ছেলে শিশু ধর্ষণ যেন দিন দিন সংস্কৃতি হয়ে উঠেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে। আগে কেবল মাদ্রাসার বিরুদ্ধেই ছিলো এই অভিযোগ। এখন একই ঘটনা শুরু হয়েছে স্কুলেও।
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে এক মাদ্রাসার ছাত্র ধর্ষণ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই সামনে এসে হাজির হলো ময়মনসিংহের গৌরীপুরে স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো. শফিকুল ইসলাম হলুদ (৩৭), সে উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের কুলিয়ারচর গ্রামের মো. আলী হোসেনের পুত্র এবং স্থানীয় একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজির শিক্ষক।
ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে গৌরীপুর থানায় মামলা করেছেন নির্যাতিত শিক্ষার্থীর বাবা। এবিষয়ে গৌরীপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আওলাদ হোসেন স্টেটওয়াচকে বলেন, ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রের বাবা ওই শিক্ষককে আসামি করে মামলা করলে শুক্রবার রাতে তাকে পৌর শহরের সরকারপাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শফিকুল ইসলাম ইংরেজি বিভাগে শিক্ষকতার সুযোগে তার বাড়িতে গিয়ে ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়ত। গত ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর বিকেলে এক শিক্ষার্থী তার বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে গেলে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দিয়ে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেন স্কুল শিক্ষক। এরপর থেকে ওই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সময় ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেন শিক্ষক শফিকুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগ।
ছেলে শিশু ধর্ষণের খবর এখন প্রায় প্রতিদিনই হাজির হয় গণমাধ্যমগুলোতে। মাদ্রাসার পাশাপাশি এই অভিযোগ ইদানিং মন্দিরের পুরোহিত, সেবাওয়াত ও স্কুলের শিক্ষেকের বিরুদ্ধেও আসছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কাউকে তেমন মুখ খুলতে দেখা যায় না। যে হারে ধর্ষণের সংবাদ আসে সেই হারে বিচারের সংবাদ আসে না। মাদ্রাসায় শিশুধর্ষণ নিয়ে কাজ করে এমন একটি প্রতিষ্ঠান Center for Safety of Madrasa Students – CSMS. তাদের মাসিক প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে স্টেটওয়াচ দেখেছে গত তিন মাসে ২৭টি ধর্ষনের সংবাদ গণমাধ্যমে এসেছে আর তার বিপরীতে আদালতের রায়ের সংবাদ এসেছে মাত্র একটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে Center for Safety of Madrasa Students – CSMS – এর একজন স্বেচ্ছাসেবক জানান, ‘আসলে আইনেই ঝামেলা রয়েছে। সুবিচার নিশ্চিৎ করতে হলে আগে আইন সংশোধন করতে হবে আর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
কিন্তু বিশেষজ্ঞমহলে অভিমত, শুধুমাত্র আইনের পরিবর্তন করে ধর্ষণ রোধ করা সম্ভব না। বাস্তবতার নিরিখে আইনের সঠিক প্রয়োগ ও বিচারে দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার করা না গেলে ধর্ষণ কমানো সম্ভব না।
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ