আফগানিস্তানের তালেবান নীতিনৈতিকতা–বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্প্রতি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে জীবন্ত কোনো কিছুর ছবি এবং ভিডিও গণমাধ্যমে প্রকাশ না করার আইন কার্যকর করা হবে। এনিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির সাংবাদিকরা। খবর দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের।
দেশটির সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, এমন সিদ্ধান্তের কারণে আফগানিস্তানের সংবাদ প্রকাশ করা কঠিন হয়ে পড়বে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জীবন্ত কোনো কিছুর ছবি এবং ভিডিও গণমাধ্যমে প্রকাশ না করা যাবে না- এমন তালিকায় গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির হেলমান্দ প্রদেশেও তালিকাভুক্ত হয়েছে।
প্রদেশটির তালেবান কর্মকর্তারা বলেছেন, জীবন্ত কোনো কিছুর ছবি এবং ভিডিও গণমাধ্যমে প্রকাশ না করার আইন শিগগিরই কার্যকর হবে। তবে তারা এনিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
সাইফ উল ইসলাম খাইবার নামে মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এপিকে নিশ্চিত করেছেন যে নতুন আইন অনুযায়ী বেশ কিছু প্রদেশে তালেবান নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় জীবন্ত কোনো কিছুর ছবি এবং ভিডিও গণমাধ্যমে প্রকাশ করা বন্ধ হয়েছে।
দেশটিতে নতুন এই আইনের ফলে সাংবাদিকরা আর মানুষ ও প্রাণীর ছবি বা ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন না। বিশেষ করে ফটোসাংবাদিকরা আশঙ্কা করছেন এতে করে তাদের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্য ইন্ডিপেনডেন্টকে একজন ফটোসাংবাদিক বলেছেন, শুধু ভবন, ব্যানার, ফাঁকা জায়গা এবং পাহাড়ের ছবি তোলার অনুমতি আছে।
তিনি বলেছেন, এটি আমার এবং অন্যান্য ফটোসাংবাদিকদের জন্য একটি ভয়ানক পরিস্থিতি। আমি যদি ছবি তুলতে না পারি তাহলে বেতন পাবো না।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমন আইনের কারণে দেশটিতে শঙ্কায় আছেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থায় ফ্রিল্যান্সার ফটো সাংবাদিক হিসেবে কাজ করা সাংবাদিকরা।
ওই সাংবাদিক জানান, সরকারি কর্মকর্তারা ফটোগ্রাফারদের হয়রানি করছেন এবং যখনই আমরা একটি অনুষ্ঠানে থাকি তখন আমাদের ছবি তুলতে বাধা দিচ্ছেল। তারা আমাদের সংবাদ সম্মেলনেও যেতে দিচ্ছে না।
এ ছাড়া স্থানীয় তালেবান নেতারা হিজাব বা বোরকা পড়া নারীদের ছবিও তুলতে দিচ্ছে না বলে জানান তিনি।
পুলিৎজার বিজয়ী আফগান বংশোদ্ভূত ফটো সাংবাদিক মাসুদ হোসেনি বলেছেন, এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের শেষ সময় যে তারা আফগানিস্তানের ছবি ও ভিডিও বিনামূল্যে দেখতে পাচ্ছে। এখন থেকে এটি মিডিয়া কর্মীদের নিরাপত্তার বিনিময়ে দেখতে হবে।
আপনার মতামত জানানঃ