যদিও হামলা চালানো হলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে ইরান। আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েল এমন এক সময় এই হুমকি দিচ্ছে যখন-ইরানের সঙ্গে তাদের চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
যদিও হামলা চালানো হলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে ইরান। আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েল এমন এক সময় এই হুমকি দিচ্ছে যখন-ইরানের সঙ্গে তাদের চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গ্যান্টজকে স্থানীয় এক গণমাধ্যম প্রশ্ন করেন, ইরানে হামলার জন্য ইসরায়েল প্রস্তুত কি না? জবাবে মন্ত্রী বলেন, হ্যাঁ প্রস্তুত। ইসরায়েল একাধিক ফ্রন্টে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত; যেখানে ইরানকে সংশ্লিষ্ট করা হবে। এ সময় ইরানকে ‘বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক সমস্য’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।
ইসরায়েলের এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে একাধিক ফ্রন্টে যুদ্ধ করার তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার আরব উপসাগরের ওমান উপকূলে ইসরায়েলের একটি ব্যবসায়িক জাহাজে ড্রোন হামলা হয়। এতে জাহাজটির দুইজন ক্রু নিহত হন। তাদের একজন ব্রিটিশ নাগরিক ও অন্যজন রোমানিয়ার।
ঘটনার পর থেকে চিরশত্রু ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব ধারণা করছে, ইরান অত্যাধুনিক ড্রোন ব্যবহার করে এই হামলা করেছে।
ওমান উপসাগরে ট্যাংকারে ইরানের ড্রোন হামলার অকাট্য প্রমাণ ইসরায়েলের হাতে আছে বলে দাবি করা হয়। যদিও দেশটি কোনো প্রমাণ হাজির করেনি। যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যও ইসরায়েলি ট্যাংকারে হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কট্টরপন্থী ইব্রাহিম রাইসি বড় চিন্তার কারণ ইসরায়েলের। গান্তজ মনে করেন, এতে ইরান আঞ্চলিক ও নিরাপত্তা নীতিতে আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠতে পারে। তার কথায়, আমি বিশ্বকে বলছি, মনোযোগ দিন। হুমকি আসছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ইসরায়েলের জন্য ইরান বহুমাত্রিক হুমকি। তারা লেবানন ও গাজা এবং সিরিয়া ও ইরাকে উপস্থিতি বাড়াচ্ছে। ইয়েমেনে সমর্থন অব্যাহত রেখেছে।
তবে ইরান এই অভিযোগ সম্পূর্ন অস্বীকার করে বলছে, তাদের ফাঁসাতে ইসরায়েল হামলার নাটক সাজিয়েছে। ইসরায়েলের হুমকির জবাবে প্রতিরক্ষানীতিতে শত্রুদের যেকোনো হঠকারী পদক্ষেপের ‘তাৎক্ষণিক, গুরুতর ও শক্তিশালী জবাব’ দেওয়া হবে বলে হুশিয়ার করেছেন ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী-বা আইআরজিসির প্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি।
সম্প্রতি পারস্য উপসাগরের হরমুজ প্রণালিতে মোতায়েন আইআরজিসির নৌসেনাদের যুদ্ধ প্রস্তুতি পরিদর্শনের পর এ সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন তিনি।
ইসরায়েলের প্রতি ইঙ্গিত করে জেনারেল হোসেইন সালামি বলেন, ইরানকে হুমকি দিয়ে যারা কথা বলছে বিশেষ করে দখলদার ইসরায়েলের জেনে রাখা উচিত যেকোনো স্থানে যেকোনো মাত্রার হামলার দাঁতভাঙা জবাব দিতে তেহরান প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইরানের স্বার্থে আঘাত হানা হবে অথচ তেহরান তার জবাব দেবে না, এমন দিনের অবসান হয়েছে। ইরানের শত্রুরা যেন আর কোনোদিন সেই দিনগুলো ফিরে আসার স্বপ্নে বিভোর না হয়।
প্রসঙ্গত, ইরানের পরামাণবিক কর্মসূচি ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের কারণ। তেহরান সব সময় পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদনের কথা অস্বীকার করে আসছে। তবু ইসরায়েলের ধারণা, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জনের পথে রয়েছে এবং পারমাণবিক ওয়্যারহেড বহনে সক্ষম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৩২৫
আপনার মতামত জানানঃ