চট্টগ্রামে ছয় বছরের শিশু ধর্ষণ মামলার তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ডিএনএ ম্যাচিং ছাড়াই ভিকটিমের শনাক্ত করা ধর্ষককে পুলিশের দায়মুক্তি দেওয়ার ঘটনায় এ প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ধর্ষণের ঘটনা সত্য বললেও চার্জশিট থেকে একমাত্র আসামিকে অব্যাহতির আবেদন করেছে পুলিশ। ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগ, আসামির কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে পুলিশ এ কাজ করেছে।
জানা গেছে, একমাত্র আসামি নির্মল চন্দ্র আইচের ডিএনএ আলামত সংগ্রহ করলেও রহস্যজনক কারণে রিপোর্ট আসার আগেই তড়িঘড়ি করে শেষ করে ফেলা হয় মামলার তদন্ত। আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণের প্রমাণ না পাওয়ার কথা উল্লেখ করে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগরীর আকবর শাহ থানার এসআই বিকাশ চন্দ্র শীল। মামলার বাদী শিশুটির বাবা পুলিশের এ তদন্তকে আজগুবি উল্লেখ করে তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে আদালতে আবেদন করেছেন। একই সঙ্গে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিতে পুলিশের তদন্তের ওপর নারাজি দাখিল করেছেন আদালতে।
চলতি বছরের ৪ মে চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ এলাকায় মাঠে খেলতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। শিশুটির বাবা বাদী হয়ে নির্মলকে একমাত্র আসামি করে থানায় মামলা করেন।
মামলার বাদী বলেন, এলাকার কয়েকশ মানুষ নির্মলকে তার বাসা থেকে ধরে আনার পর সবার সামনে সে এ ধর্ষণ করার কথা স্বীকার করে। পুলিশের সামনেও আমার মেয়ে নির্মলকে শনাক্ত করে। তারপরও পুলিশ আজগুবি তদন্ত করে আসামিকে বাঁচাতে নির্দোষ বলে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র শীল বলেন, ভিকটিম প্রথমে নির্মলকে শনাক্ত করে। পরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যাওয়া বেলালের ছবি দেখালে তাকে শনাক্ত করে। বেলালকে শনাক্ত করায় নির্মলের ডিএনএ রিপোর্ট আসার আগেই তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দিয়েছি।
চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি এম এ নাসের বলেন, ধর্ষণ মামলায় ভিকটিমের শনাক্ত করা এবং জবানবন্দিতে আসা আসামিকে ডিএনএ ম্যাচিং ছাড়া চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়ার ঘটনা শুধু অস্বাভাবিকই নয়, জঘন্য অপরাধও বটে। তদন্ত কর্মকর্তা এখানে কিছু একটা লুকানোর চেষ্টা করেছেন, তা সুস্পষ্ট। ধর্ষণের মতো স্পর্শকাতর মামলার তদন্ত নিয়ে এ রকম ছেলেখেলার জন্য তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
আপনার মতামত জানানঃ