পুর্ণাঙ্গ ও আংশিকভাবে মাত্র ৩০ ভাগ সংবাদমাধ্যমে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে। আর ৭০ ভাগ সাংবাদিক উৎসব ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন বলে জানিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
তাদের অভিযোগ, বেতন-ভাতা খেলাপি সংবাদপত্রের কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছে। সরকার সংবাদপত্রে যে ভুর্তকি বা বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে, তা মূলত সাংবাদিকদের আর্থিক সুবিধার জন্যই দেয়।
আজ মঙ্গলবার (১১ মে) ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু এক বিবৃতিতে মালিকদের এমন আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও অনলাইন পোর্টালে কর্মরত সংবাদিকদের বকেয়াসহ বেতন ও উৎসব ভাতা পরিশোধের দাবি জানিয়েছিল ডিইউজে। মে দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের ‘ডিইউজে’ নির্বাহী পরিষদের সভায় এই দাবি জানান সাংবাদিক নেতারা।
সভায় সাংবাদিক নেতারা বলেন, অনেক সংবাদমাধ্যম করোনা দুর্যোগের মধ্যেও মাসের পর মাস বেতন বকেয়া রেখেছে। ঈদ উৎসব ভাতা পরিশোধেও নানা ধরনের টালবাহানার কথা শোনা যাচ্ছে। এতে সাংবাদিকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।
সাংবাদিক নেতারা আরো বলেন, দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বিকল্প নেই, মহান মে দিবস আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়েছে। জনকণ্ঠ, মানবকণ্ঠ, আলোকিত বাংলাদেশ, সারাক্ষণ, ইত্তেফাকসহ বেশ কিছু গণমাধ্যমে ছাটাইসহ নতুন করে যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে, তা নিরসনে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি জানানো হয়।
আজকের বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, এরপর বেশকিছু সংবাদপত্র ও টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ বেতন-ভাতা-বোনাস প্রদান করেছে। তাদের ধন্যবাদ জানান ডিইউজে নেতারা।
তবে ৭০ ভাগ সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও অনলাইন পোর্টাল বেতন-ভাতা-বোনাস পরিশোধ না করায় বিবৃতিতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে ডিইউজে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিবৃতিতে বলেন, এতে পেশাদার সাংবাদিকদের মাঝে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ, অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান নিয়মিত বেতন-ভাতা পরিশোধ করে থাকে, তাদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রদানে অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার।
বেতন-ভাতা খেলাপিদের তালিকা তৈরি জন্যে ডিএফপির প্রতি আহ্বান জানান ডিইউজের নেতারা।
তারা বলেন, করোনা মহামারির এ দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে চাকরিচ্যুতি বরদাস্ত করা হবে না। ইতিমধ্যে যাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, তাদের অবিলম্বে পুনর্বহাল করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রচার সংখ্যায় এগিয়ে থাকার দাবিদার অনেক সংবাদপত্র উচ্চ হারে সরকারি বিজ্ঞাপন বিল আদায় করছে। হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারি ক্রোড়পত্রও। কিন্তু সাংবাদিকদের ন্যায্য বেতন-ভাতা পরিশোধে গড়িমসি চলছে। অনেক প্রতিষ্ঠান মাসের পর মাস বকেয়া রাখছে বেতন।
তারা বলেন, ইতোমধ্যে সারা দেশে প্রায় ৬০ জন সাংবাদিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এবং উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। অনেক সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরাও এই ভাইরাসে আক্রান্ত। প্রচণ্ড স্বাস্থ্যঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে কাজ করে গেলেও বহু প্রতিষ্ঠান এখনও সাংবাদিক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে টালবাহানা করছে। এমনকি, বহু প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিনের বকেয়াও আটকে আছে। শ্রম আইনে যা অন্যায়, অমানবিক ও অপরাধের শামিল। উপরন্তু নানা অজুহাত দেখিয়ে করোনা কালে সাংবাদিক ছাঁটাই করা হচ্ছে।’
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/২১০০
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ