রংপুরে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় অবশেষে প্রেমিক ও ধর্ষক এএসআই রায়হানুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এর আগে সন্ধ্যায় দুই আসামি আবুল কালাম আজাদ ও বাবুল হোসেন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এর আগে একই আদালতে ২২ ধারায় নির্যাতিত ছাত্রীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।
পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইফুল ইসলাম জানান, ধর্ষক আজাদ ও বাবুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পুলিশের বরখাস্ত এএসআই রায়হানুল ইসলামকে রাত সাড়ে ৯টায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। এদিকে, ধর্ষণে সহযোগিতার অপরাধে গ্রেফতার সুমাইয়া আক্তার মেঘলা ও সুরভি আক্তার সমাপ্তিকে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করা হয়।
তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি জানালে আদালত তাদের রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেন। সূত্র জানায়, ছাত্রীটিকে কঠোর পুলিশি নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার মধ্যে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।
আদালতে সে জানায়, ২৩ অক্টোবর রায়হানুল তাকে ধর্ষণ করেছে। পরদিন একই বাসায় সে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের এসআই সাইফুল ইসলাম জানান, আসামিরা ঘটনার দায় স্বীকার করেছে।
ধর্ষণের অভিযুক্ত তালিকা থেকে পুলিশ সদস্যের নাম আড়াল করা হয়েছে- এমন প্রতিবেদনের পর নাম দেখাল পুলিশ
ঘটনার দিন মেঘলা ও সুরভি তাদের খদ্দের হিসেবে ডেকে নেয়। পরে তারা ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। জানা গেছে, রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকার ময়নাকুঠি কচুটারিতে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে পুলিশের এএসআই রায়হানুল। সম্পর্কের সূত্র ধরে ২৩ অক্টোবর ওই ছাত্রীকে সে বেড়াতে নিয়ে যায়। এরপর নগরীর বাহারকাছনা ক্যাদারের পুল এলাকার মেঘলার (২৭) বাড়িতে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে রায়হানুল। রাত ৯টার দিকে ওই বাড়ি থেকে ছাত্রীটি বেরিয়ে পড়লেও পরে আবার মেঘলার বাসায় গিয়ে আশ্রয় চায়।
পরদিন রাতে ওই বাসায় মেঘলা তার বান্ধবী সুরভির সহযোগিতায় টাকার বিনিময়ে তাকে দুই যুবকের হাতে তুলে দেয়। এরপর সে গণধর্ষণের শিকার হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে পরদিন ২৫ অক্টোবর ছাত্রীটি রায়হানুলকে খুঁজতে শহরে আসে। এরপর পুলিশকে সে নির্যাতনের ঘটনা জানায়।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করে পুলিশ। এরপর রংপুর ও লালমনিরহাট থেকে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে রায়হানুলসহ দু’জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হারাগাছ থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।
সোমবার হারাগাছ থানা থেকে রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) মামলাটি হস্তান্তর করা হয়।
রংপুর পিবিআই পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন জানান, এ ঘটনায় এএসআই রায়হানুল ইসলামসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
সোর্স : যুগান্তর, পৃষ্ঠা ১ / ২৯ অক্টোবর ২০২০
আপনার মতামত জানানঃ