মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের সোর্স কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা ও খায়রুল ইসলাম কালুর দীর্ঘদিন হদিস নেই। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই দুই আসামি গ্রেপ্তার হলে মিতু হত্যার ঘটনায় আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। জানা যায়, মুছা ও কালুসহ মামলার আট আসামির ব্যাপারে দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দর ও সীমান্তে তথ্য সরবরাহ করবে মামলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বিমানবন্দর ও সীমান্তে জারি হচ্ছে সতর্কতা
মামলার কোনো আসামি যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে সেই লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
আজ-কালের মধ্যে পিবিআই তাদের ব্যাপারে বিমানবন্দর ও সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন চেকপোস্টে আনুষ্ঠানিক জানাবে।
এ ব্যাপারে পিবিআই’র প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, মিতু হত্যা মামলায় আসামিদের ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা শিগগিরই বিমানবন্দরসহ সংশ্লিষ্ট জায়গায় চিঠি লিখবেন।
বাবুলকে প্রধান আসামি করে নতুন মামলা
চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় এরই মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে নতুন মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় বাবুলকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন বাবুলের ‘সোর্স’ কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা, এহতেশামুল হক ভোলা, মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, সাইদুল আলম শিকদার ওরফে সাক্কু, শাহজাহান ও খায়রুল ইসলাম কালু।
এরই মধ্যে নতুন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি সাকুকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার রানীরহাট থেকে গ্রেপ্তার করে বলে জানায় র্যাব-৭ এর একটি দল।
পিবিআই বলছে, মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে যে মামলা করেন ওই মামলায় জামিনে ছিলেন সাকু। তবে যেহেতু ওই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে এবং মিতু হত্যার ঘটনায় নতুন মামলা হয়েছে, তাই এখন সাকুকে রিমান্ডে আনতে আইনি কোন বাধা নেই।
নিখোঁজ মুছা
আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূল সন্দেহভাজনদের একজন কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ।
সাইদুল ইসলাম শিকদার সাকু তার ভাই। মিতু হত্যার পর তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার যে মামলা করেছিলেন, সেই মামলার তদন্তে এই দুই ভাইয়ের নাম এসেছিল। সাইদুল গ্রেপ্তার হয়ে পরে জামিনে মুক্তি পান।
এদিকে মুছার পরিবারের অভিযোগ অনেক আগেই পুলিশ তাকে ‘আটক’ করেছে। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে তা নিশ্চিত করা হয়নি।
রিমান্ডে সাকু
মিতু হত্যা মামলার সাত নম্বর আসামি সাইদুল ইসলাম সিকদার ওরফে সাকুর চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
এর আগে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সাকুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে উপস্থাপন করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে।
বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রানীরহাট বাজার থেকে সাকুকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাকে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করে।
মিথ্যা ঠিকানা দিলেন বাবুল
মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার আসামি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার পুলিশকে তার বাসার যে ঠিকানা দিয়েছেন সেটি মিথ্যা। কী কারণে মিথ্যা ঠিকানা দেওয়া হলো এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
পিবিআই প্রধান বলেন, বাবুল হয়তো তার বর্তমান স্ত্রীকে পুলিশের মুখোমুখি করতে চাননি। তাই বাসার মিথ্যা ঠিকানা সরবাহ করেছেন। মামলার এজাহারেও মিথ্যা ঠিকানা লেখা হয়েছে। তবে এটা বাবুলের অস্থায়ী ঠিকানা। স্থায়ী ঠিকানা সঠিক থাকায় অস্থায়ী ঠিকানা মিথ্যা হলেও মামলা পরিচালনায় কোনো সমস্যা নয়।
বাবুল মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের সি- ব্লকের, ১১ নম্বর সড়কের ২২ নম্বর বাসার আট তলায় বসবাস করেন বলে দাবি করলেও সেখানে আদতে তিনি বসবাস করছিলেন না। আসলে মোহাম্মদপুরের যে বাসায় বাবুল সর্বশেষ বসবাস করছিলেন গত সোমবার থেকে সেখানে তার বর্তমান স্ত্রী ও সন্তানরা নেই। সোমবার বাসা তালাবদ্ধ করে তারা চলে গেছেন।
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ