ভারতে শনাক্ত কোভিড-১৯ ধরনকে ‘ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট’ নাম দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গতকাল সোমবার সংস্থাটি এই ঘোষণা দিয়েছে। ভারত গত ১২ মে আপত্তি জানিয়ে বলেছিল, ধরনটি এখন পর্যন্ত বি. ১.৬১৭, যা ‘ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট’ বলে বিবেচিত করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর আগে বলেছিল, যে দেশে ভাইরাস বা ধরনগুলো শনাক্ত হবে, তা ওই দেশের নামে চিহ্নিত করা উচিত নয়। আজ মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
করোনার ভারতীয় ধরনের নতুন নামকরণের বিষয়ে ডব্লিউএইচওর কোভিড–১৯–বিষয়ক কারিগরি কমিটির প্রধান মারিয়া ফন কেরখোভ বলেছেন, করোনার শনাক্ত হওয়া ধরনের নাম নিয়ে কোনো দেশকে কলঙ্কিত করা উচিত নয়। ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনার ধরনটির নাম এখন থেকে হবে ‘ডেলটা’। তবে এর ফলে ধরনটির বৈজ্ঞানিক নামে (বি.১.৬১৭) কোনো পরিবর্তন আসবে না। বিজ্ঞানবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও গবেষণায় এটির বৈজ্ঞানিক নামটি ব্যবহৃত হবে।
সংস্থাটির একটি দল গ্রিক বর্ণমালা ব্যবহার করে এগুলোর নাম দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। সেগুলো হলো— আলফা, বেটা, গামা ইত্যাদি। এটি ‘সাধারণ মানুষের জন্য সহজ ও আরও কার্যকর হবে’, বলে মনে করছে সংস্থাটি। ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, ভারতে ‘আগে পাওয়া’ ধরনটি ‘কাপা’ নামে পরিচিত হবে।
গত বছরের অক্টোবরে ভারতে প্রথম করোনার এই ধরন শনাক্ত হয়। করোনার এ ধরন অতি সংক্রামক। দ্রুত একজনের কাছ থেকে অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। মূলত এ ধরনের কারণে ভারতে করোনা পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশটি।
ভারতের সীমানা ছাড়িয়ে এশিয়া, ইউরোপসহ বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার অতি সংক্রামক এই ধরন। ভারতসহ বিশ্বজুড়ে দ্রুত সংক্রমণ বিস্তারের জেরে মে মাসের শুরুর দিকে করোনার ভারতীয় ধরনকে ‘উদ্বেগজনক ধরন’ হিসেবে বর্ণনা করে ডব্লিউএইচও। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিল থেকে ছড়ানো করোনার ধরনকে উদ্বেগজনক হিসেবে চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি।
ভারতে মৃত্যু ৩ হাজারের নিচে
স্বাস্থ্য সেবা সংকট, অক্সিজেন সংকট, হাহাকার, মৃত্যু, পোড়া গন্ধসহ গত প্রায় ২ মাস ধরে ‘একমাত্র’ পরিচয় হয়ে ওঠা ভারত যেন ফের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। কিছুটা হলেও যেন বইছে স্বস্তির নিঃশ্বাস। করোনাভাইরাস মহামারির ভয়াবহ তাণ্ডবের পর দেশটিতে এখন প্রতিদিনই কমছে করোনায় নতুন সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা।
একসময় প্রায় সাড়ে চার হাজারে পৌঁছানো দৈনিক মৃত্যু সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নেমে এসেছে তিন হাজারের নিচে। আবার দিনে চার লাখ ছাড়ানো দৈনিক নতুন সংক্রমণও কমতে কমতে দাঁড়িয়েছে সোয়া এক লাখের কাছাকাছি। কমেছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও।
মঙ্গলবার (১ জুন) ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ লাখ ২৭ হাজার ৫১০ জন মানুষ। গত দেড় মাসেরও বেশি সময়ের মধ্যে যা সর্বনিম্ন।
এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমিত রোগী কমেছে প্রায় ২৫ হাজার। সর্বশেষ এই সংখ্যাসহ মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৮১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৪ জনে।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ হাজার ৭৯৫ জন। এতে দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৫ জনে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৩১৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ