় স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ও মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে ৩২ করার দাবি জানান।
চাকরির বয়স ৩২ করার দাবির পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরে তারা বলেন, করোনাকালীন অচলাবস্থায় সব বয়সের শিক্ষার্থী, চাকরিপ্রত্যাশীরা ইতোমধ্যেই দেড় বছর হারিয়ে ফেলেছে। ১৯৯১ সালে শেষবার সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ২৭ থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ করা হয়, যখন গড় আয়ু ছিলো ৫৭ বছর। এই ৩০ বছরে গড় আয়ু ১৬ বছর বৃদ্ধি পেয়ে ৭০ বছর হলেও সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় বাড়ানো হয়নি।
তারা আরও জানান, ২০১১ সালে এসে অবসরের বয়স বেড়ে হয় ৫৯ আর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য হয় ৬০ বছর। অবসরের মেয়াদ যেহেতু ২ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে, সেক্ষেত্রে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ২ বছর বৃদ্ধি করলে সেটাও আর সাংঘর্ষিক হয় না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী অক্ষয় রায় বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের ২০১৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখিত ‘প্ৰতিশ্ৰুতি’ অনুযায়ী করোনাকালীন প্রণোদনা হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ উন্নীত করার জোরালো দাবি ও আবেদন জানাচ্ছি।’
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৫০৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ