আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গত সপ্তাহে রাজধানী ভিয়েনায় একটি মারাত্মক উগ্রবাদি সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে অস্ট্রিয়া সরকার সন্ত্রাসবিরোধী বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে।
প্রস্তাবগুলিতে ” জঙ্গিবাদি সন্ত্রাস” অপরাধের জন্য দণ্ডিত ব্যক্তিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আওতায় রাখার ক্ষমতা, মুক্তি পাওয়ার পরে সন্ত্রাস-সম্পর্কিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের বৈদ্যুতিক নজরদারি করা এবং ধর্মীয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও রাজনৈতিকভাবে চরম কর্মকাণ্ডের অপরাধীকরণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। চ্যান্সেলর সেবাস্তিয়ান কুর্জ বুধবার বলেছেন, সরকার “র্যাডিকালাইজেশনে” ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করা সমিতি বা মসজিদ বন্ধ করার প্রক্রিয়াও সহজ করার এবং জনসাধারণকে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সম্ভাব্য সহিংস কর্মকাণ্ডের প্রতিবেদন করতে সক্ষম করার পরিকল্পনা করেছে। মসজিদের ইমামদের একটি কেন্দ্রীয় নিবন্ধন ও ডাটাবেইজ তৈরি করা হবে।
“রাজনৈতিক ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াই – এর পিছনে আদর্শিক ভিত্তি – যারা সন্ত্রাসবাদী নয় তবে এর জন্য ভিত্তি প্রস্তুত করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা ‘রাজনৈতিক ইসলাম’ নামে একটি ফৌজদারি আইন তৈরি করতে যাচ্ছি।” তিনি মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আগামী ডিসেম্বরে আইনটি অনুমোদনের জন্য সংসদে উপস্থাপন করা হবে। কুর্জ বলেছেন, “জনগণকে রক্ষার জন্য আমরা এই এই আইনের বাস্তবায় করব।”
কুর্জ আরো বলেন- কিছু ক্ষেত্রে, যাদের সবে মুক্তি পেয়েছে তাদের একটি বৈদ্যুতিক গোড়ালি ব্রেসলেট বা একটি কব্জিবন্ধ দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হবে। এই নির্দিষ্ট পদ্ধতিটি কখন থেকে ব্যবহৃত হবে বা কখন প্রতিরোধমূলক আটক প্রয়োগ করা হবে সেটি স্পষ্ট করে বলেননি।
গত সপ্তাহের সন্ত্রাসী ঘটনায় অস্ট্রিয়া কর্তৃপক্ষ সন্দেহভাজন ২০ বছর বয়সী কুজতিম ফেজুলাই’কে মূল হোতা হিসাবে চিহ্নিত করেছে। কুজতিম অস্ট্রিয়া এবং উত্তর ম্যাসেডোনিয়ার দ্বৈত নাগরিক, যে সিরিয়ায় আইএসআইএস (ISIS)-এ যোগদানের চেষ্টা করার অপরাধে আটক ছিলেন এবং ২০১৯ এর ডিসেম্বর মাসে তাকে প্রাথমিক মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
জুলাইয়ে ব্র্যাটিস্লাভাতে একটি দোকানে গোলাবারুদ কেনার চেষ্টা করেছিলেন বলে স্লোভাকিয়ান কর্তৃপক্ষের অবহিত করা সত্ত্বেও অস্ট্রিয়ার গোয়েন্দাদের কেন পর্যবেক্ষণে ছিল না সেটার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
তদন্ত, গ্রেপ্তার চলছে
সোমবার, প্রায় ১,০০০ পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা মুসলিম ব্রাদারহুড এবং হামাসের সাথে জড়িত বাসা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সমিতিগুলিতে অভিযান চালিয়ে চারটি প্রদেশ থেকে কয়েক লক্ষ ইউরো নগদ জব্দ করেছে। অবশ্য প্রসিকিউটররা জোর দিয়ে বলছেন এই অভিযানগুলি গত সপ্তাহের হামলার সাথে সর্ম্পকযুক্ত না, এটি ছিল গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তদন্তের ফলাফল।
ভিয়েনায় এই হামলা ফ্রান্সের নাইস শহরে একটি হামলার পরে ঘটেছিল, যেখানে চারজন নিহত হয়েছিল। বেশ কয়েকটি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্রান্সও মসজিদ বন্ধ করতে শুরু করেছে এবং ফ্রান্স কর্তৃপক্ষ যে সংস্থাগুলিকে সন্দেহ করছে যে তারা ধর্মের নামে ঘৃণা ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
Available for everyone, funded by readers. Every contribution, however big or small, makes a real difference for our future. Support to State Watch a little amount. Thank you.
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ