বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে এসেছে সরকারের রাজস্ব আহরণে। বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সরকারের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। পরে তা কমিয়ে সংশোধিত লক্ষ্য নির্ধারণ হয় ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এ লক্ষ্যের বিপরীতে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সংস্থাটির হালনাগাদ এ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ হয়েছে সংশোধিত লক্ষ্যের চেয়ে প্রায় ২৭ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা কম। আর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের (সিজিএ) হিসাবে গত অর্থবছরে দেশে রাজস্ব আহরণ হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৮৫ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। সে অনুযায়ী এনবিআর ও সিজিএর রাজস্ব আহরণের তথ্যে পার্থক্য ৯৭ হাজার ২৮০ কোটি টাকার বেশি। দুই হিসাবেই উঠে এসেছে, রাজস্ব আহরণে গত অর্থবছরে সরকারি লক্ষ্যের মতো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বেঁধে দেয়া লক্ষ্যও পূরণ করা সম্ভব হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজস্ব আহরণে এনবিআর ও সিজিএর তথ্যের ব্যবধান সরকারি তথ্য-উপাত্তকে নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এর আগে রিজার্ভ ও রফতানির তথ্য নিয়েও এমন প্রশ্ন উঠেছে। দেশে গ্রস রিজার্ভ নিরূপণে আগে শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাবায়ন পদ্ধতি অনুসরণ করা হতো। কিন্তু এ হিসাবায়ন পদ্ধতি নিয়ে দীর্ঘদিন প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদ ও বাজার পর্যবেক্ষকরা। পরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী বিপিএম৬ পদ্ধতিতে গ্রস রিজার্ভ ও ব্যবহারযোগ্য তথা নিট রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ শুরু হয়। গত ৩০ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাবায়ন পদ্ধতি অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম৬ পদ্ধতিতে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ২১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। একই দিনে দেশের ব্যবহারযোগ্য বা নিট রিজার্ভ ছিল ১৬ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।
সরকারি বিভিন্ন সংস্থার রফতানির পরিসংখ্যানের ব্যবধান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে দীর্ঘদিন। এমন পরিস্থিতিতে চলতি মাসের শুরুতেই দেশের ব্যালান্স অব পেমেন্টের (বিওপি) হিসাবায়ন করতে গিয়ে রফতানি তথ্যে সংশোধন আনে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রফতানি আয়ের তথ্য থেকে এক ধাক্কায় ১৩ দশমিক ৮০ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৩৮০ কোটি ডলার বাদ দিয়ে দেয়া হয়। রফতানি আয়ের তথ্য সংশোধনে বদলে যায় ব্যালান্স অব পেমেন্টের (বিওপি) অনেক হিসাবও।
এখন এনবিআর ও সিজিএর রাজস্ব আহরণের তথ্যেও বড় ধরনের পার্থক্য দেখা যাচ্ছে, যার পরিমাণ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বেশি। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর তথ্যে এমন অসংগতি বাংলাদেশে সরকারি পরিসংখ্যান নিয়ে আস্থাহীনতা বাড়িয়ে তুলছে বলে মনে করছেন সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘তথ্যবিভ্রাট এখন সব খাতেই ছড়াচ্ছে। দ্রুত এ বিষয়গুলোর সমাধান করা দরকার। তা না হলে সবদিক থেকে বড় ধরনের আস্থাহীনতার সংকটে পড়বে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের তথ্য-উপাত্তকে বিশ্বাস করবে না। আমাদের নীতিনির্ধারকরা এ ধরনের তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে নীতিনির্ধারণ করলে সেগুলোও যথার্থ হবে না। কাজেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ বিষয়গুলোর সমাধান করা দরকার। এর গুরুত্বও তাদের বুঝতে পারা প্রয়োজন।’
তথ্যের এমন অসংগতি এখন বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর। এ ধরনের বিভ্রাট নিরসনে দ্রুততার সঙ্গে নিরীক্ষা করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনি।
ড. আহসান এইচ মনসুর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকারি সংস্থাগুলোর তথ্যে পার্থক্য সবসময়ই থাকে, আর এর কিছু কারণও আছে। কিন্তু এত বড় পার্থক্য হওয়ার কথা না যে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা হয়ে যাবে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগের। অর্থ মন্ত্রণালয় সিজিএর তথ্যই ব্যবহার করে। আর পার্থক্যের প্রভাব মোটা দাগে হলো প্রকৃত রাজস্ব আহরণের পরিমাণের যথার্থতা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া। সিজিএর তথ্যটিই প্রকৃত রাজস্ব আহরণ। কারণ এটা ট্রেজারি চালানের ওপর ভিত্তি করে করা। অনেক সময় সিজিএর তথ্যেও কিছুটা এদিক-সেদিক হয়। অনেক সময় ভুয়া ট্রেজারি চালান জমা পড়ে। এ পার্থক্য নিরসনে দ্রুততার সঙ্গে নিরীক্ষা করা প্রয়োজন।’
দেশের রাজস্ব আহরণ পদ্ধতি টেকসই নয় বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ তুলছে আইএমএফ। গত মে মাসে ঋণ কর্মসূচির আওতায় তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের আগে বাংলাদেশ সফর করেন সংস্থাটির দ্বিতীয় রিভিউ মিশনের কর্মকর্তারা। মিশন শেষে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের নিম্ন কর-জিডিপি অনুপাত বিবেচনায় সামাজিক কল্যাণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বিনিয়োগ বাড়াতে টেকসই রাজস্ব আহরণ করা অপরিহার্য। এজন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপির বিপরীতে কর-রাজস্বের অনুপাত দশমিক ৫ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়াতে দৃশ্যমান করনীতি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের কোষাগারে যে পরিমাণ অর্থ জমা হয় সেটির ভিত্তিতেই রাজস্ব আহরণের পরিসংখ্যান হিসাব করে সিজিএ। অন্যদিকে এনবিআরের পক্ষ থেকে অনেক সময় আদায়ের অপেক্ষায় থাকা অংকও রাজস্ব আহরণের পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এক্ষেত্রে এমনও দেখা গেছে, এনবিআরের আহরণকৃত হিসেবে দেখানো অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে আরো পরে। আবার প্রণোদনা পেতে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের মধ্যে রাজস্ব আহরণ বেশি দেখানোর প্রবণতা কাজ করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমকে পুরোপুরি ডিজিটাল করা গেলে পরিসংখ্যানগত এ ব্যবধান দূর হতে পারে বলে মনে করছেন সরকারের সাবেক অর্থ সচিব এবং সাবেক মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘এনবিআর রাজস্ব আদায়ের যে হিসাব দেয় সেক্ষেত্রে অনেক সময় সরকারি কোষাগারে রাজস্ব জমা হওয়ার আগেই সেটিকে রাজস্ব আদায় হিসেবে দেখানো হয়। অন্যদিকে সিজিএর হিসাবে যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় দেখানো হয়, সেটি বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্রেজারি হিসাবে জমা হওয়া অর্থের ভিত্তিতে করা। কোষাগারে জমা হওয়ার আগেই রাজস্ব আহরণ হিসেবে সেটিকে দেখানো উচিত নয়। আয়করের ৮০ শতাংশই আসে উৎসে কর্তন করা করের মাধ্যমে। ফলে কী পরিমাণ উৎসে কর আহরণ হতে পারে সেটির ভিত্তিতে অনেক ক্ষেত্রে রাজস্ব কর্মকর্তারা আদায় দেখিয়ে থাকেন। এর সঙ্গে কর্মকর্তাদের প্রণোদনা প্রাপ্তিরও একটি সংযোগ রয়েছে। পে-অর্ডার কিংবা অ্যাকাউন্ট পেয়ি চেক কোষাগারে জমা পড়ার আগেই রাজস্ব আহরণ হয়েছে বলে দেখানো হয়, যদিও এটি বর্তমানে কমে এসেছে। মূসকের ক্ষেত্রেও অনেকটা একই পরিস্থিতি, কোষাগারে অর্থ জমা হওয়ার আগেই অনেক সময় রাজস্ব আহরণ হয়েছে বলে দেখানো হয়। শুল্কের ক্ষেত্রে এনবিআর ও সিজিএর মধ্যে ব্যবধান কম হওয়ার কারণ হচ্ছে এক্ষেত্রে অ্যাসাইকুডার মাধ্যমে ডিজিটালাইজেশনের অগ্রগতি। ফলে পার্থক্য কমে এসেছে। রাজস্ব আদায়ের পরিসংখ্যানে এ ধরনের পরিসংখ্যানগত পার্থক্য দূর করতে সমন্বিত ডিজিটালাইজেশনের কোনো বিকল্প নেই। আইবাস, ইটিডিএস, আইভাস, ইএফডি, এ চালান ইত্যাদি ডিজিটাল প্লাটফর্মের মধ্যে রিয়েল টাইম আন্তঃসংযোগ তৈরি এবং নজরদারি জোরদার করা হলে এ ধরনের পরিসংখ্যানগত পার্থক্য থাকবে না। এটি আরো আগেই করা সম্ভব ছিল, কিন্তু আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা ও ক্ষেত্রবিশেষে কোনো কোনো সুযোগসন্ধানী মহলের অনীহার কারণে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।’
এনবিআরের দাবি, আমদানি-রফতানি পর্যায়ে শুল্ক ও কর বা কাস্টমস থেকে গত অর্থবছরে ১ লাখ ৮১৯ কোটি ৮ লাখ টাকার রাজস্ব আহরণ হয়েছে। আর এ বাবদ সিজিএ বুঝে পেয়েছে ৯৪ হাজার ৭৩৮ কোটি ২০ লাখ টাকার রাজস্ব। পার্থক্য ৬ হাজার ৮০ কোটি ৮৭ লাখ টাকার। ভ্যাট থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার ৭১৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা রাজস্ব আহরণ হয়েছে বলে দাবি করছে এনবিআর। আর সিজিএর হিসাবে এর পরিমাণ ১ লাখ ৭ হাজার ৮০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। পার্থক্য ৪৩ হাজার ৬৩৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
এনবিআরের আয়কর বিভাগ ১ লাখ ৩১ হাজার ২৫ কোটি ২ লাখ টাকা রাজস্ব আহরণ করেছে বলে দাবি করছে সংস্থাটি। আর সিজিএ বলছে এর পরিমাণ ৮৩ হাজার ৪৬২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। পার্থক্য ৪৭ হাজার ৫৬৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
রাজস্ব আহরণ নিয়ে দুই সংস্থার তথ্যের ব্যবধান সম্পর্কে জানতে চাইলে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, ‘এখানে এনবিআরের তরফ থেকে দুর্নীতিটা বেশি। ব্যাংকগুলো উৎসে কর কেটে রাখে। সেটা যথাযথভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা হচ্ছে কিনা সেটা ঠিকভাবে এনবিআরে পক্ষ থেকে দেখা হয় না। পে-অর্ডার পড়ে থাকছে। এখানে তাদের মধ্যে আন্ডারহ্যান্ড ডিলিং আছে!’
লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না করতে পারার বিষয়ে সাবেক এ চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখানেও একটা শুভংকরের ফাঁকি আছে। ওপর থেকে এনবিআরের ওপর একটা লক্ষ্যমাত্রা চাপিয়ে দেয়া হয়। পরে সেটা সংশোধনও করা হয়। কিন্তু বাজেটে যে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়, তা আর সংশোধন করা হয় না। ২০১৫ সালের পর থেকে লক্ষ্যমাত্রা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। তার আগে এনবিআর নিজেরাই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করত। ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়েছে জিডিপি বড় দেখাতে হবে। এডিপি বড় দেখাতে হবে। তখন থেকেই লক্ষ্যমাত্রা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। আর বড় আকারের বাজেটও দেয়া হচ্ছে।’
২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভ্যাট থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৯৯ দশমিক ৪০ শতাংশ অর্জন হয়েছে বলে দাবি করছে এনবিআর। এ বিষয়ে ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, ‘রিভাইজ করে এটাকে সম্ভব করেছে। শুভংকরের ফাঁকি এখানে। অথচ মূল লক্ষ্যমাত্রা ধরেই ব্যয় নির্ধারণ ও ব্যয় করা হচ্ছে। সেজন্যই তো মূল্যস্ফীতি হয়। সেজন্যই তো ঘাটতি বেশি হচ্ছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার পরিমাণ বাড়ছে এসব কারণে। এবারের বাজেটেও ব্যক্তি করহার ৩০ শতাংশ ধরে লক্ষ্যমাত্রা ও ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু শেষে তা ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। এতে ৫ শতাংশ কর থেকে যে রাজস্ব আহরণ হতো সেটা আর হচ্ছে না। অতিরিক্ত আয় ধরেই তো হিসাব করা হয়েছে। তাহলে তো এ পরিমাণ টাকা ব্যয় বাজেট থেকেও কমানো দরকার ছিল। ক’দিন আগেও তো বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে ব্যাংকগুলোকে দিয়ে দিয়েছে। তার তো নেয়ার কথা।’
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে এনবিআরের প্রথম সচিব (বোর্ড প্রশাসন) গাউছুল আজম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই।’ আর এনবিআরের প্রথম সচিব (কর প্রশাসন) মো. শাহিদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রাজস্ব আদায়ের বিষয় আমার নয়। আমি এটা দেখি না। আমি প্রশাসন ক্যাডার থেকে এসেছি। মনিটরিং উইং এটা দেখে।’
বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, লক্ষ্যের চেয়ে কম রাজস্ব আহরণের প্রভাব পড়বে বাজেট বাস্তবায়নে। এমনিতেই দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি চাপে রয়েছে। সরকারের অনেক দেশী ও বিদেশী ঋণ রয়েছে। এ ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধের চাপ সরকারের প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় সক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। আরো অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পড়ছে সামষ্টিক অর্থনীতি।
এ বিষয়ে সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হানের মত হলো লক্ষ্যগুলো কোনো বছরই পূরণ হয় না। এর প্রভাব পড়ে বাজেট বাস্তবায়নে। গত অর্থবছরে সরকারকে বৈদেশিক ঋণের সুদ ও আসল মিলিয়ে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পরিশোধ করতে হয়েছে। অনেক বড় প্রকল্পে বড় বিদেশী ঋণ নেয়া হয়েছে। দেশেও ব্যাংক খাত থেকে প্রচুর ঋণ নেয়া হয়েছে। সরকার অতিমাত্রায় ঋণনির্ভর হয়ে পড়ছে। এটার প্রভাবে সুদের ভারটাও বাড়ছে। সরকারের ঋণ নেয়ার যে লক্ষ্য সেটা যদি ব্যাংক থেকে নিতে চায়, তাহলে ব্যক্তি খাতের জন্য কিছুই থাকবে না।
আপনার মতামত জানানঃ