করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে আট দিন সর্বাত্মক লকডাউনের সময় কড়াকড়ি বিধিনিষেধের মধ্যে যাদের জরুরিভিত্তিতে বাইরে যেতে হবে তাদের জন্য ‘মুভমেন্ট পাস’ চালু করেছে পুলিশ। মুভমেন্ট পাশের আবেদন করতে হবে এই ওয়েবসাইট থেকে। ওয়েবসাইটটি চালুর পর থেকে গত ৩৩ ঘণ্টায় মোট সাত কোটি ৮১ লাখ ভিজিটর মুভমেন্ট পাস ওয়েবসাইটে ঢুকেছে। সে হিসাবে, প্রতি মিনিটে হিট হয়েছে ২১ হাজার ৩৩৭টি। এদের মধ্যে সবাই হয়ত মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদন করেননি। সাইটটি দেখতে বা মুভমেন্ট পাশ কিভাবে নিতে হয় তা জানতে অনেকে ভিজিট করেছেন। যার ফলে শুরু থেকে এই সাইটির ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে হিমসিম খাচ্ছে পুলিশ কর্তৃপক্ষ।
এর আগে মঙ্গলবার বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়াম রাজারবাগে মুভমেন্ট পাস অ্যাপের শুভ উদ্বোধন করেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ। পুলিশ সদরদফতর জানায়, বুধবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ওয়েবসাইটে সাত কোটি ৮১ লাখ হিট হয়েছে। গত ৩৩ ঘণ্টায় তিন লাখ ১০ হাজার জন মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদন করেছেন। এর মধ্যে ২ লাখ ৫০ হাজার জনের নামে মুভমেন্ট পাস ইস্যু করা হয়েছে। তবে শুরু থেকে পাসের জন্য ওয়েবসাইটে ঢুকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। অনেকেই তাদের প্রয়োজনে মুভমেন্ট পাশ নিতে পারেননি বলে সোস্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, ঘোষণানুযায়ী কঠোর লকডাউন কার্যকর করতে সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে তা বাস্তবায়নে তারাও এবার কঠোর পদক্ষেপ নেবে এবং তার আওতায় ‘মুভমেন্ট পাস’ ছাড়া কাউকে বাড়ির বাইরে আসতে দেওয়া হবে না।
সর্বাত্মক লকডাউনে জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে চলাচলের জন্য ১৪টি শ্রেণিতে ‘মুভমেন্ট পাস’ দেবে পুলিশ। এই পাসধারী ব্যক্তি সড়কে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবেন। তবে এই পাস সবাইকে দেওয়া হবে না। শুধু জরুরি সেবার প্রয়োজনে এই পাস দেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়।
মুদি দোকানে কেনাকাটা, কাঁচা বাজার, ওষুধপত্র, চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত, কৃষিকাজ, পণ্য পরিবহন ও সরবরাহ, ত্রাণ বিতরণ, পাইকারি বা খুচরা ক্রয়, পর্যটন, মৃতদেহ সৎকার, ব্যবসা ইত্যাদি ক্যাটাগরিতে দেওয়া হবে এই ‘মুভমেন্ট পাস’। এছাড়া যাদের বাইরে চলাফেরা প্রয়োজন কিন্তু কোনো ক্যাটাগরির সঙ্গে মিল নেই, তাদের অন্যান্য ক্যাটাগরিতে পাস দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করা হবে।
এদিকে মুভমেন্ট পাশ ছাড়া যারা বেরিয়েছে তাদের পুলিশের হাতে হেনেস্তা ও জরিমানার শিকার হতে হয়েছে। এদের মধ্যে জরুরী স্বাস্থ্যসেবার সাথে জড়িত ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা পুলিশের হয়রানী ও জরিমানার শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কিভাবে মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদন করবেন
এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করা যাবে পাসের জন্য। এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে নিজের ফোন নম্বর, জন্ম তারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর ও ছবিসহ বেশ কয়েকটি তথ্য দিতে হবে। কোন থানা থেকে কোন থানা এলাকায় যাবেন সেই তথ্যও দিতে হবে।
সব তথ্য দেওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবেই চলে আসবে ই-পাস। একটি পাসের মেয়াদ থাকবে ৩ ঘণ্টা। লকডাউনে চলাচলের সময় কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের এই পাস দেখাতে হবে।
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ