করোনা মহামারীর প্রভাবে দেশে ৩ শতাংশের বেশি শ্রমিক চাকরি বা কাজ হারিয়েছে। এতে প্রায় দেড় কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৭ এপ্রিল) সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) যৌথ গবেষণায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়, দেশে দারিদ্র্য ক্রমেই বাড়ছে, ২০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৩ শতাংশ হয়েছে। করোনা মহামারীর প্রভাবে এ তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে ১ কোটি ৬৪ লাখের বেশি মানুষ।
এ প্রসঙ্গে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘করোনায় দেশের প্রত্যেকটি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধাক্কা সামলাতে না পেরে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকে টিকে থাকার জন্য শ্রমিক ছাঁটাইসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। কমে গেছে সাধারণ মানুষের আয়। সব মিলে দেশে নতুন করে দেড় কোটি মানুষ দরিদ্র হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনাকালে ৩ শতাংশ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছে। শহরাঞ্চলে ইনফরমাল ইকোনমি থেকে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ মানুষ কর্ম হারিয়েছে। আর উচ্চপর্যায়ে ১ কোটি ১১ লাখ থেকে ২ কোটি ৫ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাকরি হারিয়েছে এসএমই ও ইনফরমাল সেক্টরে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ কর্মহীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
বিশ্ব ব্যাংকের সূত্র উদ্ধৃত করে গবেষণায় বলা হয়, করোনায় সাধারণ মানুষের আয় কমেছে ৩৭ শতাংশ। এর মধ্যে ঢাকায় ৪২ ও চট্টগ্রামে ৩৩ শতাংশ। আর বেতননির্ভর মানুষের আয় কমেছে ৪৯ শতাংশ।
এতে আরও বলা হয়, করোনায় সবচেয়ে ঝুঁকিতে দেশীয় শিল্প, নির্মাণ, পরিবহন, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ের ব্যবসা, খাদ্য ও ব্যক্তিগত সেবা। মধ্যম পর্যায়ের ঝুঁকিতে আর্থিক খাত, অভ্যন্তরীণ পরিষেবা, আবাসন ও শিক্ষা খাত। আর কম ঝুঁকিতে রয়েছে কৃষি, স্বাস্থ্য, তথ্য ও যোগাযোগ খাত। ফলে শহরাঞ্চলের ৬৯ শতাংশ কর্মজীবী ঝুঁকিতে রয়েছে।
চাকরি হারানোদের মধ্যে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ শহরাঞ্চলে অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মে নিয়োজিত ছিলেন। ২০২১ সাল শেষ হতে এখনও প্রায় আট মাস বাকি। এ সময়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ কর্মহীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে করোনার প্রথম ঢেউয়ে ২০২০ সালের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাসে চার লাখ অভিবাসী শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সিপিডি।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৪০৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ