কিস্টোন এক্সএল পাইপলাইনের অনুমতি বাতিল করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোবাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসসহ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার(১৭ মার্চ) কেন প্যাক্সটন ও মন্টানার অ্যাটর্নি জেনারেল অস্টিন নুডসেন টেক্সাসের ফেডারেল জেলা আদালতে এই মামলা দায়ের করেন।খবর রয়টার্সের।
কিস্টোন এক্সএল পাইপলাইনের অনুমতি বাতিল করায় এ মামলা করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানান টেক্সাসের অ্যাটর্নি জেনারেল কেন প্যাক্সটন।
বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো— কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার এই বিতর্কিত পাইপলাইন নির্মাণ বন্ধের সিদ্ধান্ত।
কানাডার আলবার্টা থেকে কিস্টোন এক্সএল পাইপলাইনের মাধ্যমে দৈনিক আট লাখ ৩০ হাজার অপরিশোধিত তেল পরিবহন করা হতো।
মার্কিন সিনেটের জ্বালানি বিষয়ক কমিটির প্রধান জো ম্যানচিন গত মাসে এই পাইপলাইন নির্মাণ বন্ধের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই প্রকল্প কর্মসংস্থান তৈরি করছে এবং ট্রাক ও ট্রেনের মাধ্যমে তেল পরিবহণ করার চেয়ে এটি নিরাপদ।
মামলায় আরও যেসব অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল বাদী হিসেবে রয়েছেন সেগুলো হল- অ্যালাবামা, আরকানসাস, জর্জিয়া, ইন্ডিয়ানা, কেনটাকি, লুইসিয়ানা, মিসিসিপি, মিসৌরি, নেব্রাস্কা, নর্থ ডাকোটা, ওহাইও, ওকলাহামা, সাউথ ক্যারোলাইনা, সাউথ ডাকোটা, ইউটাহ ও ওয়াইওমিং।
মামলার বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে একতরফাভাবে কিস্টোন এক্সএলের অনুমোদন বাতিলের সিদ্ধান্ত সাংবিধানিক কাঠামোর পরিপন্থী, যা অনুমোদনের সময় অঙ্গরাজ্যগুলো সম্মত হয়েছিল।’
তবে হোয়াইট হাউস থেকে এ মামলার বিষয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি অঙ্গরাজ্য প্রেসিডেন্টের নামে সম্মিলিতভাবে মামলা দায়ের করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কর্তৃক জলবায়ু সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশ জারি করায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপকভাবে অর্থনৈতিক ও জ্বালানী শক্তির প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমতাবস্থায় দেশটির ১২টি অঙ্গরাজ্য প্রেসিডেন্টের নামে সম্মিলিতভাবে মামলা দায়ের করেছে।
তাদের দাবি, ঐ রাজ্যগুলোতে নিজেদের ফেডারেল নিয়ন্ত্রক শক্তি জোর দেয়ার কিংবা সম্প্রসারণের অধিকার নেই প্রেসিডেন্ট ও তার প্রশাসনের। তাছাড়া জো বাইডেনের জলবায়ু পরিবর্তন নীতি বিশ্বের বৃহত্তম তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনের ওপর উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলবে।
বার্তা সংস্থা আনাদোলুর সংবাদ বলা হয়েছে, মিসৌরির অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক স্মিথের নেতৃত্বে বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে দায়ের করা এ মামলায় আরো যুক্ত আছেন কানসাস, মন্টানা, ওহিও, নেব্রাস্কা, আরকানসাস, অ্যারিজোনা, টেনেসি, ইন্ডিয়ানা, ওকলাহোমা, সাউথ ক্যারোলাইনা ও উটাহ অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলগণ।
এক বিবৃতিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক স্মিথ জানান, উৎপাদন শিল্প, কৃষি ও জ্বালানী শক্তি মিসৌরির অর্থনীতির জন্য প্রয়োজনীয় এবং রাজ্য জুড়ে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের উৎস।
মামলার অভিযোগে জানানো হয়েছে, জো বাইডেনের আদেশ স্থায়ী হলে এটি দশকের পর দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে চাকরি ধ্বংস, জ্বালানী উৎপাদন রোধ এবং দেশের জ্বালানী শক্তি স্বাধীনতা রোধ করে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি করবে।
’জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষা এবং জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলায় বিজ্ঞান পুনরুদ্ধার করা’ শীর্ষক বাইডেনের আদেশে কীস্টোন অয়েল পাইপলাইন সম্প্রসারণের অনুমতি বাতিল, আর্কটিকের মধ্যে অস্থায়ীভাবে ড্রিলিং নিষিদ্ধ করা এবং ফেডারাল এজেন্সিগুলোকে প্রশাসনের পরিবেশ নীতিমালা মেনে চলতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১২২৫
আপনার মতামত জানানঃ