চট্টগ্রামের সাংবাদিক গোলাম সরোয়ারকে অপহরণ ও নির্যাতন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলে দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, ওই সাংবাদিককে নির্যাতন করে অর্ধমৃত অবস্থায় ফেলে রাখা গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের চলমান প্রক্রিয়ার অংশ। অবিলম্বে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে টিআইবি। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সাংবাদিক গোলাম সরোয়ারের নিখোঁজ হওয়া এবং নির্যাতনের পর আধমরা অবস্থায় তাকে খুঁজে পাওয়া মোটেও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং মুক্ত সাংবাদিকতা তথা স্বাধীন গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধে চলমান হুমকি, ভয়ভীতি ও নির্যাতনের নিষ্ঠুর ধারাবাহিকতা মাত্র। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী উদ্ধারকালে সাংবাদিক গোলাম সরোয়ারের আর্তনাদ ‘ভাই, আমাকে মাইরেন না, আমি আর নিউজ করব না’ন্ড শুধুই নির্যাতনে অপ্রকৃতিস্থ অসহায় ব্যক্তির স্বগোক্তি নয়, বরং সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকের ওপর নির্যাতন এবং সাহসী সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধের ভয়াবহ মধ্যযুগীয় বর্বরতার প্রমাণ।তিনি বলেন, “নিয়মিত সাংবাদিক নির্যাতন এবং গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে হামলান্ডমামলার ঘটনা ঘটলেও, কঠোর আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে যথোপযুক্ত শাস্তির দৃষ্টান্ত অনুপস্থিত। যা নিয়ে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছি। এন্ডকথা বলা অত্যুক্তি হবে না যে, মুক্ত গণমাধ্যম ও স্বাধীন সাংবাদিকতা বিষয়ে সরকারের বারংবার উচ্চারিত কথামালা শুধুই ‘রাজনৈতিক আনুষ্ঠানিকতা’ মাত্র!” স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনীতি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের জেরে সরোয়ারকে অপহরণ ও নির্যাতন করা হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছে টিআইবি। বিষয়টি উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের আরও বেশ কিছু ঘটনার উদাহরণ আছে, যার কোনো সুষ্ঠু তদন্ত কিংবা বিচারের দৃষ্টান্ত আমরা দেখতে পাই না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মুক্ত সাংবাদিকতা এবং সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা বিষয়ে একাধিকবার তার অঙ্গীকার ও সদিচ্ছার কথা বলেছেন! এসব ঘটনার পৌনঃপুনিকতা প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের শুধু অবমাননাই করছে না, বরং মুক্ত সাংবাদিকতার সাংবিধানিক অঙ্গীকারকে ধারাবাহিকভাবে পদদলিত করছে।
আপনার মতামত জানানঃ