ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুতেই কমছে না। বরং প্রতিদিনই শনাক্ত বাড়ছে। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চার হাজার অতিক্রম করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের প্রতিবেদনে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
ডেঙ্গুতে নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে। রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু সবই বেড়েছে চলতি আগস্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত মোট রোগী শনাক্ত হয়েছে চার হাজার ৮১ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়েছেন তিন হাজার ৬৫০ জন। ঢাকায় ভর্তি হয়েছেন তিন হাজার ৩৯৫ জন এবং ছাড়পত্র নিয়েছেন তিন হাজার ৪২ জন। ঢাকার বাইরে মোট রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬৮৬ জন। এদের মধ্যে ছাড়পত্র নিয়েছেন ৬০৮ জন। এ সময় মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। এদের মধ্যে জুনে একজন, জুলাইতে নয়জন এবং আগস্টে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আজ বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৮ জন। এদের মধ্যে ঢাকায় ৭৭ জন এবং বাইরে ২১ জন। আগের দিন মোট শনাক্ত ও ভর্তি হয়েছিলেন ১২৮ জন। এদের মধ্যে ঢাকায় ১০৮ জন এবং বাইরে ছিল ২০ জন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪১৪ জন। আগের দিন ভর্তি ছিল ৪২৪ জন রোগী। এদের মধ্যে রাজধানীর ৪৭টি সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৩৮৬ জন এবং বাইরে ৬৮ জন। আগের দিন ছিল ৩৬১ জন এবং বাইরে ৬৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছরের মে মাসের ৩১ দিনে মোট রোগী শনাক্ত ও ভর্তি হয়েছিলেন ১৬৩ জন। জুনের ৩০ দিনে ৭৩৭ জন এবং জুলাই মাসের ৩১ দিনে দুই হাজার ৬৬৫ জন এবং চলতি মাসের ১৭ দিনে এক হাজার ৪২১ জন রোগী শনাক্ত ও ভর্তি হয়েছেন। আর মৃত্যু হয়েছে মোট ১৭ জনের।
ডেঙ্গুতে নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে। রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু সবই বেড়েছে চলতি মাসে। গত জুলাইয়ের ৩১ দিনে মৃত্যু হয়েছিল ৯ জনের। আর চলতি মাসের ১৬ দিনে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। রোগী শনাক্ত হয়েছে জুলাইয়ের প্রায় আড়াই গুণ।
ডেঙ্গুতে নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে। রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু সবই বেড়েছে চলতি মাসে। গত জুলাইয়ের ৩১ দিনে মৃত্যু হয়েছিল ৯ জনের। আর চলতি মাসের ১৬ দিনে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। রোগী শনাক্ত হয়েছে জুলাইয়ের প্রায় আড়াই গুণ।
এর আগে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করে। সেই বছর এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মারা যান ১৪৮ জন। করোনা মাহামারির মধ্যে ২০২০ সালে ডেঙ্গু তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে কিছুটা উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করে ডেঙ্গু।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগে ডেঙ্গু সংক্রমণ আরো বাড়বে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়তে থাকবে। আগস্ট মাস খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হবে। এ জন্য এডিস মশা নির্মূলে আরো বেশি কার্যক্রম নিতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু করোনাভাইরাস নয়, এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে বড় ধরনের ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষকেও করোনার মতোই ডেঙ্গু নিয়ে অধিকতর সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এখন একই সঙ্গে অনেকের মধ্যে করোনা ও ডেঙ্গু দেখা যাচ্ছে। এ ধরনের রোগী দ্রুত বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে যায়। বিশেষ করে শিশুদের জন্য ডেঙ্গু বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। সে কারণে তাদের সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখতে হবে। কোনো অবস্থাতেই হেলাফেলা করা যাবে না। উপসর্গ বোঝা মাত্রই করোনার সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গু পরীক্ষা অবশ্যই করতে হবে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৯৩২
আপনার মতামত জানানঃ