আমরা মানুষ হিসেবে অনেক বেশি পিছিয়ে যাচ্ছি। যেই বাক স্বাধীনতার জন্য আমাদের লড়তে হয়েছিলো, সেই বাক স্বাধীনতাই আবার হুমকির মুখে পড়েছে দেশের তথাকথিত বোদ্ধাদের কল্যাণে। যারা সরকারী চাকরি করবেন তারা রাষ্ট্র বা সরকারের দোষ দেখে চোখ বন্ধ করে না থাকলে, তাদের জন্য যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা আছে। এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
কমিটির সদস্য এবং তাদের দায়িত্ব
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারঘোষিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা বাস্তবায়ন করছেন কি না, তা পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন অধিশাখা) মো. হাছানাত হুমায়ুন কবীরকে সভাপতি করে গতকাল রোববার এ কমিটি গঠন করা হয়।
গতকাল (৪ জুলাই) কমিটি গঠন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯ (পরিমার্জিত সংস্করণ) অনুসরণ করার জন্য গত বছরের ৭ মে পরিপত্র জারি করা হয়েছিল। সেটি ঠিকমত বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তা এই কমিটি পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করবে। কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারী এ নির্দেশিকা অমান্য করলে, তা পর্যালোচনা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবে এ কমিটি।
পাঁচ সদস্যের কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বিধি-৪ শাখা) কাজী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, উপসচিব (অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ-৩ শাখা) এ এস এম মুস্তাফিজুর রহমান, উপসচিব (সিপি-১ শাখা) খালিদ মেহেদী হাসান। কমিটির সদস্যসচিব করা হয়েছে সিনিয়র সহকারী সচিব (পরিবহন শাখা) মো. আব্দুস সালাম চৌধুরীকে।
যা যা করা যাবে না
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, এমন কোনো পোস্ট, মন্তব্য, ছবি ও ভিডিও আপলোড করা থেকে বিরত থাকাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছিল ওই পরিপত্রে। পরিপত্রে বলা হয়েছিল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার বা নিজ অ্যাকাউন্টের ক্ষতিকারক বিষয়বস্তুর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মচারী ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হবেন এবং এ জন্য প্রচলিত আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে বলা হয়েছে, জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থী কোনো রকম তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে, এমন বা ধর্মনিরপেক্ষতা নীতির পরিপন্থী কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা যাবে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট বা আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে, এরূপ কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক ও শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। লিঙ্গবৈষম্য বা এ-সংক্রান্ত বিতর্কমূলক কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা যাবে না। জনমনে অসন্তোষ বা অপ্রীতিকর মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোনো বিষয় লেখা, অডিও বা ভিডিও ইত্যাদি প্রকাশ বা শেয়ার করা যাবে না। ভিত্তিহীন, অসত্য ও অশ্লীল তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া অন্য কোনো রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্যসংবলিত পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক ও শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
পরিপত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিষয়বস্তু ও বন্ধু নির্বাচনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সতর্কতা অবলম্বন এবং অপ্রয়োজনীয় ট্যাগ, রেফারেন্স বা শেয়ার করা পরিহার করতে বলা হয়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/ওজেএ/২০১১
আপনার মতামত জানানঃ