লালমনিরহাট আদিতমারী উপজেলার সাপ্টীবাড়ি ইউনিয়নের বালাপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লক্ষ্মীকান্ত রায়কে মৃত দেখিয়ে ভোটার তালিকা থেকে তার নাম কেটে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ ঘটনায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন ওই স্কুলশিক্ষক। গত সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে স্থানীয় কোনো নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি তিনি। করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করতেও পারছেন না এই স্কুলশিক্ষক।
এ নিয়ে সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসে অভিযোগ দিলে কর্তৃপক্ষ তাকে ‘ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নাম কর্তনের আবেদনপত্র’ ধরিয়ে দেয়। ওই ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নাম কাটার আবেদনপত্রে তাকে মৃত দেখানো হয়েছে এবং তার মৃত্যুর তারিখ লেখা হয়েছে ২০১৪ সালের ৩ জুন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তিনি মারা গেছেন মর্মে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নাম কর্তনের আবেদনপত্রে তথ্য সরবরাহকারীর নাম লেখা রয়েছে ওই গ্রামের বাসিন্দা শ্রী মন মোহন রায়ের নাম। উপজেলা নির্বাচন অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য সংগ্রহকারী ধাইরখাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোমিনুর রহমান, মোগলহাট ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব ও তৎকালীন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আফতাবউজ্জামান স্বাক্ষরিত ওই আবেদনপত্রে তাকে মৃত দেখানো হয়। এ ঘটনায় একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন নাম কর্তনের আবেদনপত্রে স্বাক্ষরকারীরা।
লক্ষ্মীকান্ত রায় জানান, ২০১৬ সালের পর থেকে তিনি কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও অনলাইনভিত্তিক কোনো সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারেননি। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে মৃত দেখানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে তৎকালীন সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আফতাবউজ্জামান বলেন, স্কুল শিক্ষকদের এই কাজে নিয়োগ দেয় উপজেলা নির্বাচন অফিস। সরবরাহকৃত তথ্যের ওপর সুপারভাইজরগণ শতকরা ২৫ ভাগ যাচাই-বাছাই করে থাকেন। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনপত্রে আমরা স্বাক্ষর করে থাকি। চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন অস্বীকার করলে তো আর কিছু করার নেই।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আজাদুল হেলাল জানান, ওই নামে অন্য এক লোক মারা যাওয়ায় ভুলবশত তার নাম আবেদনপত্রে মৃত হিসেবে দেখানো হয়েছে। অচিরেই সেটির সমাধান করা হবে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় হয়তো ভুলবশত পরিচয়পত্রের কোনো সংখ্যা পরিবর্তনের কারণে এমন হয়ে থাকতে পারে। মৃত্যুর কারণ ছাড়া অন্য কোনো কারণে কারও নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার বিধান নেই। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানায় তারা।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৮১৭
আপনার মতামত জানানঃ