রাজধানীর মিরপুর ও পল্লবী থানা এলাকার পাঁচটি ট্রাফিক পুলিশ বক্সে ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটোরিকশার চালকেরা হামলা চালিয়েছেন। এতে এক কনস্টেবল আহত হয়েছেন।
পুলিশ বলছে, অভিযানে দুটি ব্যাটারিচালিত রিকশা আটক করার পর এ হামলা হয়। শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ১০টার পর এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে পল্লবীতে মূল সড়কে অবৈধভাবে চালানোর অভিযোগে ব্যাটারিচালিত দুটি রিকশা জব্দ করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকরা কয়েকটি ট্রাফিক পুলিশ বক্সে হামলা করে। এতে এক কনস্টেবল আহত হয়েছেন।
পুলিশ বলছে, সকালে পল্লবীর কালশী এলাকার মূল সড়ক থেকে ব্যাটারিচালিত দুটি রিকশা আটক করা হয়। এ ঘটনার পর ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকেরা সংঘবদ্ধ হয়ে মিরপুর ১২, কালশী মোড়, সাগুফতা মোড়, মিরপুর ১০, মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর ট্রাফিক পুলিশ বক্সে প্রায় একই সময়ে হামলা চালান। এ সময় তারা ভ্যান ও রিকশায় করে ইটপাটকেল নিয়ে আসেন। তারা ট্রাফিক পুলিশ বক্সে ভাঙচুর চালান।
ট্রাফিক পুলিশের পল্লবী জোনের সহকারী কমিশনার ইলিয়াস হোসেন বলেছেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা হচ্ছে, ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটোরিকশা চলাচল করতে পারবে না। সেই নির্দেশনা মেনে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। আজ দুটি রিকশা আটক করার পর চালকেরা সংঘবদ্ধ হয়ে মিরপুর ও পল্লবীর বিভিন্ন ট্রাফিক বক্সে হামলা চালিয়েছেন।
ট্রাফিক পুলিশ বক্সে প্রায় একই সময়ে হামলা চালান। এ সময় তারা ভ্যান ও রিকশায় করে ইটপাটকেল নিয়ে আসেন। তারা ট্রাফিক পুলিশ বক্সে ভাঙচুর চালান।
ইলিয়াস হোসেন আরও বলেন, চালকদের কঠোরভাবে বলা হয়েছে, ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটোরিকশা প্রধান সড়কে চালানো যাবে না। কিন্তু তারা এ নিষেধ মানেন না। এ কারণে বিভিন্ন দুর্ঘটনাও ঘটছে। এ কারণে প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটোরিকশা চালানো হলে এগুলো আটক করা হয়। এ কারণেই তারা ট্রাফিক বক্সে হামলা চালিয়েছেন।
দেখা যাচ্ছে, রাজধানীর বিভিন্ন স্থান দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব অবৈধ যান। অথচ এসব যান চলাচল বন্ধে নির্দেশনা রয়েছে হাইকোর্টের। তা সত্ত্বেও অলিগলি থেকে শুরু করে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়কে চলছে এ যানবাহন। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষের মৃত্যু হয়, এর ২০ শতাংশই ঘটে ব্যাটারিচালিত রিকশা দ্বারা। প্রশ্ন হচ্ছে, এসব অবৈধ যান চলছে কীভাবে? অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব যান বন্ধ না হওয়ার পেছনে রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট।
এ সিন্ডিকেটে জড়িত রয়েছে স্থানীয় নেতা, চাঁদাবাজ, এমনকি পুলিশও। ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকরা বলছেন, তারা নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে একটি করে টোকেন নিচ্ছেন, এরপর নির্বিঘ্নে চালাচ্ছেন তাদের অবৈধ যান। প্রতিমাসে টোকেন বাবদ ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা নেওয়া হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, যেসব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছে, সেগুলো কি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা প্রশাসনের অচেনা? নিশ্চয়ই না। যে বা যারা টাকার বিনিময়ে ব্যাটারিচালিত রিকশার চালককে টোকেন দেয়, তারা যদি চিহ্নিত হয়ে থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন?
তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা যে উপেক্ষিত হচ্ছে, তা কি সরকারি মহল দেখছে না? বস্তুত ব্যাটারিচালিত রিকশাকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি তথা অবৈধ অর্থের এক বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। আর এরা খুবই প্রভাবশালী সিন্ডিকেট।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৫৩৫
আপনার মতামত জানানঃ