৬২ বাংলাদেশিসহ ১৫৬ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ। রোববার রাতে (৬জুন) মালয়েশিয়ার সাইবার জায়া এলাকার একটি নির্মাণধীন স্থাপনা থেকে তাদের আটক করা হয়।
মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক খায়রুল যাইমি দাউদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রোববার রাত ১১টার দিকে পরিচালিত অভিযানে মোট ২০২ জনকে আটক করা হয়। চার থেকে ৫০ বছর বয়সী এসব অভিবাসীর কাগজপত্র খতিয়ে দেখার পর ১৫৬ জন বাদে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আটককৃতদের মধ্যে বাংলাদেশি ৬২ জন, ইন্দোনেশিয়ান ৪২ জন, মিয়ানমারের ২৯ জন, নেপালের ২০ জন, পাকিস্তান ও ভারতের একজন করে নাগরিক রয়েছে। এদের মধ্যে ১২ জন নারী ও ২ জন শিশু।
তিনি আরও জানান, বৈধ কাগজপত্র না থাকায় এই ১৫৬ জনকে সোমবার পুত্রজায়ার অভিবাসী আটক কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকেই তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোভিড-১৯ এর বিস্তাররোধে নির্মাণ-শ্রমিকরা এসওপি অনুযায়ী কাজ করছেন কি না তা নিশ্চিত করতেই এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই সময় তাদের অনেকের কাছে কোভিড-১৯ পরীক্ষার কাগজও ছিলো না।
তিনি আরও বলেছেন, ‘অভিবাসন বিভাগ শুধুমাত্র কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল, তাদের নিয়োগকারীদের নয়।’
দাবিগুলো অসত্য। কারণ, ২০১৯ সালে ইমিগ্রেশন আইনের অধীনে মোট এক হাজার ৫৯ নিয়োগকারীকে আদালতে নানা অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। এতে মোট আরএম ১৯ দশমিক ৩ মিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিংগিত জরিমানা হয়েছিল। গত বছর ১৩০ নিয়োগকারীকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তাদের মোট ১০ মিলিয়ন রিংগিতের চেয়ে বেশি জরিমানা হয়েছিল,’ যোগ করেন তিনি।
অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক আরও জানিয়েছেন, এ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ১৩০ নিয়োগকারীকে ৩ দশমিক ২ মিলিয়ন রিংগিত জরিমানা করা হয়েছে।
এর আগে মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে বসবাসরত অভিবাসী কর্মীদের বার্ষিক ভিসা নবায়ন বা লেভি প্রদান কার্য়ক্রম আগামী ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করেছে দেশটির সরকার। এতে দেশটিতে বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত কয়েক লাখ বিদেশী কর্মী অবৈধ হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন অভিবাসন খাতের বিশ্লষকরা।
দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিদেশী কর্মীদের ভিসার নবায়নে লেভি বা নতুন শুল্ক পরিশোধ ব্যবস্থাটি আগামী বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, বিদেশী কর্মীদের কর্মসংস্থান শিল্পের বিভিন্ন খাতে সঠিক চাহিদার ভিত্তিতে পরবর্তীকালে তাদের নিয়োগ করা হবে।
মানবসম্পদ মন্ত্রী বলেছেন, ২জুন বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত লেভি (শুল্ক) সিস্টেমটি স্থগিত করা হয়েছিল। দীর্ঘ সময় ধরে চলা করোনা মহামারীর কারণে দেশটিতে স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক খাতে নেতিবাচক প্রভাবের ফলে এটাকে প্রতিরোধ করার জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ ছাড়া এই মাল্টি-টায়ার সিস্টেমের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় বিদেশী কর্মীদের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় জনশক্তি ব্যবহারের পথ সুগম করতে এ ব্যাবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও মন্রী জানান।
কারণ করোনার ছোবলে অর্থনৈতিক মন্দায় পড়ে দেশটির অসংখ্য নাগরিক তাদের কর্ম হারিয়ে বেকার হয়ে গেছেন। তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে। এরপর চাহিদার ভিত্তিতে বিদেশীদের পূনরায় নিয়োগ দেয়া হবে। পাশাপাশি নিয়োগকর্তাদের বিদেশী কর্মী নিয়োগের কৌঠা পদ্ধতি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। বিভিন্ন শ্রমশক্তির উৎস দেশ থেকে নতুন কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৫১১
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ