প্রথমেই বলি, এটা একটা কাল্পনিক বিষয়। তারপরও ধরা যাক, সূর্যের চারদিকে পৃথিবী তার কক্ষপথে আলোর গতির ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ গতিতে ঘুরছে। তাহলে প্রথমেই পৃথিবী সৌরজগৎ থেকে ছিটকে বাইরে চলে যাবে। কারণ, সৌরজগৎ উত্ক্রমণ বেগ (Escape Velocity) হলো সেকেন্ডে মাত্র ৪২ কিলোমিটার।
এ বিষয়ে একজন প্রকৌশলী জ্যাক ফ্রেজার কুয়োরা ডাইজেস্টে খুব চমত্কার কতগুলো তথ্য দিয়ে দেখিয়েছেন, এ রকম সাংঘাতিক কিছু ঘটলে কী পরিণতি হতে পারে। যেমন প্রথম তিন মিনিটেই পৃথিবী মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথ পার হয়ে যাবে। ১ ঘণ্টার মধ্যে পার হয়ে যাবে বৃহস্পতি গ্রহ, ৫ ঘণ্টার মধ্যে প্লুটোর কক্ষপথ, ১৫ ঘণ্টার মধ্যে ভয়েজার-২, ১৯ ঘণ্টার মধ্যে ভয়েজার-১ এবং দিন দুয়েকের মধ্যে সৌরজগতের পরিসীমার বাইরে চলে যাবে!
আমরা ধরে নেব, পৃথিবী আমাদের ছায়াপথের আনুভূমিকেই ছুটে চলবে। না হলে সব হিসাব ওলট-পালট হয়ে যাবে। এই হিসাব ঠিক থাকলে এবং ছুটে চলার পথে অন্য কোনো মহাজাগতিক বস্তুর সঙ্গে সংঘর্ষ না ঘটলে ২৬ হাজার বছর পর পৃথিবী ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত অতিকায় ব্ল্যাকহোলের একেবারে কাছাকাছি চলে যাবে। আরও ৫০ হাজার বছর পর ছায়াপথের অপর প্রান্ত পার হয়ে যাবে।
তবে—এখানে একটা তবে আছে। এ রকম অসম্ভব গতিতে চললে তিন সপ্তাহের মধ্যে সব মানুষের মৃত্যু ঘটবে। কারণ সূর্য থাকবে না। পৃথিবীতে তাপ আর আসবে না। ঠান্ডায় সব জমে যাবে!
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জোনাথন ডেভার, (পিএইচডি, জ্যোতির্বিজ্ঞান, ২০০৮ সালে) এ বিষয়ে বলেন, সৌরব্যবস্থার ভরকেন্দ্রকে যদি ফ্রেম অব রেফারেন্স ধরা হয়, তাহলে এই বিশ্লেষণ শতকরা ১০০ ভাগ ঠিক।
কিন্তু ফ্রেম অব রেফারেন্স যদি এমনভাবে বেছে নেওয়া হয় যে, সেটি নিজেই উল্টোটিকে আলোর গতির ৯৯.৯৯ শতাংশ বেগে চলছে, তাহলে সেখান থেকে আপাত দৃষ্টিতে পৃথিবীকে গতিশীল মনে হবে। যদিও বাস্তবে পৃথিবীর কিছুই হবে না, যেমন আছে তেমনই থাকবে।
আপনার মতামত জানানঃ