গাজীপুরের টঙ্গী মিলগেট এলাকায় অবস্থিত হামিম গ্রুপের পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১৫ শ্রমিক গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। সোমবার (১০ মে) দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীসহ ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো আজ সোমবার সকালে কর্মস্থলে এসে কাজ শুরু করেন শ্রমিকরা। এসময় মালিক পক্ষ থেকে তিন দিনের ছুটির নোটিশ দেওয়া হয়। এতে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন শ্রমিকরা। একপর্যায়ে কারখানা থেকে বের হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা। শ্রমিকরা ঈদের ছুটি তিন দিনের পরিবর্তে ১০ দিন করার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
বিক্ষোভের খবর পেয়ে পুলিশ বেলা ১২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। এসময় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। একপর্যায়ে শতাধিক রাউন্ড শট গানের গুলি ছোড়ে পুলিশ। এতে ১৫ জন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ ও ৩৫ জন আহত হন।
ওই কারখানার শ্রমিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঈদের ছুটিসহ মোট ১০ দিনের ছুটি দাবি করা হয়েছিল। এরপর থেকেই আমাদের ওপর হামলা শুরু করে। পুলিশ এসে গুলি করে। ঈদে দেশের বাড়িতে গিয়ে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে বছরে একবার ঈদ করব, এর চেয়ে বড় পাওয়া আমাদের কাছে কিছুই নেই।’
হা-মীম গ্রুপের ডেনিম গার্মেন্টসে কর্মরত আহত রবিউল মিয়া বলেন, সকালে আমরা ঈদের ১০ দিনের ছুটি চাই। আমাদের এক সহকর্মী গেট থেকে বের হলে, পুলিশ লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। আমরা পুলিশের কাছে জানতে চাইলাম, কেন তারা আমাদের সহকর্মীকে আহত করল? এরপর তারা গুলি শুরু করে। আমরা প্রায় ৪০-৫০ জন আহত হয়েছি। অনেকে টঙ্গী হাসপাতালে আছে। আমরা আটজন ঢাকা মেডিকেলে এসেছি। সবাই গুলিতে আহত। আমরা কোনো ভাঙচুর, মিছিল, মিটিং বা সড়ক অবরোধ করিনি। তারা বিনা বিচারের আমাদের ওপর গুলি চালায়।
এদিকে দুপুর ২টায় শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। সেখানেও শ্রমিকদের সরাতে পুলিশ একাধিক টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এখনো থেমে থেমে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ চলছে।
এ বিষয়ে টঙ্গী জোনের উপপুলিশ কমিশনার মো. ইলতুৎ মিশ জানান, ঘটনার পরপরই গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করে। এক ঘণ্টার মধ্যেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক স্বাভাবিক হয়।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের হামলায় আহত হয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের এএসপি এস আলম, থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশসহ ৫ জন। আহত শ্রমিক ও পুলিশ সদস্যদের টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালের চিকিৎসক মাসুদ রানা গণমাধ্যমকে জানান, এখন পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ ও আহত ২৬ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৫১৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ