বাংলাদেশে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হয়রানি বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে মার্কিন সিনেটে। সিনেট সংখ্যাগরিষ্ঠ হুইপ ডিক ডারবান সোমবার সিনেট অধিবেশনে দেয়া ভাষণে এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূসকে মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি তা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
ড. ইউনূস বার বার আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন। সেখানে বেশ কিছু সন্দেহজনক অভিযোগে তার ৬ মাস থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। সিনেট সদস্যদের উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে তিনি উল্লেখ করেন, এক দশক ধরে ড. ইউনূস কমপক্ষে ১০০ অপ্রমাণিত মামলার মুখোমুখি বাংলাদেশে। গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে প্রফেসর ইউনূস কি প্রভাব ফেলেছেন সে সম্পর্কে বর্ণনার মধ্যদিয়ে বক্তব্য শুরু করেন সিনেটর ডিক ডারবিন।
তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক বিশ্ব জুড়ে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তিনি বক্তব্যের শুরুতে বলেন- বৈশ্বিক দারিদ্র্য উপশমের এক প্রবক্তা, একজন বিস্ময়কর ব্যক্তিকে কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল দেয়ার অনুষ্ঠানে আমার সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন প্রয়াত সিনেটর মাইক এনজি।
তিনি উইওমিং থেকে নির্বাচিত রিপাবলিকান ছিলেন। এই মেডেল পেয়েছিলেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এরপর ডিক ডারবিন বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোকে ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি প্রবর্তন করে গ্রামীণ ব্যাংক। এর মধ্যদিয়ে গরিব মানুষের জীবনকে উন্নত করার চেষ্টা করা হয়। ডিক ডারবিন আরও বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক কমপক্ষে ৭০ লাখ ঋণ গ্রহীতাকে ক্ষুদ্রঋণ দিয়েছে সহজ শর্তে। এর মধ্যে শতকরা ৯৫ ভাগই নারী অথবা নারীদের গ্রুপ।
এই প্রক্রিয়ায় দারিদ্র্য কমিয়ে আনায় একটি পরিবর্তন এসেছে। এই প্রচেষ্টার জন্য ২০০৬ সালে প্রফেসর ইউনূস অর্জন করেছেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার। কিন্তু তার যুগান্তকারী মানবিক কাজের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকার কমপক্ষে ১০০ অপ্রমাণিত ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলা দিয়েছে। ভিত্তিহীন এসব মামলায় তার যাবজ্জীবন জেল পর্যন্ত হতে পারে।
ডিক ডারবিন বলেন, বাংলাদেশ সরকার ড. ইউনূসের সঙ্গে যে আচরণ করছে তাতে বিশ্ব জুড়ে তার বন্ধুরা হতাশার কারণে গত বছর ১৭০ জন বিশ্বনেতা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লিখেছেন। তাতে এসব বিচারিক প্রক্রিয়া এবং হয়রানি বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। ওই বিশ্বনেতাদের মধ্যে আছেন কমপক্ষে ১০০ নোবেলজয়ী।
ডিক ডারবিন বলেন, আমিও একই রকম আহ্বান জানিয়েছি। তা এই সিনেট অধিবেশনে আবারো পুনর্ব্যক্ত করলাম। প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে যা ঘটছে তা একটি প্রহসন, এটা বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
আপনার মতামত জানানঃ