নতুন একটি ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম’ প্রকাশ করলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন প্ল্যাটফর্মটির নাম ‘ফ্রম দ্য ডেস্ক অব ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প’। আজ বুধবার (৫ মে) বিবিসির এক প্রতিবেদনে খবরটি প্রকাশ হয়।
বলা হচ্ছে, এই ‘কমিউনিকেশন’ ওয়েবসাইটে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডেস্ক থেকে সরাসরি বিষয়বস্তু প্রকাশিত হবে। অনুরাগী-অনুসারীরা এই ওয়েবসাইটে নাম নিবন্ধন করে ট্রাম্পের বক্তব্য জানতে পারবেন। এখন পর্যন্ত এই প্ল্যাটফর্মে শুধু ট্রাম্পই বলবেন, অন্য কারও মন্তব্য করার সুযোগ নেই।
চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিলে সহিংসতার পর টুইটার, ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো প্রধান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো থেকে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়। সে সময় তিনি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রতিষ্ঠার কথা জানান।
জানা যায়, ট্রাম্পের নতুন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করেছে ক্যামপেইন নিউক্লিয়াস। সেখানে গত বছরের যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট একাধিক ফেসবুক ও টুইটারের পোস্টও জায়গা করে নিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি প্রকাশের আগে গতকাল মঙ্গলবার (৪ মে) ফেসবুকের ওভারসাইট বোর্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে পর্যালোচনা শুরু করেছে। ট্রাম্পকে স্থায়ীভাবে সেখানে থেকে নিষিদ্ধ করা হবে নাকি অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে দেওয়া হবে সে বিষয়ে আজ বুধবার (৫ মে) যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় সিদ্ধান্ত আসার কথা রয়েছে।
এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, ট্রাম্পকে অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে ৭ দিনের মধ্যে আবার চালু করা হবে। এছাড়া ইউটিউব বলেছে, সহিংসতার আশঙ্কা কমে এলে ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
ট্রাম্পের সিনিয়র উপদেষ্টা জেসন মিলার এর আগে বলেছিলেন, একটি নতুন সোশ্যাল মিডিয়া চালু করা হবে। গত মার্চ মাসে মিলার বলেন, ট্রাম্পের এই নতুন সোশ্যাল মিডিয়া হবে অনেক বড় মাপের।
কিন্তু মঙ্গলবার মিলার এক টুইট বার্তায় বলেন, তিনি আগে যে ধারণা দিয়েছিলেন, নতুন এই ওয়েবসাইট সে ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম নয়। এ সংক্রান্ত আরো তথ্য নিকট ভবিষ্যতে আসবে।
ট্রাম্পের উসকানিতে তার সমর্থকেরা গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে তাণ্ডব চালায়। ওই হামলার পর সামাজিক যোগাযোগের প্রধান প্রধান মাধ্যমে ট্রাম্পকে নিষিদ্ধ করা হয়। টুইটার স্থায়ীভাবে ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার কথা জানায়।
সামাজিক যোগাযোগের প্রধান প্রধান মাধ্যমে নিষিদ্ধ হওয়ার পর অনেকটা হাঁপিয়ে ওঠেন ট্রাম্প। ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর তিনি ই-মেইলের মাধ্যমে তার অনুসারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছিলেন। এ ছাড়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিজের বক্তব্য প্রকাশ করে আসছেন তিনি।
গত মার্চ মাসে ট্রাম্পের নির্বাচনী উপদেষ্টা জেসন মিলার জানিয়েছিলেন, খুব শিগগির সাবেক প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) সামাজিক যোগাযোগের নিজস্ব মাধ্যম চালু করবেন।
ফেসবুক-টুইটারের মাধ্যমে ট্রাম্প ২০১৬ ও ২০২০ সালের নির্বাচনে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছিলেন। ক্ষমতায় থাকাকালে ট্রাম্প টুইটার ও ফেসবুকে খুবই সক্রিয় ছিলেন। এসব সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নিয়মিত ব্যবহার করে তিনি আলোচনায় থাকতেন।
৪ মে ‘ফ্রম দ্য ডেস্ক অব ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প’ নামের নতুন যোগাযোগের প্ল্যাটফর্ম নিয়ে প্রথম সংবাদ পরিবেশন করে ফক্স নিউজ। এই প্ল্যাটফর্মে ‘লাইক’ দেওয়া যাবে। কনটেন্ট অন্যত্র ‘শেয়ার’ করতে পারবেন ট্রাম্পের ভক্ত-অনুসারীরা।
প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প নিজের বক্তব্য দেবেন। ভিডিও আপলোড করবেন। অন্যরা তা দেখে-শুনে লাইক-শেয়ার করবেন। এ প্ল্যাটফর্মে মুক্ত কথায় বিশ্বাস করার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য কাজ করা হবে, যে নির্বাচনে প্রতিটি বৈধ ভোট গণনা করা হবে।
ট্রাম্পের প্ল্যাটফর্মে বলা হয়েছে, গত চার বছর তার প্রশাসন আমেরিকার লোকজনের জন্য আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি কাজ করেছে। এ প্ল্যাটফর্ম তার অর্জনগুলোকে সমুন্নত রাখবে। সমর্থন জানাবে সাহসী রক্ষণশীলদের, যারা ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিকে সামনে এগিয়ে নেবে। তারাই আমেরিকার ভবিষ্যৎ বলে প্ল্যাটফর্মে উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টরা সরাসরি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এড়িয়ে চলেন। ট্রাম্প তার ব্যতিক্রম। তিনি তার রাজনৈতিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি আবার প্রার্থী হবেন, এমন আভাসও দিয়ে রেখেছেন। এ ছাড়া রিপাবলিকান পার্টির রক্ষণশীল লোকজনকে তিনি প্রকাশ্যে সমর্থন করছেন। বিরোধীদের সমালোচনা করছেন। ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসে নিজের অনুগত রক্ষণশীলদের জয়ী করতে ইতিমধ্যে ট্রাম্প কাজে নেমে পড়েছেন।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৬০৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ