বাংলাদেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় সরকারি একটি কার্যালয়ের চুরি ঠেকাতে এলাকাবাসীকে মহাভোগান্তির মধ্যে ফেলা হয়েছে। চলফেরায় সীমাবদ্ধতা আরোপ করায় বন্দিদশায় পড়ার অনুভূতি হচ্ছে সেখানকার প্রায় ২০ হাজার মানুষের। সরাইল উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটে। আর এই চুরি ঠেকাতে পরিষদের কর্মকর্তারা সাধারণ মানুষের গতিবিধিতে ব্যাঘাত ঘটিয়েছেন। এটা নাগরিকের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতা হিসেবে চিহ্নিত করে আন্দোলনে নেমেছে এলাকাবাসী।
জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন রাস্তাঘাট অধিকাংশই সংশ্লিষ্ট পাঁচটি গ্রামের সাধারণ মানুষের নিয়মিত চলাচলের পথ। উপজেলা পরিষদের উদ্যোগের প্রেক্ষিতে এসব সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। সাধারণ মানুষের ভোগান্তির বিষয়টি তারা একটুও আমলে নেয়নি। চুরি ঠেকাতে না পারাটা প্রশাসনের ব্যর্থতা। কিন্ত তারা সেই ব্যর্থতার দায়ভার চাপিয়ে দিয়েছে সাধারণ মানুষের কাঁধে। এটা মেনে নেয়া যায় না, বলছেন এলাকাবাসী।
সড়ক খুলে দেওয়ার দাবিতে ২৯ নভেম্বর ২০২০ রবিবার ওই পাঁচ গ্রামের কয়েক শ মানুষ বিক্ষোভ করেছে। এ সময় তারা উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রবেশ করতে চাইলে র্যাব ও পুলিশ বাধা দেয়। পরে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে একটি স্মারকলিপিও দেয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে তারা ওই সড়ক ব্যবহার করে এলেও কোনো কারণ ছাড়াই কয়েক দিন আগে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে অনেকটা পথ ঘুরে তাদের সদরে আসতে হচ্ছে। এ কারণে উপজেলার দক্ষিণ আরিফাইল, নতুন হাবেলি, স্বল্পনোয়াগাঁও, টি ঘর ও পানিশ্বর উত্তর গ্রামের ২০ হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা প্রিয়াঙ্কা জানান, গ্রামবাসীর চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তা রয়েছে। সরকারি অফিসে চুরি বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তার স্বার্থে রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, উপজেলা পরিষদের ওপর দিয়ে জনচলাচলের রাস্তা থাকতে পারে না।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিক উদ্দিন ঠাকুর বলেন, ‘১০ বছর আগে উপজেলা পরিষদের এক সভায় রাস্তাটি বন্ধের প্রস্তাব আনা হয়। সম্প্রতি সরকারি অফিসে চুরি বেড়ে যাওয়ায় রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। গ্রামবাসীর চলাচলের একাধিক রাস্তা থাকায় এতে ক্ষুব্ধ হওয়ার কোনো কারণ দেখছি না।’
আন্দোলনকারী কলেজছাত্র ইসরাফিল আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ ও থানাসহ সরকারি কর্মকর্তাদের আচরণ একেবারে মালিকের মতো। তারা যখন খুশি নির্দেশ দেয়। মানুষ যদি বলে সমস্যা হচ্ছে, মানতে চায় না। অনুরোধ করলেও কাজ হয় না, বলে কিছু করার নেই। রাস্তা জনগণের চলাচলের সুবিধার জন্য। যে পথে চলাচলে সুবিধা, সেটা বন্ধ করা যাবে না। পুলিশ আর জেল পরিষদ স্বৈরাচারের মতো আচরণ করছে।’
এসডাব্লিউ/আরা/১৪২০
আপনার মতামত জানানঃ