দেশে নারীর যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের চেয়ে বেশি পরিমাণে ঘটছে শিশু ধর্ষণ ও হত্যা। প্রায় প্রতিদিনই শিশু ধর্ষণের খবর আসে।
চট্টগ্রামের রাউজানে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রকে ধর্ষণের পাশাপাশি কামড়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগে জালাল আহম্মদ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩১ আগস্ট) ভোরে উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পাঁচখাইন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারের পর জালাল দাবি করেছেন, শয়তানের ধোঁকায় পড়ে এমন কাজ করেছেন তিনি। তাতে তার কী করার আছে!
গ্রেপ্তার জালাল আহম্মদ (৬০) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ সুন্নিয়াপাড়া এলাকার মৃত এজাহার মিয়ার পুত্র।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ক্লাস শেষে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ভিকটিম ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রকে মোবাইল ও টাকার লোভ দেখিয়ে পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে নিয়ে যান জালাল। সেখানে তাকে ধর্ষণের পাশাপাশি কামড়ে রক্তাক্ত করেন তিনি। শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি এসে তার মাকে বিস্তারিত খুলে বলেন। পরে তার মা জালালকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন।
মামলার পরপরই পুলিশ গ্রেপ্তার অভিযানে নামে। এদিকে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সটকে পড়েন জালাল। রাতভর বিভিন্ন পয়েন্টে চিরুনি অভিযানের পর বুধবার ভোরে রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পাঁচখাইন এলাকার এক মাজার প্রাঙ্গণ থেকে তাকে আটক করা হয়েছে।
জানা গেছে, গ্রেপ্তার জালাল একজন দুশ্চরিত্র লোক হিসেবে এলাকায় পরিচিত। এর আগেও তাকে একই অপরাধে গণধোলাই দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিজের স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও জালালের বিরুদ্ধে একের পর এক শিশু ধর্ষণের অভিযোগ থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, তিনি সম্ভবত বিকৃত যৌনাচারে অভ্যস্ত। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও আরও তথ্য উদঘাটনের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, গ্রেপ্তার জালাল আহম্মদকে একজন অভ্যাসগত শিশু বলাৎকারকারী হিসেবে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। ২০১৫ সালেও শিশু ধর্ষণের ঘটনায় কয়েক মাস জেল খাটেন তিনি।
এদিকে দেশের মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষার্থীদের ওপর যৌন নির্যাতনের খবরে শিউরে উঠছে সারা দেশ। যদিও মাদ্রাসাগুলোতে ক্রমবর্ধমান এই ধর্ষণ নিয়ে মাথাব্যথা নেই সরকারের। দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলোও সরব নয়। নেই বার্ষিক কোন প্রতিবেদন। তাই এই সব নির্যাতনের প্রকৃত চিত্র থেকে যাচ্ছে অজানা।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের পর শিক্ষার্থীরা লজ্জা, ভয়, নানান কিছুর কারণে তা প্রকাশ করে না। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে সবথেকে কম কথা বলা হয়। এর কারণ হয়তো সেক্স, অপ্রাপ্তবয়স্ক ভুক্তভোগী এবং ধর্মের মতো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে মানুষের অন্ধবিশ্বাস।
মাদ্রাসা শিক্ষক কর্তৃক একের পর এক শিশু ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা মাদ্রাসা বিষয়ে দেশবাসীর নিকট এক নেতিবাচক মনোভাব তৈরী হয়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৩০০
আপনার মতামত জানানঃ