অভ্যুত্থানের পর সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে হত্যা, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। এতে দেখা যাচ্ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। ধর্ষণের ঘটনাও বেড়ে যাওয়ায় ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষুদ্ধ কেউ কেউ অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিও তুলেছেন। ডাকাতি, খুন, ধর্ষণের মতো অপরাধ এমন সময় ঘটছে, যখন যৌথবাহিনীর সমন্বয়ে সারা দেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে একটি বিশেষ অভিযান চলছে।
সম্প্রতি রাজধানী ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই ও আঞ্চলিক মহাসড়কে বাস ডাকাতির মতো বেশ কয়েকটি ঘটনা আলোচনায় এসেছে। সমসাময়িক বেশকিছু হত্যাকাণ্ড নিয়ে স্থানীয় মানুষ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনা, গণপিটুনিতে হত্যা, বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করারও ঘটনা রয়েছে।
দক্ষিণ-পশ্চিমের কোনো কোনো জেলায় আবার বেড়েছে চরমপন্থিদের তৎপরতা। ঝিনাইদহে তিনজনকে হত্যা করে একটি চরমপন্থি গোষ্ঠীর নামে দায় স্বীকার করার ঘটনায়ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিনে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ এলাকা ঘুরে স্থানীয় মানুষ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলেছেন বিবিসি বাংলার সাংবাদিক।
কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া, ডাকাতি, খুন ও চাঁদাবাজির কারণে অস্থিরতা এবং আতঙ্কের একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলেই সাধারণ মানুষ মত দিয়েছে।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় অবস্থানকালে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া এবং দলবল নিয়ে হামলা-ভাঙচুরের প্রত্যক্ষদর্শী হয়েছে বিবিসি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়কের বাবার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে মঙ্গলবার বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মীরা।
বাড়ি ভাঙচুর করে কয়েকশ মানুষ অস্ত্র, রামদা লাঠি-সোটা নিয়ে বেরিয়ে গেলেও নিরব দর্শক ছিল পুলিশ। হামলাকারীদের হাতে রামদা, হাসিয়া, আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে। এসময় পুলিশের অসহায়ত্ব অনেকটাই দৃশ্যমান ছিল।
“কয়েকজন পুলিশ সদস্যের পক্ষে এরকম হামলা এবং মব ঠেকানো অসম্ভব” বলেও উল্লেখ করেন কুষ্টিয়ার জেলার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।
প্রকাশ্যে দিনে দুপুরে বাড়ি ভাঙচুর এবং তছনছ করার সময় এবং অস্ত্র হাতে বেরিয়ে যাবার সময় কোনো ছবি তুলতে এবং ভিডিও ধারণ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি কয়েকজনের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় মিছিলে থাকা অস্ত্রধারীরা।
নিজ বাড়িতে ওই হামলার নেপথ্যে জামায়াত ও বিএনপির একটি অংশকে দায়ী করেছেন সমন্বয়ক আসাদুজ্জামান আলী।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আফজাল হোসাইন এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, “আমরা সমন্বয়ককে বার বার বলেছি যে তোমার বাবাকে থাামাও। এটা সাধারণ জনগণ করেছে। সাধারণ জনগণ তার ওপরে অতীষ্ট।”
তবে ঘটনার আগে জামায়াত নেতার বাড়িতে বৈঠক এবং সেখানে কর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। হামলা ভাঙচুরের পর বিকেলে সমন্বয়ক এবং তার বাবার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনও করেন জামায়াত নেতা মি. হোসাইন।
আপনার মতামত জানানঃ