মার্কিন সেনাবাহিনীর স্পেস ফোর্সের কমান্ডার মেজর জেনারেল জন রেমন্ড বলেছেন, চীন ও রাশিয়া এমন অস্ত্র তৈরি করেছে যেগুলো দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃত্রিম উপগ্রহগুলোকে নিষ্ক্রিয় করা বা ধ্বংস করে দেয়া সম্ভব। তিনি শনিবার ওয়াশিংটন পোস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেছেন।
তিনি গত মার্চ মাসের গোড়ার দিকেও একবার একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছিলেন। সে সময় তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেছিলেন, মহাকাশে চীন ও রাশিয়া যে সক্ষমতা অর্জন করেছে তা আমেরিকার মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জেনারেল রেমন্ড তখন আরো বলেছিলেন, দু’টি দেশের কাছেই বিভিন্ন মাত্রা ও শক্তির লেজার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে যা দিয়ে ভূপৃষ্ঠে বসেই মহাকাশে অবস্থিত কৃত্রিম উপগ্রহগুলোকে ধ্বংস করে ফেলা বা অন্তত নিষ্ক্রিয় করে দেয়া সম্ভব।
সে সময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মার্কিন জেনারেলের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, রাশিয়ার মহাকাশ সক্ষমতা নিয়ে আমেরিকার উদ্বেগ ভিত্তিহীন; কারণ, রাশিয়া একটি শান্তিকামী দেশ।
এবার জেনারেল রেমন্ড ওয়াশিংটন পোস্টকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “মহাকাশ হচ্ছে নৌ, স্থল ও আকাশের মতোই যুদ্ধ করার মতো একটি স্থান। বিগত বছরগুলোতে চীন ও রাশিয়া মহাকাশে যুদ্ধ করার এমন সক্ষমতা অর্জন করেছে যে, তারা ভূমিতে বসে বা মহাকাশ থেকে কিংবা সাইবার প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমাদের উপগ্রহগুলোকে ধ্বংস করে দিতে পারে।”
অবশ্য মার্কিন সেনাবাহিনীর স্পেস ফোর্সের কমান্ডার একথাও বলেছেন, আমেরিকা এমন কোনো যুদ্ধ চায় না যা মহাকাশে শুরু হবে বা ওই পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে। কাজেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তেমন ঘটনা প্রতিহত করার চেষ্টা করবে যাতে মহাকাশ সবার জন্য নিরাপদ থাকে।
এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন তার প্রথম গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে বলেছেন, আমেরিকা ও তার মিত্রদেরকে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের সামরিক সংঘাতের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। অস্টিন শনিবার আমেরিকার ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের প্রধানের পরিবর্তন উপলক্ষে এক বক্তব্যে এ সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন।
প্রযুক্তি দ্রুতগতিতে পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, সামনের দিকের সংঘাত শুধু জল, স্থল ও আকাশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং তার মহাকাশ ও সাইবার জগতেও ছড়িয়ে পড়বে। কাজেই আমেরিকাকে এই পাঁচ ধরনের যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
লয়েড বলেন, ‘এর অর্থ হচ্ছে আমাদেরকে ভবিষ্যত যুদ্ধগুলোর জন্য নয়া সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।’
তবে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী তার বক্তব্যে কোনো নির্দিষ্ট দেশের নাম উল্লেখ করেননি। তবে লয়েডের পরে বক্তব্য দিতে গিয়ে আমেরিকার ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের বিদায়ী কমান্ডার অ্যাডমিরাল ফিলিপ ডেভিডসন এ ব্যাপারে চীনের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে আমেরিকার প্রধান কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী চীন। অ্যাডমিরাল ডেভিডসন সরাসরি চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টিকে আমেরিকার কথিত উদারনৈতিক মতাদর্শের জন্য হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি দাবি করেন, ‘শান্তি বজায় রাখার জন্য আমেরিকা ও তার মিত্রদেরকে যুদ্ধ করে জয়ী হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।’
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৪০৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি।[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ