সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের স্টোরিতে রিভলবার দিয়ে গুলি চালানোর ভিডিও শেয়ার করা এবং ভিডিওর ক্যাপশনে ‘ফাস্ট টাইম মেশিন চালাইলাম’ লেখা কিশোরকে মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) ভোর রাতে গ্রেফতার করেছে ফতুল্লা থানা পুলিশ। ফতুল্লার দাপা বেপারীপাড়াস্থ তার নিকটাত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত কিশোরের নাম ফারহান আহম্মেদ রাহুল ওরফে তানভীর (১৭)।
ফতুল্লা পোস্ট অফিস বাস্ট স্ট্যান্ড মাজার সংলগ্ন চায়ের দোকানদার নজরুলের ছেলে তানভীর ২২ মার্চ ভোরে একটি ভিডিও আপলোড করে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, অত্যাধুনিক পিস্তলে ম্যাগজিন ঢুকিয়ে অস্ত্রটি লোড করেন। এরপর পরপর দুটি ফাঁকা গুলি ছোড়েন এক কিশোর। ভিডিওটি আপলোডের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, যিনি গুলি ছুঁড়ছিলেন তার পাশে দাঁড়িয়ে ভিডিওটি করছিলেন অন্য কেউ। তবে কারো মুখোচ্ছবি ভিডিও করা হয়নি। কিন্তু ফেসবুক প্রোফাইলের ছবিতে পরিহিত বেগুনি রঙয়ের পাঞ্জাবির সাথে গুলি করার সময় ব্যবহৃত হাতের বেগুনি রঙয়ের পাঞ্জাবির হাতার মিল রয়েছে।
ফেসবুক বায়োতে দেখা যায়, গ্রেফতারকৃত কিশোর ফতুল্লা পাইলট স্কুলের সাবেক ছাত্র ও বর্তমানে শহরের নারায়ণগঞ্জ কলেজে অধ্যয়নরত। তবে এটি তার প্রকৃত নাম-পরিচয় কিনা তা জানতে পুলিশ মাঠে নামলে রাতেই তারা নিশ্চিত হয় ভিডিও আপলোড করা সেই কিশোরের প্রকৃত পরিচয়।
ফেসবুক আইডিতে তার নাম ফারহান আহম্মেদ রাহুল লেখা থাকলেও স্থানীয় মহল সহ তার স্বজনদের কাছে সে তানভির নামে পরিচিত। পুলিশ প্রকৃত পরিচয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তাকে গ্রেফতার করতে মাঠে নামলে স্থানীয় সোর্স ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অবস্থান নিশ্চিত হয়ে দাপা ইদ্রাকপুরের বেপাড়ীপারাস্থ তার নানীর বাড়ির সূত্রে এক আত্নীয়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ভোর রাতের দিকে তাকে আটক করা হয়।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গুলি ছুঁড়ছে ভিডিও দেখে আমরা অভিযান শুরু করি। ফেসবুক আইডি থেকে নাম সংগ্রহ করে খোঁজ খবর নিয়ে ভিডিও আপলোডকারী তানভীর হায়দার রাহুল নামে যুবককে আটক করি।’
‘তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, ইউটিউব থেকে ভিডিওটি ডাউনলোড করে ফেসবুকে নিজের আইডির ডে স্টোরিতে আপলোড করে। তবে সে কোন গুলি ছোঁড়েনি। যা কিনা সে আবার ডিলিট করে দেয়,’ যোগ করেন তিনি।
ওসি বলেন, ‘গুলি চালানোর ভিডিও দিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণাত্মক ভীতি প্রদর্শন করায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার উপক্রম হয়। তাই পুলিশের এসআই শাহাদাৎ হোসেন বাদি হয়ে তানভীরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি মিডিয়া ওয়াচডগ বডি আর্টিকেল ১৯-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১৯৮টি মামলায় ৪৫৭ জনকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে ও গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ৪৫৭ জনের মধ্যে ৭৫ জন সাংবাদিক। তাদের মধ্যে ৩২ জনকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/২১২০
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ