এক বছরেরও বেশি সময় পর অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দারা নিউজিল্যান্ডে অবাধ ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছে। সোমবার (২০ এপ্রিল) অকল্যান্ড বিমানবন্দরে হয়ে গেল যেন মহাপুনর্মিলন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ট্রাভেল বাবল চালু করেছে। দুই দেশের বাসিন্দাদের ভ্রমণ করতে এখন আর কোয়ারেন্টিন পালনের প্রয়োজন নেই। দীর্ঘদিন পর এমন সুযোগ পেয়ে হাজারো যাত্রী উড়োজাহাজের টিকিট কেটে রেখেছিল।
কঠোর বিধিনিষেধের কারণে দুই দেশই করোনা সংক্রমণের হার কম রাখতে পেরেছে। সোমবার ভোর হওয়ার আগেই নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য অস্ট্রেলীয় বাসিন্দারা দেশটির বিমানবন্দরে এসে জমা হতে থাকে। সিডনি বিমানবন্দরের যাত্রী ডন ট্র্যাট বিবিসিকে বলেছেন, ‘বুঝতে পারিনি আজ আমি এতটা আবেগতাড়িত হয়ে যাব।’
বেশির ভাগ যাত্রী প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। অবশ্য কারো কারো কাছে এটি ছিল স্মরণীয় ঘটনা। সিডনির জন পালাগি বলেন, ‘আমার বড় ভাই গত বৃহস্পতিবার মারা গেছেন। আমরা তখন যেতে পারিনি। কিন্তু এখন কোয়ারেন্টিন ছাড়াই যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। গিয়ে তাকে শেষ বিদায়টা দিতে পারব। সেদিক চিন্তা করে খুবই ভালো লাগছে।’
সোমবার দিনের শুরুতে সিডনি বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক টার্মিনালটি খুব ব্যস্ত ছিল। চেক ইন ডেস্কের সামনে ছিল দীর্ঘ সারি। অনেক মা-বাবা তাদের সন্তানদের সান্ত্বনা ও আনন্দ দিয়ে প্রথম ফ্লাইট ধরার জন্য ভোরে ঘুম থেকে ওঠার ক্লান্তি ভুলিয়ে দিয়েছিল।
দুই দেশের মধ্যে বাধামুক্ত ভ্রমণ শুরু হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন। তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোয়ারেন্টাইনমুক্ত ভ্রমণ শুরু করতে পারা সত্যিই আনন্দের। পরিবারের কাছে ফেরা, বন্ধু-বান্ধব বা ছুটি কাটাতে আসা যেই হোক না কেন, নিউজিল্যান্ডে আপনাদের স্বাগত।’
করোনা মহামারি শুরুর আগে অস্ট্রেলিয়া ছিল নিউজিল্যান্ডের পর্যটনের বড় উৎস। ২০১৯ সালে তাদের মোট পর্যটকের ৪০ শতাংশ ছিল অস্ট্রেলিয়া থেকে, সংখ্যায় যা প্রায় ১৫ লাখ। এছাড়া নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ অস্ট্রেলিয়ায় বাস করেন যা প্রায় দুই কোটি ৬০ লাখ অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যার দুই শতাংশ।
দুই দেশের মধ্যে বহু যাত্রী প্রতিনিয়ত চলাচল করেন। এ অবস্থায় করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এক বছরের বেশি সময় ধরে দুই দেশের সীমানা বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়া অন্যান্য দেশ থেকে এই দুটি দেশে কেউ এলে তাদের নিজ খরচে দুই সপ্তাহের বাধ্যতামূলক হোটেল কোয়ারেন্টাইনে যেতে হয়।
এই পদক্ষেপের কারণে দুই দেশ অন্যান্য দেশের তুলনায় করোনা সংক্রমণও ব্যাপক নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। অস্ট্রেলিয়ায় এ পর্যন্ত ২৯ হাজার ৫০০ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আর করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৯১০ জনের। যেখানে নিউজিল্যান্ডে শনাক্ত হয়েছেন মাত্র দুই হাজার ২০০ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৯৩৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ