যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার আতঙ্ক বেড়েই চলেছে। গত শনিবার(২৬ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়েস অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় হয়। এতে কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়। এর আগে বড়দিনে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলে টেনেসি অঙ্গরাজ্যের রাজধানী ন্যাশভিলে শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণ হয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয় আশেপাশের কয়েকটি গাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পরপর দু’দিন সন্ত্রাসী হামলায় আতঙ্কিত যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে ভাবতে বসেছে। প্রশ্ন উঠেছে দেশটির নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে।
জানা যায়, শনিবার একটি বোলিং এলেতে অতর্কিত বন্দুক হামলা হয়। এতে তিনজন নিহত হয় এবং আহত হয়েছেন আরো তিনজন। হামলার পর এক সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। মার্কিন পুলিশের পক্ষ থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।ইলিনয়েস রাজ্যের রকফোর্ড শহরের পুলিশ প্রধান ড্যান ও’সিয়া জানান, এই হামলার বিষয়ে তদন্ত চলছে। আমরা একজনকে আটক করেছি।
এর আগে শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে টেনেসি অঙ্গরাজ্যের রাজধানী ন্যাশভাইলে একটি মোটর হোম বা রিক্রিয়েশনাল ভেহিকলে (আরভি) বিস্ফোরণ ঘটে।বিস্ফোরণটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে এর প্রভাবে আশপাশের সবকিছু কেঁপে ওঠে। এসময় পাশে থাকা তিনটি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। বিস্ফোরণে টেলিকম জায়ান্ট এটিঅ্যান্ডটি’র ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এতে অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। তবে তাদের কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়। এছাড়া, আশপাশের অন্তত ৪১টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।ঘটনাস্থলে তারা কিছু টিস্যুর আলামত পেয়েছেন, যা মানুষের দেহাবশেষ হতে পারে।
পুলিশের ধারণা, ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে’ এ বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। তবে এর পেছনের উদ্দেশ্য নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। এখন পর্যন্ত কেউ এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেনি।
ন্যাশভিলের পুলিশ প্রধান জন ড্রেক সাংবাদিকদের জানান, পুলিশের কাছে একটি একটি রেকর্ড করা সতর্কবার্তা পৌঁছায়, যাতে বলা হয়েছে ‘১৫ মিনিটের মধ্যে একটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটবে’।
স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলো এটি প্রচার করে। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে ‘এই অঞ্চলটি এখনই খালি করতে হবে। আপনি যদি এই বার্তাটি শুনতে পান, তবে এখনই সরে আসুন…’ শীর্ষক বার্তা প্রচার করা হয়েছে।
পুলিশ মুখপাত্র ডন অ্যারন জানান, পুলিশ কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে আশপাশের ভবনগুলো থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলেন। বোমা স্কোয়াড ওই এলাকায় পৌঁছানোর আগেই গাড়িটি বিস্ফোরিত হয়।
জনগণের নিরাপত্তা বিষয়ে কঠোর নজরদারি রাখা বিশ্বের প্রভাবশালী এই দেশটির নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। একইসাথে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে দেশটিতে যেকোনো সময় বড়ধরণের সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করেন, অন্যদেশের নিরাপত্তা নিয়ে সবসময় নাক গলানো যুক্তরাষ্ট্রের উচিত নিজ দেশের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। দুটি হামলায় সন্ত্রাসীরা এখনো চিহ্নিত হয়নি এমন প্রশ্ন তুলে কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন।
এদিকে পরপর দুটি হামলাকে পাশে রেখে দেশটির জনগণের মধ্যে এক ধরনের চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য দেশটির প্রশাসন বরাবর অভিযোগ সম্বলিত দাবিও তোলা হয়েছে।
এসডাব্লিউ/এমএন/এসকেএইচ/১৫২৫
আপনার মতামত জানানঃ