মার্কিন প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসে শুক্রবার (১৪ মে) প্রকাশিত নিবন্ধে ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যের ইহুদি ধর্মাবলম্বী ও বামপন্থী সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রতিবেদনে ফিলিস্তিনিদের অধিকার নিয়ে কথা বলেন। যুদ্ধের বিভৎসতার বাইরেও যে তাদের স্বাভাবিক জীবনের অধিকার আছে, সে কথা বলেন।
প্রতিবেদনের তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষা করার অধিকার আছে’-এই শব্দগুলো আমরা ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান উভয় প্রশাসনের কাছ থেকেই শুনি যখন ইসরায়েলের সরকার তাদের প্রকাণ্ড সামরিক শক্তি নিয়ে গাজার রকেট হামলার জবাব দেয়। কেউ এটা নিয়ে তর্ক করছে না যে ইসরায়েল, অথবা যে কোনো দেশের সরকারের নিজেকে রক্ষা করার অথবা তার জনগণকে সুরক্ষা দেয়ার অধিকার রয়েছে।
কিন্তু এই প্রশ্নটি প্রায় কখনোই করা হয়না যে ‘ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারগুলো কী?’ এবং কেন শুধু ইসরায়েলের ওপর রকেট পড়ার সময়েই আমরা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সহিংসতার বিষয়টিতে নজর দেই?
তিনি বলেন, এটাও আমাদের বোধগম্য যে, হামাস ইসরায়েলি সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে যে রকেট ছুড়ছে তা অগ্রহণযোগ্য। তবে আজকের সংঘর্ষ এসব রকেটের কারণে শুরু হয়নি। আর এই সঙ্কটের মুহূর্তে, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানানো।
নতুন প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের এখন বিশ্বের প্রতি নতুন এক পন্থা গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে। যার ভিত্তি হবে ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্র। হতে পারে এটা দরিদ্র দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন দিয়ে সহায়তা করছে বা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে অথবা বিশ্ব জুড়ে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে। সংঘর্ষ নয়, বরং সহযোগিতার প্রচারণার মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দিতে হবে।
তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে, যেখানে আমরা ইসরায়েলকে প্রতি বছর প্রায় ৪০০ কোটি ডলার সাহায্য দেই, সেখানে নেতানিয়াহুর ডানপন্থী সরকার এবং তার অগণতান্ত্রিক ও বর্ণবাদী আচরণকে আমরা আর সমর্থন দিয়ে যেতে পারি না। অবশ্যই পরিবর্তন আনতে হবে এবং একটি নিরপেক্ষ পন্থা ধারণ করতে হবে, যা নাগরিক সুরক্ষার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক আইনের পাশাপাশি ‘যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সাহায্যের আইন অবশ্যই মানবাধিকার লঙ্ঘনে সক্ষম হবে না’- এই বিষয়টিকে সমর্থন ও শক্তিশালী করবে।
এই পন্থায় অবশ্যই স্বীকৃতি দিতে হবে যে ইসরায়েলের শান্তিতে ও নিরাপদভাবে থাকার অধিকার রয়েছে, কিন্তু এই অধিকার রয়েছে ফিলিস্তিনিদেরও। আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি, ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনের জন্য সেই ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র যদি মানবাধিকার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক মঞ্চে একটি বিশ্বাসযোগ্য কণ্ঠস্বর হতে চায়, তাহলে আমাদের অবশ্যই মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক মানগুলো নিয়মিতভাবে ধরে রাখতে হবে, এমনকি যখন তা রাজনৈতিকভাবে কঠিন হবে তখনও। আমাদের অবশ্যই স্বীকৃতি দিতে হবে যে ফিলিস্তিনিদের অধিকার গুরুত্বপূর্ণ, ফিলিস্তিনিদের জীবন গুরুত্বপূর্ণ।
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ