মেয়েটি ১৪ বছরের একটি শিশু, অথচ হতভাগ্য এই শিশুই আরেকটি শিশুর মা এখন। না, মেয়েটি বাল্যবিবাহের শিকার হয়নি, বরং আরও ভয়াবহ তার জীবন। ১২ বছর বয়সে মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়ে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছিল।
এখন কিশোরী মেয়েটির জন্য অপেক্ষা করছে আরও বড় অসম্মান। শিশুটি একবার ধর্ষণের শিকার হয়ে লাঞ্ছিত হয়েছে, এরপর মা হয়ে পর্যুদস্ত হয়েছে এবং এখন তাকে দাঁড় করানো হয়েছে তারই ধর্ষককে বিয়ে করার জন্য। কী অদ্ভুত এ সমাজ!
এ মামলার আসামি পাড়ার বয়স্ক এক দোকানদার, যাঁর পরিবারে স্ত্রী ও সন্তান আছে। দুই বছর ধরে তিনি কারাগারে। এ অবস্থায় দুই পক্ষই একটি আপস রফায় আসতে চাইছে, দুই পক্ষই বিয়ের বিষয়ে সম্মত বলে জানিয়েছে।
মেয়ের পরিবার চাইছে, মেয়েটিকে একজনের হাতে তুলে দিয়ে দায়মুক্ত হতে, আর অপরাধী চাইছে বিয়ে করে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসতে।
যাঁরা শিশু ও নারীর অধিকার নিয়ে কাজ করেন, তাঁরা সব সময় প্রান্তিক মানুষকে এই বলে সচেতন করেন যে ধর্ষণের ঘটনায় কোনো সালিস হয় না। অথচ দেখতে পারছি, ধর্ষণের শিকার নারীর সঙ্গে ধর্ষকের বিয়ের ঘটনা বিচারিক আদালতে উঠে আসছে।
২০২০ সালে ফেনীতে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে আটক এক ব্যক্তি ওই কিশোরীকে বিয়ে করতে চাইলে আদালত তাদের বিয়ের সিদ্ধান্ত দেন এবং পরে ওই লোকের জামিনও হয়ে যায়। আইনজীবী শারমিন আক্তার বলেছেন, বাংলাদেশের আইনে কিছু অপরাধ আছে, যেগুলোর কোনো আপস-মীমাংসার সুযোগ নেই। ধর্ষণের ঘটনা তেমনি একটা, যেখানে কোনো আপসের সুযোগ নেই।
যেখানে বাংলাদেশের আইনে বলা হয়েছে, ধর্ষণ বা ধর্ষণের পর হত্যা ঘটনায় কোনো আপস-মীমাংসার প্রশ্নই আসে না, সেখানে এ রকম মামলা ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ওঠে কীভাবে? এ ঘটনায় একটি শিশুকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে, সে ক্ষেত্রে ওই শিশুকে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে আপস-মীমাংসার উদ্যোগ কি ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন’-এর বিরুদ্ধে যাচ্ছে না? সবাই জানে, এ ক্ষেত্রে শুধু শাস্তির হাত থেকে বাঁচার জন্যই অপরাধী বিয়েকে ‘অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার’ করে থাকে।
২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ১৪ বছরের কিশোরীটি যখন তার প্রতি জঘন্য অন্যায়ের বিচারের দাবিতে বোনের পাশে আদালতে বসে ছিল, তখন বিচারক কিশোরীকে বলেন, ‘ওই বয়স্ক লোকটাকে কি তুমি বিয়ে করবে?’
উত্তরে কোনো জবাব না দিয়ে তাকিয়ে থাকে কিশোরী। বিচারক খাঁচার ঘরে দাঁড়িয়ে থাকা চুলদাড়ি পাকা এক ব্যক্তির দিকে নির্দেশ করে কিশোরীকে আবার বলেন, ‘পেছনে তাকিয়ে দেখো, ওই চুলদাড়ি পাকা বয়স্ক লোকটাকে তুমি বিয়ে করতে চাও?’
মেয়েটি পেছনে ঘাড় অল্প ঘোরালেও খাঁচার দিকে তাকায় না, পাশে থাকা বোনের দিকে তাকায়। এ সময় আদালতে উপস্থিত দু-তিনজন নারী নিচু স্বরে বলে ওঠেন, ‘এ রকম একটি লোকের সঙ্গে বিয়ে কী করে সম্ভব!’ কিশোরীকে বিচারক বলেন, ‘বোনের দিকে তাকিও না। তুমি নিজে বলো। বাসায় গিয়ে ঠান্ডা মাথায় নিজে সিদ্ধান্ত নাও। তুমি কি চাও একটা আসামিকে বিয়ে করতে? তোমার সামনে ভবিষ্যৎ পড়ে আছে। তুমি ছোট একটা মানুষ।’ (২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, প্রথম আলো)
মাননীয় বিচারককে ধন্যবাদ! কারণ, এ মামলায় তিনি শেষে যে কথাটি বলেছেন, তা অসাধারণ। একপর্যায়ে মেয়েটির বোন, আসামিপক্ষের আইনজীবী ও রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের উদ্দেশে বিচারক বলেন, ‘মেয়েটার পুরো ভবিষ্যৎ সামনে পড়ে আছে। সবাই মিলে কীভাবে মেয়েটিকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়, সেই চেষ্টা করুন। ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেবেন না। মেয়েটি প্রতিষ্ঠিত হলে অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়াবে।’ ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির বিয়ে কোনো সভ্য সমাজের রীতি হতে পারে না।
অথচ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আদালতের নির্দেশে ধর্ষকের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। ২০২১ সালে ১১ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ধর্ষকের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ের ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীর সঙ্গে বিয়ের শর্তে এক বছর কারাভোগের পর জামিন পান নাজমুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। জামিনের পর কাজির মাধ্যমে আদালতে বিয়ে হয় তাঁদের। ২০২২ সালের মার্চে পঞ্চগড়ে বিধবা এক নারীকে (৩৭) ধর্ষণের দায়ে কারাগারে যেতে হয়েছিল পুলিশের এক উপপরিদর্শককে (এসআই)। পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক ওই নারীকে বিয়ের শর্তে জামিন দেন এসআই আবদুল জলিলকে। আসামির প্রথম স্ত্রীও বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন।
আমাদের সমাজে ধর্ষণ মামলার আপস-মীমাংসার নামে যেটা হয়, সেটা হলো বিভিন্ন মহল থেকে নানা চাপ দেওয়া ও টাকার লোভ দেখিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার একটি উপায় বের করা। সে ক্ষেত্রে এ বিয়ের প্রস্তাবটাও একধরনের প্রলোভন। নির্লজ্জ সমাজ একবারও ভাবে না যে ধর্ষকের সঙ্গে জীবন কাটানোটা একজন নারীর পক্ষে কতটা লজ্জার ও কষ্টের হতে পারে?
ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির বিয়ে দেওয়া মানে মেয়েটিকে অগ্নিকুণ্ডে ছুড়ে ফেলা। সেই অগ্নিকুণ্ডে সে আরও ঝাঁজরা হবে, পুড়ে যাবে তার স্বপ্ন, সাধ ও পরিচয়। একজন জঘন্য অপরাধীর সঙ্গে তাকে বাধ্যতামূলকভাবে বসবাস করতে হবে।
আমাদের সমাজে ধর্ষণ মামলার আপস-মীমাংসার নামে যেটা হয়, সেটা হলো বিভিন্ন মহল থেকে নানা চাপ দেওয়া ও টাকার লোভ দেখিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার একটি উপায় বের করা। সে ক্ষেত্রে এ বিয়ের প্রস্তাবটাও একধরনের প্রলোভন। নির্লজ্জ সমাজ একবারও ভাবে না যে ধর্ষকের সঙ্গে জীবন কাটানোটা একজন নারীর পক্ষে কতটা লজ্জার ও কষ্টের হতে পারে?
এসব ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী নারী ধর্ষণের বিচার তো পানই না, উপরন্তু অপরাধীর সঙ্গে সংসার করার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হয়। ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পরিবার যদি দরিদ্র হন, তাঁরা হয়তো ভাবেন, বিয়ের মাধ্যমে মেয়েটির একটি হিল্লে হবে বা সমাজে মুখ দেখানোর একটা ব্যবস্থা হবে।
তা না হলে ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে নিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হবে। ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে ভবিষ্যতে কে বিয়ে করবে? তাই বাদী ও বিবাদী ফয়সালা করে ভয়ংকর একজন দানবের সঙ্গে তাঁকে থাকতে বাধ্য করেন।
বেসরকারি সংগঠন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন কর্তৃক ২০১৪ সালে প্রকাশিত ‘ল্যান্ডমার্ক জাজমেন্টস অন ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেন অব বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া অ্যান্ড পাকিস্তান’ শীর্ষক বইটিতে বিচারপতি গোলাম রাব্বানী মন্তব্য করেছিলেন, ধর্ষণ এমন একটি অপরাধ, যা শুধু ভুক্তভোগীকে নয়, পুরো সমাজকে আঘাত করে। কাজেই সে রকম একটি অপরাধ করে অপরাধী বিয়ে করে পার পেয়ে যায় কোন যুক্তিতে?
এ সমাজে নারী এতটাই অসহায় যে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত আনোয়ারুল হকের স্ত্রীও চাইছেন, তাঁর ধর্ষক স্বামী ওই কিশোরী মেয়েকে বিয়ে করুক। অথচ সেই আসামি ১৬৪ ধারায় একাধিকবার ধর্ষণের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। সমাজ কতটা পচে গেছে, আসামির বড় বড় ছেলেমেয়েও বিয়ের মাধ্যমে আপস চাইছেন।
আরও দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, ধর্ষকের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ে নিয়ে অতীতে প্রকাশিত সংবাদের নিচে যে মন্তব্যগুলো ছাপা হয়েছে, এর মধ্যে অধিকাংশ মানুষই খুশির মনোভাব প্রকাশ করেছেন। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে না হলে ধর্ষণের শিকার নারীর কী গতি হতো? কোথায় যেত ধর্ষণের শিকার মেয়েটি? তাঁরা সবাই মনে করছেন, ধর্ষক বিয়ে করার মাধ্যমে ভুক্তভোগীকে রক্ষা করে মহান দায়িত্ব পালন করেছেন।
দু-তিন বছর আগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে ধর্ষণের শিকার এক নারীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছে ধর্ষকের। ধর্ষণের শিকার তরুণী গৃহকর্মী ছিলেন। মামলা চলা অবস্থায় ভিকটিম সেন্টারে ছেলেসন্তানের জন্ম দেন বাদী। ছেলের বয়স যখন দুই বছর, তখন আদালতের অনুমতি নিয়ে ধর্ষক ভুক্তভোগীকে বিয়ে করেন এবং জামিনে বের হয়ে আসেন।
আদালত রায়ে তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘এ মামলাকে খারিজ করা হচ্ছে না। মামলাটা আমার কাছেই থাকবে। আমি দীর্ঘ একটা সময় নিয়ে মামলাটাকে পর্যবেক্ষণে রাখব—আসলেই ভুক্তভোগী সুখে আছেন কি না, আসামি তাঁর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছেন কি না, তাঁকে সুখে রাখছেন কি না।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শারমিন আক্তার ধর্ষকের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ে প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিয়েটাকে ‘জামিনের একটা গ্রাউন্ড’ হিসেবে ব্যবহার করে অপরাধীরা। বিচারকেরা যখন দেখেন যে বিয়ে হয়ে গেছে, কাজেই জামিন দিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু পরে এই মামলাগুলো আর এগিয়ে যায় না। কারণ, ওই আসামির প্রতি মামলা চালানোর ইচ্ছাটা বাদীর আর থাকে না, কিন্তু মামলা চালু থাকে।
তিনি মনে করেন, এর মাধ্যমে সমাজে একটা ভুল বার্তা যায়। কারণ, যাঁরা ধর্ষক, তাঁরা মনে করেন, ‘আমি ধর্ষণ করলাম এবং যাকে ধর্ষণ করলাম, তাকে বিয়ে করার মাধ্যমে মুক্তি পেয়ে গেলাম।’ সে ক্ষেত্রে ধর্ষণের জন্য যে বিচার ও শাস্তি, সেটা তাঁকে আর পেতে হয় না, মামলার কোনো ফলোআপ থাকে না।
আমাদের দেশের সামাজিক অবস্থায় ধর্ষণ ঘটনার পর ধর্ষণের শিকার একজন ভুক্তভোগী ও ভুক্তভোগীর পরিবারকে ট্যাবুর মধ্যে থাকতে হয়। তাঁরা ভাবতে বাধ্য হন, মামলা করবেন কি না, সবার সামনে যাবেন কি না, বিচারের মুখোমুখি হবেন কি না, মামলার ব্যয়ভার বহন করতে পারবেন কি না, আসামিপক্ষ শক্তিশালী কি না ইত্যাদি।
এসব ভাবনা-চিন্তাতেই পার হয়ে যায় বেশ কিছুদিন। এরপর মামলা করা ও সেই মামলা টেনে নিয়ে যাওয়া হয় আরও চ্যালেঞ্জিং। এটাই আমাদের কঠিন বাস্তবতা। এ ছাড়া যে শিশু, কিশোরী বা নারী ধর্ষণের শিকার হন, প্রথমে তিনি মানসিক ও শারীরিকভাবে ট্রমায় চলে যান।
অন্যদিকে প্রায়ই ধর্ষণের পর পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে ঘটনাটি প্রায় ধামাচাপা পড়ে যায়। ঘটনা গোপন করার জন্য বা অপরাধীরা শক্তিশালী হলে পরিবেশ ও পরিস্থিতির কারণে বেশির ভাগ ভুক্তভোগীকে দীর্ঘ সময় আটকেও রাখা হয়। তাই ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী সময়মতো মামলা বা অভিযোগ করতে পারেন না।
আবার অনেক ক্ষেত্রে মামলা থানা নিতে চায় না। অনেক ধর্ষণ মামলা বছরের পর বছর আদালতে চলতে থাকে। এরপর যখন মামলা চলতে চলতে একটা পর্যায়ে আসামি বিচারের মুখোমুখি হয়, তখনই শুরু হয় ‘দুই পক্ষের আপসের মাধ্যমে আসামির জামিন করানোর জন্য’ চেষ্টা।
একজন ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে হলে সেই মেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হতে বাধ্য। এমনও দেখা গেছে, বিয়ে করার পর ধর্ষকের জামিন হয়ে গেলে মেয়েটিকে তিনি তালাক দিয়ে দেন।
ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তাঁকেই আবার নির্যাতন ভোগ করার কী চমৎকার একটা ব্যবস্থা করা হয়েছে। ‘দুই পক্ষের আপসের মাধ্যমে আসামির জামিন করানোর জন্য এমন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে’ আরও কঠোর অবস্থান নিতে হবে মানবাধিকারকর্মী ও নারী অধিকার কর্মীদের।
আমরা মনে রাখতে চাই, মহামান্য বিচারক সাবেরা সুলতানা খানমের বক্তব্যটি, ‘মেয়েটার পুরো ভবিষ্যৎ সামনে পড়ে আছে। সবাই মিলে কীভাবে মেয়েটিকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়, সেই চেষ্টা করুন। ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দিয়েন না। মেয়েটি প্রতিষ্ঠিত হলে অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়াবে।’ আমরাও চাই, সমাজ নারীর এ অমর্যাদাকে প্রতিহত করুক। ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার শিশু ও নারীর বিয়ের উদ্যোগ বন্ধ হোক।
আপনার মতামত জানানঃ