করোনা আতঙ্কে ভুগছে সারা বিশ্ব। এই মারণ ভাইরাসে প্রতিদিনই বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লাখ লাখ মানুষের আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে। মারা যাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। প্রতিনিয়ত চলছে গবেষণা। পাওয়া যাচ্ছে নতুন নতুন তথ্য।
এবার জানা গেল, গাঁজা এবং আফিমে এমন দুটি রাসায়নিক যৌগ রয়েছে যা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখে দিতে পারে-এমন দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
আমেরিকার ওরেগন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ‘জার্নাল অব ন্যাচারাল প্রোডাক্টস’ এ এই তথ্য জানিয়েছেন তারা।
গাঁজা এবং আফিমে থাকা ওই দুটি রাসায়নিক যৌগ প্রকৃতপক্ষে দুটি অ্যাসিড। একটির নাম ক্যানাবিগেরোলিক অ্যাসিড (সিবিজিএ) এবং অন্যটি ক্যানাবিডায়োলিক অ্যাসিড (সিবিডিএ)।
গবেষকদের দাবি, ওই দু’টি যৌগ ভাইরাসের বাইরের স্তরে থাকা শুঁড়ের মতো দেখতে স্পাইক প্রোটিনের বিভিন্ন অংশকে দ্রুত বেঁধে ফেলতে পারে। ফলে মানবশরীরে ঢুকে ভাইরাস আর কোষে নোঙর ফেলতে পারে না। সংক্রমণও হয় না। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
গবেষকদের একাংশ দাবি করছেন এই দুটি যৌগকে ব্যবহার করে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ নতুন ওষুধ আবিষ্কার করা যেতে পারে।
ওরেগন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রিচার্ড ব্রিমেন বলেছেন, আফিম, গাঁজায় যে দু’টি অ্যাসিডকে আমরা করোনা সংক্রমণ রুখে দিতে দেখেছি। দীর্ঘদিন ধরেই সেই যৌগগুলি মানুষের অন্যান্য চিকিৎসায় কাজে লাগে।
তবে এই দু’টি যৌগ যে এত দ্রুত রুখে দিতে পারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণও তা এই প্রথম জানা গেল।
গবেষকরা অবশ্য এও জানিয়েছেন, যারা নিয়মিত গাঁজা, আফিম সেবন করেন করোনার আলফা, বিটা রূপের সংক্রমণ তাদের হবে না, তা কিন্তু নয়।
তবে আফিম, গাঁজায় থাকা ওই দুটি রাসায়নিক যৌগ দিয়ে ভবিষ্যতে কোনও ওষুধ বানানো হলে তা করোনা সংক্রমণ রুখতে যথেষ্টই কার্যকরী হতে পারে।
করোনার সর্বশেষ আপডেট
বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় রোগী শনাক্তের হিসাবে আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এসময়ে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৩৩ লাখ ১৩ হাজার ৯১৫ জন। একই সময়ে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭ হাজার ৮৮৪ জন। এছাড়া একদিনে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১২ লাখ ২৯ হাজার ৭৯০ জন।
এ নিয়ে সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ কোটি ৪০ লাখ ৫৪ হাজার ৯২৩ জনে। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৫৫ লাখ ৪৬ হাজার ৭৫৩ জন। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন ২৬ কোটি ৫২ লাখ ৬১ হাজার ১৮০ জন।
আজ শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে বৈশ্বিক পর্যায়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য দেওয়া ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ৩১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৪৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত এবং ৭ হাজার ২৯৯ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল ওয়ার্ল্ডোমিটারস। সেই হিসাবে একদিনের ব্যবধানে শনাক্ত ও মৃত্যু দুটোই বেড়েছেই।
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ লাখ ৩৮ হাজার ৮৭৭ জন। একই সময়ে মারা গেছেন ২ হাজার ১২৭ জন।
দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬ কোটি ৫৩ লাখ ৪০ হাজার ৭৪২ জন এবং মারা গেছেন ৮ লাখ ৬৯ হাজার ৩৯০ জন। এছাড়া একদিনে সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৬ হাজার ৪০০ জন এবং এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৪ কোটি ২৯ লাখ ১১ হাজার ৪৯০ জন।
দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৩৯ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২৩ হাজার ৮২০ জন।
এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত ১ কোটি ৭ লাখ ৪৭ হাজার ১২৫ জন এবং মারা গেছেন ৩ লাখ ১৯ হাজার ৯১১ জন। রাশিয়ায় একদিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৪ হাজার ৯৫২ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট শনাক্ত বেড়ে দাঁড়ালো ৯৮ লাখ ৯ হাজার ৩০০ জন।
২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর হিসাবে তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে ভারত। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৩০ জনের মৃত্যু এবং শনাক্ত হয়েছেন ২ লাখ ৬৭ হাজার ৩৪৫ জন।
মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ভারতে মোট সংক্রমিত হয়েছেন ৩ কোটি ৬৮ লাখ ৪৯ হাজার ৪৭৪ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ১৩ হাজার ৪০৭ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ৩ কোটি ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১১৩ জন।
দৈনিক মৃত্যুর হিসাবে এরপরই পোল্যান্ডের অবস্থান। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৪২৩ জন। নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৬ হাজার ৪৭ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৮৪১ জনে এবং আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়ালো ৪২ লাখ ৮১ হাজার ৪৮২ জনে।
এসডব্লিউ/এসএস/১৯০৩
আপনার মতামত জানানঃ