সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদকে ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের কলকাতায় খুনের নেপথ্যে চোরাচালানের অভিযোগ এসেছে।
এসব ঘটনা নিয়ে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, তিনটি ঘটনার কোনোটিই ব্যক্তির বিষয় নয়। বিশেষ করে ২০১৪ সালের পর থেকে ক্ষমতাসীনদের আশ্রয়–প্রশ্রয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে, দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। একই সঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহার এমন পর্যায়ে গেছে যে কেউ কাউকে পরোয়া করছেন না। চলমান ঘটনাগুলো থেকে অনুমান করা যায়, এ ধরনের ঘটনা আরও অনেক আছে। আর এই ঘটনাগুলোর দায় অবশ্যই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের এবং সরকারের।
কারণ, জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এসেছে, সেগুলো তিনি যখন সেনাপ্রধান ছিলেন, তখনকার। পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের বিস্তর সম্পদ তাঁর অবসরের পর হঠাৎ করে হাওয়া থেকে আসেনি। তাঁরা এসব অন্যায়, দুর্নীতি করতে পেরেছেন ক্ষমতায় ছিলেন বলে।
অন্যদিকে খুন হওয়া সরকারি দলের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ ছিল। এসব জেনেও তাঁকে আশ্রয়–প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। একাধিকবার সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে সংসদে আনা হয়েছে।
ক্ষমতায় থাকার সময় তাঁরা নানা অপরাধ, দুর্নীতি করেছেন। তাঁরা এমন পদে আসীন ছিলেন যে তাঁদের বিরুদ্ধে কথা বলার মতো অবস্থা ছিল না। দেশে যে ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কারও বিরুদ্ধে কিছু বলার মতো পরিস্থিতি নেই, এটা তারই প্রমাণ।
অবশ্য আজিজ আহমদ সেনাপ্রধান থাকা অবস্থাতেই একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দুর্নীতির নানা অভিযোগ নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রচারিত হয়েছিল। ক্ষমতাসীন বা উচ্চ পদে থাকা এই ধরনের ব্যক্তিদের বিচার তো দূরে থাক, তাঁদের বিরুদ্ধে কথা বলাও অসম্ভব।
সম্প্রতি যে ঘটনাগুলো ঘটেছে বা সামনে এসেছে, এর ফলে মানুষ এখন বুঝতে পারছে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে ঠেকেছে। তবে এই ঘটনাগুলোকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। যে তিনজনের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে, তাঁরা প্রত্যেকেই সরকারের আনুকূল্য পেয়ে এসেছেন। সুতরাং এই অভিযোগগুলোর দায় যদি সরকার না নেয়, তাহলে কে নেবে?
আপনার মতামত জানানঃ