ভারতের ত্রিপুরায় পুলিশের বিরুদ্ধে ট্রান্সজেন্ডার কর্মীদের হয়রানি করার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, মারধর করার পাশাপাশি পুলিশ তাদের জামাকাপড় খুলতেও বাধ্য করে।
এতে অভিযোগকারী বলেছেন, আগরতলায় তাদের চারজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তারপর তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশ স্টেশনে। সেখানে জোর করে তাদেরকে নগ্ন করা হয় লিঙ্গগত অবস্থা প্রমাণ দিতে।
তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে, তারা যেন মেয়েদের পোশাক না পরেন এই বিষয়ে তাদের একটি মুচালেকাও লিখিয়েছে পুলিশ। একই সঙ্গে শহরের কোথাও মেয়েদের পোশাক পরে বেরলে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনার সময় একজন চিত্র সাংবাদিকও পুলিশের সঙ্গে ছিলেন।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদন বলা হয়, শনিবার রাতে একটি হোটেলে পার্টি থেকে চারজন বেরিয়ে আসার পরে এই ঘটনা ঘটে। ওই চিত্র সাংবাদিক হোটেলে তাদের সঙ্গে নাচতে চেয়েছিলেন। এমনকি তাদের স্পর্শ করারও চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা রাজি হননি। এর পরে চিত্র সাংবাদিক হোটেল থেকে চারজনকে অনুসরণ করেন।
মেলারমাঠ এলাকায় পুলিশ এসে তাদের আটক করে। ওই চারজনের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ এনে তাদের পশ্চিম আগরতলা মহিলা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে উপস্থিত পুরুষ ও মহিলা পুলিশ অফিসাররা তাদের আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এনডিটিভির প্রতিবেদন বলা হয়,শনিবার রাতে একটি পার্টি থেকে ফেরার সময় এ ঘটনা ঘটে। ট্রান্সজেন্ডারকর্মীদের অভিযোগ অনুসারে, পুলিশ চারজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনেছিল এবং পশ্চিম আগরতলা মহিলা থানায় নিয়ে সেখানে উপস্থিত পুরুষ ও মহিলা পুলিশ অফিসারদের সামনেই তাদের লিঙ্গ প্রমাণ করতে হয়েছিল।
থানায় পুলিশ আমাদের জামাকাপড় খুলে আমাদের লিঙ্গ প্রকাশ করতে বলেছিল। সবচেয়ে বিব্রতকর বিষয় ছিল যে পুলিশ আমাদের উইগ এবং ভিতরের পোশাক থানায় রেখে দিয়েছিল।
এক ট্রান্সজেন্ডার কর্মী জানায় , থানায় পুলিশ আমাদের জামাকাপড় খুলে আমাদের লিঙ্গ প্রকাশ করতে বলেছিল। সবচেয়ে বিব্রতকর বিষয় ছিল যে পুলিশ আমাদের উইগ এবং ভিতরের পোশাক থানায় রেখে দিয়েছিল।
তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ ছাড়াই চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয়েছে এবং এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ বলে জানায় ট্রান্সজেন্ডার সদস্যরা।
চারজন এলজিবিটি সম্প্রদায়ের সদস্য দাবি করেছেন যে সুপ্রিম কোর্টে আইনের ৩৭৭ ধারা অনুযায়ী তাদের গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য ভারতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ট্রান্সজেন্ডারদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসাবে ঘোষণা করেছিল এবং নিশ্চিত করা হয়েছিল যে সংবিধানের অধীনে প্রদত্ত মৌলিক অধিকারগুলি তাদের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। তাদের পুরুষ, মহিলা বা তৃতীয় হিসাবে তাদের লিঙ্গের আত্ম-পরিচয় করার অধিকার দিয়েছে।
এ ঘটনায় পশ্চিম আগরতলা থানার কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ত্রিপুরা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘটনার বিষয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে এবং দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে।
এ ঘটনার বিষয়ে অ্যাডভোকেট নিলাঞ্জনা রায় জানায়, ক্রস ড্রেস কখনও অপরাধ হতে পারে না। ন্যায় বিচার পেতে আদালতে লড়াই করবেন বলেও জানান তিনি।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৯৩৩
আপনার মতামত জানানঃ