বেশ কয়েক বছর ধরে মহাকাশীয় দুটি রহস্যময় বস্তু নিয়ে যে তত্ত্বটি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের বেশ ভাবাচ্ছিল, এর মধ্যে ব্ল্যাকহোল অন্যতম। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো ব্ল্যাকহোলকে বৈজ্ঞানিক পন্থায় পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের বাফেলো ইউনিভার্সিটির একদল বিজ্ঞানী ধারণা দিয়েছেন, মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে আসা পাথরখণ্ডের ভেতরও এসব ব্ল্যাকহোলের চিহ্ন থেকে যেতে পারে। এসব ব্ল্যাকহোল এসব শিলাখণ্ডের জলীয় অংশ শুষে নিয়ে এগুলোকে ফাঁপা বানিয়ে ফেলেছে।
নতুন এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে চলতি মাসের শুরুতে ‘ফিজিকস অব ডার্ক ইউনিভার্স’ নামের সাময়িকীতে। তারা মনে করছে, ব্ল্যাকহোল শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখা সম্ভব হতে পারে। বাফেলো ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও গবেষণাপত্রের সহলেখক ডিজান স্তকভিচ বলেন, ‘ব্ল্যাকহোলের প্রমাণ নিশ্চিত করার জন্য বড়মাপের কোনো যন্ত্রপাতি লাগবে না। আমরা মনে করি, ব্ল্যাকহোলের প্রমাণ নিশ্চিত করতে যা করা হয়েছে, সেগুলো কোনো ফল দিতে পারেনি।’
গবেষকরা দাবি করেছেন, ফাঁপা উল্কাপিণ্ড বা পাথরের মাঝ দিয়েও ব্ল্যাকহোল চলে যেতে পারে। এমনকি তা মানবদেহ ভেদ করে গেলেও বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটার কথা নয়। গবেষণাপত্রের আরেক সহলেখক ও কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডি চ্যাং দাই বলেন, ‘বিষয়টি প্রমাণে আমরা এমন কঠিন বস্তুর ওপর ফোকাস করেছি, যা হাজার হাজার, মিলিয়ন বা এমনকি বিলিয়ন বছর ধরে পৃথিবীতে বিদ্যমান ছিল।’
ডিজান স্তকভিচ বলেন, ‘কোনো মহাকাশীয় বস্তুতে যদি তরল কেন্দ্র না থাকে, তাহলে পিবিএইচ (প্রিমর্ডিয়াল ব্ল্যাকহোলস) বস্তুটি ভেদ করে চলে যাবে এবং ভেদ করার প্রমাণ হিসেবে একটি ছোট টানেল রেখে যাবে।
এসব টানেলের ব্যাস খালি চোখে অনুভব করা সম্ভব নয়। এসব পিবিএইচ মানবদেহ ভেদ করে গেলেও তা বোঝা কঠিন।’ তিনি বিষয়টির ব্যাখা দিয়ে বলেন, ‘যদি আপনি কোনো কাচে ঢিল ছোড়েন, তাহলে এটা ভেঙে চৌচির হয়ে যাবে। কিন্তু আপনি যদি শব্দের চেয়ে বেশ দ্রুতগামী বুলেট ছোড়েন, তাহলে দেখবেন, কাচ অক্ষত রয়েছে। কিন্তু তাতে একটি ছিদ্র তৈরি হয়েছে মাত্র।’
আপনার মতামত জানানঃ