দেশে সোশ্যাল মিডিয়াগুলো নজরদারির আওতায় আনার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। গতকাল বুধবার(১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কমিটির পঞ্চম সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি জানান, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) তারা এ বিষয়ে মনিটরিং করার কথা বলবেন। তিনি আরও বলেছেন, সরকারি চাকরিতে সব নিয়োগে কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রত্যেকের ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে চাই না। কিন্তু আইনের আওতায় থাকা দরকার। অবাধ তথ্য প্রবাহের কারণে জাতীয়ভাবে সমাজ বিভ্রান্তিতে পড়ে। মানবতাবিরোধী, সমাজবিরোধী বক্তব্য নিয়ন্ত্রণ হওয়া জরুরি। তিনি জানান, সরকার ফেসবুক, টুইটারসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াকে বাংলাদেশে অফিস খোলা বা অন্তত একজন প্রতিনিধি নিয়োগের কথা বলবে। এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে কোনও অভিযোগ উঠলে সরকার যাতে তাদের জানাতে পারে এবং তারা যাতে ব্যবস্থা নিতে পারে সেজন্য এই ব্যবস্থার কথা ভাবা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, জনগণ আইনশৃঙ্খলা ঠিকভাবে মেনে চলছেন বলেই আমরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখতে পেরেছি।
মোজাম্মেল হক আরও বলেন, অপপ্রচার, অপসংস্কৃতি, বিভ্রান্তি রোধ করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজার হাজার কোটি টাকার বিজ্ঞাপন যাচ্ছে। কারা এসব দিচ্ছে, কেন দিচ্ছে এসব বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য এনবিআরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেশে করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতির পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, মাদক নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রাম ও দিনাজপুর অঞ্চলে পরীক্ষামূলক প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য যাতে আরও নিয়ন্ত্রণে আনা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সভা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়েছি। মাদক প্রতিরোধে উপজেলা কমিটি সক্রিয় করার জন্য বলা হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও দিনাজপুর জেলাকে মাদকমুক্ত করার প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। কীভাবে এটা বাস্তবায়ন করা হবে, সেটা ঠিক করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা কার্যপরিধি, কার্যপদ্ধতি নিশ্চিত করে ব্যবস্থা নেবেন।
ডোপ টেস্ট নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না জানতে চাইলে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট করা হবে। ডোপ টেস্টের নীতিমালা তৈরি হচ্ছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রেও ডোপ টেস্ট করতে হবে। আমরা ব্যাপকভাবে এটা প্রচার করব।
তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে, তাদের ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। এটা আমরা শুরু করেছি। এখনই এটা ব্যাপকভাবে করা হচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যারা মূলধারার গণমাধ্যমের কাছে তাদের মনের কথাগুলো বলার সুযোগ পান না তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দ্বারস্থ হন। এখন যদি সামাজিক মাধ্যমের ওপর সরকার নজরদারি করে তাহলে সাধারন মানুষ তাদের মতপ্রকাশ থেকে বিরত থাকবে। এটি ব্যাপকভাবে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করবে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/২১৩০
আপনার মতামত জানানঃ