পাকিস্তানের জিও নিউজ টেলিভিশনের অন্যতম প্রচারে শীর্ষ অনুষ্ঠান ‘ক্যাপিটাল টক’, যার সঞ্চালক বিশ্বখ্যাত সাংবাদিক হামিদ মীর। তবে দেশটির সেনাবাহিনীর সমালোচনা করায় গত সোমবার তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া তার স্ত্রী ও কন্যাকে হুমকি দেয়ার অভিযোগও জানিয়েছেন তিনি।
হামিদ মীর বিবিসিকে জানান, কোনো কারণ না জানিয়েই সোমবার তাকে অনুষ্ঠান করতে নিষেধ করা হয়, বলা হয় সাময়িকভাবে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে ৷ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জিও নিউজের নামহীন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যে, চ্যানেলটিকে সামরিক বাহিনীর হয়ে কাজ করার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল৷
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, হামিদ মীরকে বরখাস্তের জন্য জিও নিউজকে চাপ দেয়া হচ্ছিল।
এর আগে গত সপ্তাহে সাংবাদিক আসাদ আলী তুরকে ইসলামাবাদে তার বাসভবনে অজ্ঞাত তিন ব্যক্তি এসে মারধর করে এবং তার কাজের জন্য সতর্কতা জানায়। আসাদ আলী তুর দেশটির সরকার ও সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক প্রতিবেদনের জন্য পরিচিত ছিলেন।
শুক্রবার হামলার প্রতিবাদে ইসলামাবাদে এক বিক্ষোভ সমাবেশে হামিদ মীর হামলার পেছনে থাকা দায়ী ব্যক্তিদের পরিচয় প্রকাশ করার হুমকি দেন। হামলার জন্য পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ও সেনা প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়াকে ইঙ্গিত করেন তিনি।
হামিদ মীর বলেন, যদি আমাদের ঘরে ঢুকে আপনি হামলা করতে চান, ভালো। আমরা আপনার ঘরে ঢুকে হামলা করতে পারবো না কেননা আপনার বন্দুক-ট্যাঙ্ক রয়েছে। কিন্তু আপনার ঘরের ভেতরের অবস্থা আমরা প্রকাশ করে দেবো।
বুধবার আসাদ আলী তুরের ওপর হামলার পর তিনি পুলিশের কাছে জানান, হামলাকারীদের একজন নিজেকে দেশটির প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টিলিজেন্সের (আইএসআই) সাথে সংশ্লিষ্ট বলে পরিচয় দিয়েছে। তবে শনিবার সরকারের পক্ষ থেকে এই অভিযোগকে ‘সুপরিকল্পিত চক্রান্ত’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
পাকিস্তানের ৭৪ বছরের ইতিহাসের প্রায় অর্ধেক সময়জুড়েই দেশটিতে সামরিক শাসন ছিল। সমালোচকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকারের ওপরও বিভিন্ন বিষয়ে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর প্রভাব বিস্তার করে আসছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল হামিদ মীরের বরখাস্তের নিন্দা জানিয়েছে৷ কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের স্টিভেন বাটলার পাকিস্তানে সংবাদমাধ্যমের প্রকৃত স্বাধীনতার অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেন ৷ পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন মীরের বরখাস্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে যে তাকে এখনই কাজে পুনর্বহাল করে তার বিরুদ্ধে হুমকির তদন্ত করা উচিত ৷
বরখাস্তের পরে হামিদ মীর এক টুইটে লিখেছেন, আগে আমি দু’বার চাকরি হারিয়েছি ৷ হত্যার চেষ্টা হাত থেকে বেঁচে গিয়েছি৷ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে সামরিক বাহিনীর সমালোচনা করার পরে ২০১৪ সালে এক বন্দুক হামলায় হামিদ মীর গুরুতর আহত হয়েছিলেন৷
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৯৫৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ